বিল ক্লিন্টনের পর জেডি ভান্স। আবার মার্কিন কর্তার ভারত সফরের সময় হত্যালীলার সাক্ষী হল জম্মু ও কাশ্মীরের অনন্তনাগ। ব্যবধান ঠিক ২৫ বছরের।
২০০০ সালের ২০ মার্চ তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টনের ভারত সফরের সময় অনন্তনাগ জেলার ছত্তীসিংহপুরার গ্রামে হানা দিয়েছিল ঘাতকের দল। বেছে বেছে খুন করা হয়েছিল ৩৫ জন শিখ ধর্মাবলম্বীকে। ঠিক যেমনটা হয়েছে গত ২২ এপ্রিল। অনন্তনাগ জেলারই পহেলগাঁওয়ে। ঘটনাচক্রে, মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্সের ভারত সফরের সময়ই ঘাতকদের শিকার হয়েছেন ২৬ জন পর্যটক।
ছত্তীসিংহপুরা হত্যাকাণ্ডের সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন অটলবিহারী বাজপেয়ী। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জঙ্গি মদতের অভিযোগ তুলে ক্লিন্টনের কাছে ইসলামাবাদ সফর বাতিলের জোরদার আর্জি জানিয়েছিল নয়াদিল্লি। কিন্তু তাতে আমল না দিয়ে পাঁচ ঘণ্টার জন্য ইসলামাবাদে গিয়ে তৎকালীন পাক সামরিক শাসক জেনারেল পারভেজ মুশারফের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এমন সিদ্ধান্তের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তুমুল বিতর্ক বাধিয়ে ক্লিন্টনের সফরসঙ্গী, তৎকালীন মার্কিন বিদেশসচিব মেডেলিন অলব্রাইট ‘বোমা ফাটিয়েছিলেন’।
অবসর নেওয়ার পরে অলব্রাইট তাঁর আত্মজীবনী ‘মাইটি এবং অলমাইটি’তে দাবি করেছিলেন, নয়াদিল্লির অনুরোধ উপেক্ষা করে ক্লিন্টনের ইসলামাবাদ সফরের নেপথ্যে ছিল মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএর একটি রিপোর্ট। তাতে বলা হয়েছিল, কোনও পাকিস্তানি জঙ্গিগোষ্ঠী নয়, শিখ গণহত্যা হয়েছিল ভারতের মদতে! এ বিষয়ে ক্লিন্টনের সঙ্গে তাঁর কথোপকথনও উদ্ধৃত করেছিলেন অলব্রাইট। ক্লিন্টন জমানায় দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মার্কিন বিদেশ দফতরের উপ-বিদেশসচিব (ডেপুটি সেক্রেটারি অফ স্টেট) স্ট্রোভ ট্যালবটও সায় দিয়েছিলেন অলব্রাইটের বক্তব্যে!
এর পরে ভারত সরকারের তরফে প্রবল প্রতিবাদ জানানো হয়েছিল। এ দেশে ‘মাইটি এবং অলমাইটি’র যে সংস্করণটি প্রকাশিত হয়েছিল তাতে ছত্তীসিংহপুরায় শিখ হত্যাকাণ্ড সংক্রান্ত বিতর্কিত বিষয়গুলি বাদ পড়েছিল। কিন্তু বিতর্ক তাতে থামেনি। বরং আরও উস্কে দিয়েছিল লন্ডনবাসী ভারতীয় সাংবাদিক পঙ্কজ মিশ্রের বই ‘টেম্পটেশন অফ দ্য ওয়েস্ট’। সেখানে তিনি দাবি করেছিলেন, ছত্তীসিংহপুরা-কাণ্ডের পরে ভারতীয় সেনা পাঁচ জন লশকর-এ-ত্যায়বা জঙ্গিকে নিকেশ করার যে দাবি করেছিল, তা সত্য নয়!
নিহত পাঁচ জনই সাধারণ গ্রামবাসী ছিলেন বলে দাবি করেছিলেন পঙ্কজ। বইটি লেখার আগে আদালতের অনুমতি নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতদের পরিবারের সঙ্গেও কথা বলেছিলেন তিনি। ২০২২ সালে প্রয়াত হয়েছিলেন অলব্রাইট। আমৃত্যু নিজের বক্তব্যে অটল ছিলেন তিনি। কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে পুরো বিতর্ক সম্পর্কে প্রকাশ্যে কখনও একটিও মন্তব্য করেননি ক্লিন্টন! তফাত রয়েছে আরও এক জায়গায়। ২০০০সালে লশকর ছত্তীসিংহপুরায় শিখ হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেনি। এ বার কিন্তু তাদের ছায়া সংগঠন ‘দ্য রেজ়িস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ) পহেলগাঁওয়ে পর্যটক খুনের ‘কৃতিত্ব’ দাবি করে বিবৃতি দিয়েছে।
- পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার জবাবে পাকিস্তানে প্রত্যাঘাত করেছে ভারত। সামরিক অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন সিঁদুর’। গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলার ঘটনায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়।
- জবাবে মঙ্গলবার মধ্যরাতে পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের বেশ কিছু অংশে প্রত্যাঘাত করা হয়। ভারতীয় সেনার দাবি, পাকিস্তানের ন’টি জায়গায় হামলা চালানো হয়েছে। জঙ্গিঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
-
২১:০৬
বহওয়ালপুরে ভারতের হানা, নিহত পরিবারের দশ সদস্য, দাবি জইশ প্রধান মাসুদ আজহারের -
২০:৪০
পাকিস্তানে প্রত্যাঘাতের পর পরিস্থিতি স্পর্শকাতর, পণ্যের কালোবাজারি রুখতে তৎপর মমতা, বৃহস্পতিতে বৈঠক নবান্নে -
২০:৩৬
মধ্যরাতে ভারতের ‘অপারেশন সিদুঁর’, পাক জঙ্গি ডেরায় হামলা, কী প্রভাব দু’দেশের অর্থনীতিতে? -
২০:০৮
আমি দায়িত্বে থাকলে ঠিক এটাই করতাম! আনন্দবাজার ডট কম-এ লিখলেন অবসরপ্রাপ্ত সেনাধ্যক্ষ জেনারেল শঙ্কর রায়চৌধুরী -
১৯:৪৯
অপারেশন সিঁদুর: পাকিস্তানে প্রত্যাঘাতের ট্রেলর দেখাল ভারত, ‘পিকচার আভি বাকি হ্যায়’!