অভিযুক্ত অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার রমেশ দাহিয়া। —ছবি টুইটারের সৌজন্যে
রক্ষকই ভক্ষক! বহু ক্ষেত্রে এমন নজির উঠে এসেছে আগেও। এবার কাঠগড়ায় দিল্লি পুলিশের এক এসিপি। দিল্লিরই এক মহিলা তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন, রমেশ দাহিয়া নামে ওই পুলিশ অফিসার তাঁকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণ করেছেন।শুধু তাই নয়, তাঁর মেয়ের শ্লীলতাহানি, ছেলেকে অপহরণের মতো গুরুতর অভিযোগও এনেছেন ওই মহিলা। উঠেছে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগও।
জানা গিয়েছে, ওই মহিলা প্রথম অভিযোগ করেন এ বছরের জুলাই মাসে। কিন্তু তার পর থেকে কার্যত কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। সেই সুযোগ নিয়ে অভিযুক্ত পুলিশ অফিসার একের পর এক অপরাধ করে গিয়েছেন বলে অভিযোগ। অভিযোগপত্রে মহিলার দাবি, রমেশ তাঁর নাবালিকা মেয়ের শ্লীলতাহানি, ছেলেকে অপহরণ করেছেন। রমেশ দাহিয়ার লোকজন লাগাতার হুমকি, চাপ দিচ্ছেন। আর পুলিশ অফিসার নিজে ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের একটি ভিডিয়ো তুলেছিলেন, সেটি ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন। মহিলার দাবি, একের পর এক চাপের মুখে পড়েই সেপ্টেম্বরে ফের অভিযোগ জানাতে বাধ্য হয়েছেন।
যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রমেশ দাহিয়া। মহিলার এফআইআর-এর ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ। ছুটিতে পাঠানো হয়েছে অভিযুক্ত অফিসারকে। দিল্লির ডিসিপি (নর্থ) নূপুর প্রসাদ বলেন, ‘‘মঙ্গলবার আমরা অভিযোগ পাই। ধর্ষণ, শ্লীলতাহানি, অপহরণ-সহ সংশ্লিষ্ট সব ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের জন্য মামলা পাঠানো হয়েছে ক্রাইম ব্রাঞ্চে। ওই বিভাগের গোয়েন্দারাই তদন্ত করছেন।’’
আরও পড়ুন: মুম্বইয়ের অভিনেত্রীকে রাজস্থানের হোটেলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ
মহিলার অভিযোগের সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কিছু অপরাধে যুক্ত থাকার অভিযোগে কয়েক বার গ্রেফতার হয়েছিলেন তাঁর স্বামী। গত বছরের জুলাইয়ে পক্ষাঘাতে তাঁর মৃত্যু হয়। সেই সময় দিল্লির সদর বাজার থানার স্টেশন হাউস অফিসার ছিলেন রমেশ দাহিয়া।
মহিলার অভিযোগ, স্বামীর মৃত্যুর পর থেকেই বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি করেন রমেশ দাহিয়া। তারপর থেকে বহুবার তাঁকে ধর্ষণ করেছেন। তাতে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন তিনি। জুলাই মাসে সন্তানেরও জন্ম দেন। কিন্তু তখন বিয়েতে অস্বীকার করেন ওই পুলিশ অফিসার। তার পর থেকেই লোকজন দিয়ে প্রাণনাশের হুমকি, নাবালিকা মেয়ের শ্লীলতাহানি, ছেলেকে অপহরণের মতো একের পর এক ঘটনা ঘটিয়ে গিয়েছেন রমেশ।
আরও পড়ুন: পাইলট ইচ্ছাকৃত ভাবে এসি প্যাক বন্ধ করবেন না, তিনিও তো কষ্ট পাচ্ছিলেন
অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার পদমর্যাদার অফিসারের বিরুদ্ধে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগ ওঠায় স্বাভাবিক ভাবেই চাঞ্চল্য পড়ে গিয়েছে দিল্লির পুলিশ মহলে। সূত্রের খবর, গত জুলাই মাসে প্রথম ওই মহিলা ধর্ষণের অভিযোগ আনেন। ১৮ সেপ্টেম্বর ফের অভিযোগ দায়ের করে জানান, তাঁকে ধর্ষণের পাশাপাশি তাঁর মেয়ের শ্লীলতাহানি এবং ছেলেকেও অপহরণ করেছেন রমেশ দাহিয়া। তদন্তে নেমে বুধবার এফআইআর দায়ের হয়। পুলিশের বক্তব্য, স্পর্শকাতর ও গুরুতর বিষয় বলে মামলা স্থানান্তর করা হয়েছে ক্রাইম ব্রাঞ্চে।
সদর বাজার থানার স্টেশন হাউস অফিসারের পদ থেকে সম্প্রতি অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হিসাবে পদোন্নতি হয় তাঁর। এই ঘটনার পর তাঁর দাবি, ওই মহিলা সংসার চালাতে পারছিলেন না বলে তাঁর কাছে টাকা চেয়েছিলেন। ধার হিসেবে টাকা দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেই টাকা ফেরত চাইতেই মহিলা ওই সব অভিযোগ এনেছেন।
(কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী, গুজরাত থেকে মণিপুর - দেশের সব রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy