Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
সেন্সর বোর্ড বিতর্ক

আরও ১২ জনের ইস্তফা, সমালোচনায় জেটলি

সেন্সর বোর্ডের প্রধান লীলা স্যামসনের পদত্যাগ নিয়ে বিতর্কের জল গড়াল আরও দূর। বোর্ড থেকে আজ সরে গেলেন আরও বারো জন সদস্য। যদিও তাঁরা যে সরে যাবেন, সে ইঙ্গিত মিলেছিল কালই। তাঁদের অভিযোগ, সেন্সর বোর্ডকে সরকার এতটাই তুচ্ছতাচ্ছিল্য করছে যে তাঁরা সরে যেতে বাধ্য হয়েছেন। বিতর্কের সূত্রপাত ডেরা সাচা সৌদা গোষ্ঠীর প্রধান গুরমিত রামরহিম সিংহের ‘মেসেঞ্জার অব গড’ ছবিটি নিয়ে।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:১৬
Share: Save:

সেন্সর বোর্ডের প্রধান লীলা স্যামসনের পদত্যাগ নিয়ে বিতর্কের জল গড়াল আরও দূর। বোর্ড থেকে আজ সরে গেলেন আরও বারো জন সদস্য। যদিও তাঁরা যে সরে যাবেন, সে ইঙ্গিত মিলেছিল কালই। তাঁদের অভিযোগ, সেন্সর বোর্ডকে সরকার এতটাই তুচ্ছতাচ্ছিল্য করছে যে তাঁরা সরে যেতে বাধ্য হয়েছেন।

বিতর্কের সূত্রপাত ডেরা সাচা সৌদা গোষ্ঠীর প্রধান গুরমিত রামরহিম সিংহের ‘মেসেঞ্জার অব গড’ ছবিটি নিয়ে। এতে সেন্সর বোর্ড ছাড় না দিলেও ফিল্ম সার্টিফিকেশন অ্যাপেলেট ট্রাইব্যুনাল (এফসিএটি) কোনও আপত্তি করেনি বলে জানা গিয়েছিল। শান্তি বিঘ্নিত হতে পারে এই কারণ দেখিয়ে পঞ্জাব সরকার আজ ছবিটি রাজ্যে প্রদর্শন নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। গোটা টানাপড়েনে সেন্সর বোর্ডে সরকারি হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলে গত কাল ইস্তফা দেন লীলা।

যে সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে আজ সরব হয়েছেন কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী অরুণ জেটলি। গোটা বিষয়টি নিয়ে কংগ্রেস রাজনীতি করছে বলেও দাবি করেছেন তিনি। ফেসবুকে ‘রেবেল উইদাউট এ কজ’ নামে একটি পোস্টে জেটলি আঙুল তুলেছেন সেন্সর বোর্ডের দিকেই। গত কাল তাঁর দফতরের প্রতিমন্ত্রী রাজ্যবর্ধন রাঠৌরের সুরেই তিনি বলেন, সেন্সর বোর্ড থেকে সরকার সব সময়েই দূরত্ব বজায় রেখেছে। আর লীলা যে দুর্নীতির অভিযোগ এনেছেন, তাতে জেটলির মন্তব্য, “বোর্ডে কোনও দুর্নীতি হয়ে থাকলে, বোর্ড সদস্যদের উপরেই দায়িত্ব বর্তায়। তবে দুর্নীতির ব্যাপারে অন্তত এক বার সেন্সর বোর্ডের চেয়ারপার্সন আমায় কিছু জানাতে পারতেন। তিনি সেটা কখনওই করেননি।”

কেন্দ্রীয় তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রী মনে করিয়ে দিয়েছেন, ২০০৪ সালে তৎকালীন সেন্সর বোর্ডের প্রধান অনুপম খেরকে ইউপিএ সরকারই বরখাস্ত করেছিল। কারণ তাঁকে নিয়োগ করেছিল পূর্বতন সরকার। জেটলির বক্তব্য, “কংগ্রেস এ ব্যাপারে রাজনীতি করলেও তাঁরা সে পথে হাঁটছেন না। কিন্তু পূর্বতন ইউপিএ সরকারের নিযুক্ত এই বোর্ড সদস্যরা সাধারণ ঘটনা নিয়ে রাজনীতি করছেন, এটা দুর্ভাগ্যজনক।”

তা ছাড়া, বোর্ডের কোনও বৈঠক হয় না বলে যে অভিযোগ জানিয়েছিলেন লীলা, সে প্রসঙ্গেও জেটলির বক্তব্য, “এ ক্ষেত্রেও ওঁদেরই ত্রুটি রয়েছে। বোর্ডের চেয়ারপার্সন কোনও কাজই করেননি। আমি মন্ত্রকের অফিসারদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁরা জানিয়েছেন, সেন্সর বোর্ডের জন্য যে টাকা পাঠানো হয়েছিল, তা তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের কাছেই ফিরে এসেছে। বোর্ড সে টাকা খরচ করতে পারেনি, বৈঠকও ডাকেনি।”

জেটলির মতে, সেন্সর বোর্ড নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নেয়। কিন্তু কোনও প্রযোজক যদি তাতে সন্তুষ্ট না হন, ট্রাইব্যুনালে যাওয়ার অধিকার রয়েছে তাঁর। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানান, বোর্ডের সঙ্গে সব সময় ট্রাইব্যুনাল সহমত না-ই হতে পারে। এটা আইনি প্রক্রিয়ার অঙ্গ। এতে সেন্সর বোর্ডের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ হয় না।

‘মেসেঞ্জার অব গড’ ছবিটির ক্ষেত্রে সেই ঘটনাই ঘটেছে। লীলার অভিযোগ ছিল, সেন্সর বোর্ড সায় না দিলেও ট্রাইব্যুনাল এই ছবির ক্ষেত্রে খুব কম সময়ে (মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে) নিজেদের ইতিবাচক অবস্থান জানিয়ে দিয়েছে। কিন্তু তারা সাধারণত এ ব্যাপারে আরও বেশি সময় নেয়। আর তাই বিষয়টিতে আপত্তি জানান লীলা।

আজ কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকে নিজেদের পদত্যাগের কথা জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন আরও বারো সদস্য। এঁদের মধ্যে রয়েছেন অরুন্ধতী নাগ, ইরা ভাস্কর, লোরা প্রভু, পঙ্কজ শর্মা, রাজীব মসন্দের মতো ব্যক্তিত্ব। ওঁদের দাবি, সদস্য হওয়ার পর থেকেই সেন্ট্রাল বোর্ড অব ফিল্ম সার্টিফিকেশন-এ (সিবিএফসি) সংস্কারের কথা বলে এসেছেন। ওঁদের কথায়, “তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রকে বারবার আবেদন-সুপারিশ করা হয়েছে। সচিব এবং উচ্চপদস্থ অফিসারদের সঙ্গে একাধিক বৈঠকও হয়েছে। কিন্তু মন্ত্রক কোনও ইতিবাচক পদক্ষেপ করেনি।” এই বারো সদস্যের অভিযোগ, উপদেষ্টা কমিটিতে যে সব লোকজনকে মন্ত্রক সরাসরি নিয়োগ করেছে, তাঁদের যোগ্যতাও প্রশ্নসাপেক্ষ। সিনেমা সম্পর্কে কোনও অভিজ্ঞতাই নেই, এমন লোককেও রাখা হয়েছে কমিটিতে। টাকার অভাবে এক বছর ধরে কোনও বৈঠক করা যায়নি বলে লীলার মতোই অভিযোগ জানিয়েছেন ওই সদস্যরাও।

অন্য বিষয়গুলি:

Arun Jaitley leela samson
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE