গত কাল সর্বদলীয় বৈঠকে সংসদীয় কমিটিগুলির উপযোগিতার কথা তুলে ধরেছিলেন তিনি। বলেছিলেন, দলমত নির্বিশেষে এখানে দেশের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে আলোচনা হয়।
এর পরে আজও সকালে সংসদ চত্বরে অধিবেশন শুরুর আগে রীতিমতো বিবৃতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানালেন, সংসদে বিতর্ক এবং আলোচনার জন্য এক স্বাস্থ্যকর আবহাওয়া তৈরির কথা।
প্রধানমন্ত্রী নিজে সংসদীয় আলোচনাকে এত মান্যতা দেওয়ার কথা বলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দেখা গেল সরকার নিজেই অদ্ভুত উদাসীন এ ব্যাপারে।
রাষ্ট্রপতির বক্তৃতার পরে আজ বেলা পৌনে একটায় সংসদ মুলতুবি হয়ে যায়। তার পরে রাজ্যসভা এবং লোকসভার কার্য-উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক বসে যথাক্রমে চেয়ারম্যান এবং স্পিকারের নেতৃত্বে। রাজ্যসভার কমিটির ৪০ মিনিটের বৈঠকে সরকার পক্ষের কোনও মন্ত্রী যাননি। লোকসভার কমিটির বৈঠকেও প্রথম কুড়ি মিনিট একই চিত্র। বৈঠক শেষ হওয়ার দশ মিনিট আগে হন্তদন্ত হয়ে উপস্থিত হন সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অনন্তকুমার এবং কেন্দ্রীয় জলসম্পদ প্রতিমন্ত্রী অর্জুন রাম মেঘাওয়াল।
নিয়ম অনুযায়ী অধিবেশনের ভবিষ্যৎ কর্মসূচি তৈরি করার এই বৈঠকে বিরোধী পক্ষের পাশাপাশি সরকারের তরফে সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রীর থাকার কথা। কোনও কারণে তাঁরা আসতে না পারলে অন্য কোনও মন্ত্রীকে পাঠানো হয়। কিন্তু এদিনের বৈঠকে কেন এমন হল, তার কোনও ব্যাখ্যা সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়নি।
স্বাভাবিক ভাবেই সরকার পক্ষের এমন আচরণে বিরোধীরা ক্ষুব্ধ। গত কালই সর্বদলীয় বৈঠকে সংসদকে যথোপযুক্ত গুরুত্ব দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছিল কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ বিরোধী দলগুলি। আজ কার্য-উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকের পরে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন টুইট করেন, ‘‘সরকার আবারও প্রমাণ করল যে সংসদ নিয়ে তাদের কোনও মাথা ব্যথা নেই। উপরাষ্ট্রপতির সভাপতিত্বে আজ কার্য-উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক হল। কিন্তু সরকারের কোনও প্রতিনিধিত্ব রইল না!’ অথচ এ দিন সকালেই সংসদ চত্বরে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘বাজেট অধিবেশনের পরের এক মাস বিভিন্ন কমিটি বিভিন্ন প্রস্তাব দেবে। রাজনৈতিক অভিসন্ধি মাথায় রেখে নয়, এই প্রস্তাবগুলি দেওয়া হয় জাতীয় স্বার্থে। এমনকী, শাসক দলের সাংসদও প্রস্তাবিত বাজেটের ত্রুটিগুলির কথা বলতে পারেন, আবার বিরোধী দল তুলে ধরেন এর ফাঁকফোকর। সব মিলিয়ে বিতর্ক এবং আলোচনার একটি ‘স্বাস্থ্যকর আবহাওয়া’ গড়ে ওঠে।’’
বিরোধী পক্ষের মতে, অধিবেশনের প্রথম দিনেই মুখ থুবড়ে পড়ল ‘স্বাস্থ্যকর আবহাওয়া’ তৈরির ভাবনাটিই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy