ইম্ফল-আইজল হয়ে আসার কথা ছিল কলকাতায়। কিন্তু বৃহস্পতিবার দুপুরে ইম্ফল থেকে আইজল গিয়েই বিগড়ে গেল এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান। এয়ার ইন্ডিয়া সূত্রের খবর, ইম্ফল থেকে আইজলে নামার আগেই ডান দিকে ইঞ্জিনে গণ্ডগোল দেখা দেয়। ওই অবস্থাতেই বিমান নিয়ে আইজলে নামেন পাইলট। সমস্যায় পড়ে যান ১৩১ জন যাত্রী। অন্য সংস্থার উড়ানে ফেরার চেষ্টা করছেন তাঁরা।
সমস্যায় পড়েছে বিমান সংস্থাও। শুক্রবার দুপুরে এয়ার ইন্ডিয়ার ইঞ্জিনিয়ারেরা আইজলে গিয়ে দেখেন, বিমানের বিগড়ে যাওয়া ডান দিকের ইঞ্জিনটি ওখানে সারানো সম্ভব নয়। যার অর্থ, এয়ারবাস-৩১৯ বিমানটিকে আপাতত আইজলে বসিয়ে রাখতে হবে। তবে তার জন্য আইজলে অন্য বিমান ওঠানামায় সমস্যা হবে না। শুধু কয়েকটি রুটে উড়ান চালানোর ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়বে এয়ার ইন্ডিয়া। কারণ, একটি বিমান দিয়েই প্রতিদিন বেশ কয়েকটি রুটে উড়ান চালানো হয়।
ইঞ্জিন পাল্টে বিকল বিমানটি চালানো যায়। কলকাতাই এখন এয়ারবাস-৩১৯ বিমানের ইঞ্জিনিয়ারিং বেস। কিন্তু এই মুহূর্তে এখানে অতিরিক্ত ইঞ্জিন নেই। আর এখনই এয়ারবাস সংস্থার কাছ থেকে নতুন ইঞ্জিন কিনে আনা সম্ভব নয় বলে অফিসারেরা জানান। রক্ষণাবেক্ষণে থাকা কোনও বিমানের ইঞ্জিন খুলে নিয়ে বিগড়ে যাওয়া বিমানে তা লাগিয়ে দেওয়া হতে পারে। অতীতে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এমনটা করাও হয়েছে। এতে রক্ষণাবেক্ষণ শেষ না-হওয়া পর্যন্ত সেই বিমানের ইঞ্জিন অন্য বিমানে ব্যবহারের সুযোগ মেলে। কলকাতায় দু’টি বিমানের রক্ষণাবেক্ষণ চলছে। তাই তাদের ইঞ্জিন মিলবে সহজেই। প্রশ্ন উঠেছে, সেই ইঞ্জিন পাঠানো হবে কী করে?
আইজলে যে-যাত্রিবাহী বিমান যাতায়াত করে, তার পেটের ভিতরে অন্য বিমানের ইঞ্জিন নিয়ে যাওয়ার জায়গা নেই। একমাত্র সেনাবাহিনীর পণ্য-বিমান এএন-৩২ ভাড়া করে সেই ইঞ্জিন পাঠানো সম্ভব। সম্প্রতি জম্মু বিমানবন্দরেও এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমান বিগড়ে গিয়েছিল। তার জন্য এএন-৩২ ভাড়া করে ইঞ্জিন নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ফৌজের সেই বিমান ভাড়া না-পেলে বিকল্প হিসেবে সড়কপথেও ইঞ্জিন পাঠানো যেতে পারে। কিন্তু সেটাও সময়সাপেক্ষ। বিমান সংস্থার এক অফিসারের কথায়, “সব মিলিয়ে বেশ কয়েক দিনের ধাক্কা। মনে হচ্ছে, কলকাতা থেকে উড়ানসূচি রদবদল করতে হবে।”
বৃহস্পতিবার বিকেলে কলকাতায় ফেরার জন্য ইম্ফল থেকে ৫৬ জন উঠেছিলেন এয়ার ইন্ডিয়ার ওই বিমানে। বাকিদের আসার কথা ছিল আইজল থেকেই। ইঞ্জিন বিগড়ে যাওয়ায় আটকে পড়েন সকলেই। তাঁদের মধ্যে কয়েক জন শুক্রবার জেট এয়ারওয়েজের টিকিট কেটে কলকাতায় আসেন। বাকিরা আটকে আছেন সেখানেই। সময়মতো হোটেলে জায়গা ও খাবার না-পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন যাত্রীরা। সুপর্ণ চক্রবর্তী নামে এক যাত্রী বলেন, “আমার নিজের টাকায় রাতে হোটেলে থাকতে হয়েছে। শুক্রবার বিমান ছাড়বে কি না, এ দিন সকাল পর্যন্ত তা জানা যায়নি। অগত্যা জেটে টিকিট কেটে ফিরে এসেছি।” তবে তাঁর টিকিটের টাকা ফেরতের আশ্বাস দিয়েছে এয়ার ইন্ডিয়া।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy