Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪
National news

স্বাধীনতার রাজধানীর ‘ভারত পর্ব’-এ গরহাজির পশ্চিমবঙ্গই

রাজস্থানের ‘ঘুমর’-এর পাশে অনায়াসে জায়গা করে নিতে পারত পুরুলিয়ার ছো-নাচ। কিংবা অসমের চা ছেড়ে কোনও বিদেশি অতিথি চুমুক দিতে পারতেন দার্জিলিং চায়ে। অথবা কাঞ্জিভরমের পাশের কোনও স্টলে থাকত বাংলার তাঁতের শাড়ি।

চলছে মিনি ভারতের অনুষ্ঠান। —নিজস্ব চিত্র।

চলছে মিনি ভারতের অনুষ্ঠান। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৬ ২০:৪৬
Share: Save:

রাজস্থানের ‘ঘুমর’-এর পাশে অনায়াসে জায়গা করে নিতে পারত পুরুলিয়ার ছো-নাচ। কিংবা অসমের চা ছেড়ে কোনও বিদেশি অতিথি চুমুক দিতে পারতেন দার্জিলিং চায়ে। অথবা কাঞ্জিভরমের পাশের কোনও স্টলে থাকত বাংলার তাঁতের শাড়ি।

স্বাধীনতার রং তো অনেক রকম। শুধু তো ইতিহাস নয়। কেবলই স্বাধীনতা সংগ্রামীদের অবদান নয়। সে সব ফিরে পাওয়া তো আছেই। কিন্তু স্বাধীনতার অনুভব একটি উৎসব। আর ভারতের নানা প্রান্তের আত্মাকে এক ছাতার তলায় ধরে আনতেই রাজধানীর রাজপথ জনসাধারণের জন্য খুলে দিয়েছে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার। স্বাধীনতার ৭০ বছরের উৎসবে যাতে মাততে পারে গোটা দেশ। যার পোশাকি নাম দেওয়া হয়েছে ‘ভারত পর্ব’। আজ থেকে টানা সাত দিন দিল্লির রাজপথে একটি ‘মিনি-ভারত’কে দেখবে গোটা বিশ্ব।

কিন্তু অধিকাংশ রাজ্য তাদের সম্ভার নিয়ে এলেও হাজির থাকল না পশ্চিমবঙ্গ। কেন, তার যুৎসই উত্তর নেই কেন্দ্রের কাছেও। গোটা আয়োজনের মূল হোতা কেন্দ্রের পর্যটন ও সংস্কৃতিমন্ত্রী মহেশ শর্মা। তিনি আজ এই আয়োজনের উদ্বোধন করে বলেন, ‘‘আমরা সব রাজ্যকেই আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। কিন্তু তার মধ্যে ১৭টি রাজ্যই এখানে সামিল হয়েছে।’’ পর্যটনসচিব বিনোদ জুৎসির কথায়, ‘‘প্রথমে আমরা ভেবেছিলাম, দেশের পাঁচ প্রান্ত থেকে পাঁচটি রাজ্যকে বাছাই করে রাজপথে সামিল করা হবে। কিন্তু তার পর একে একে অনেক রাজ্য উৎসাহ দেখিয়ে উল্টে কেন্দ্রের উপরেই চাপ বাড়াতে শুরু করল। তারা দাবি করল, তাদেরকেও সামিল করা হবে। ফলে যারা যারা উৎসাহ দেখিয়েছে, তাদের সকলকেই আমরা জায়গা দিয়েছি। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ আসেনি।’’

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সূত্র থেকে অবশ্য জানা যাচ্ছে, এর আগেও রাজ্য কেন্দ্রীয় সরকারের আয়োজনে এ ধরনের অনুষ্ঠানে সামিল হয়েছে। কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রথম প্রজাতন্ত্র দিবসে রাজপথে ট্যাবলো নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে সংঘাত বাধে। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্প তুলে ধরে ট্যাবলো করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কেন্দ্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বাছাই কমিটি বাদ সেধেছিল এই বলে যে এ ধরনের অনুষ্ঠানে দেশের শিল্প ও সংস্কৃতির স্বকীয় বিষয়টিই ট্যাবলোয় তুলে ধরা রীতি। কিন্তু সেই প্রাথমিক বিবাদের পর থেকে পশ্চিমবঙ্গ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সামিল হয়েছে। এ বারের প্রজাতন্ত্র দিবসেও সামিল হয়েছে রাজ্য। ‘ভারত পর্ব’-এ যোগ দেওয়া নিয়েও প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল। কিন্তু মাঝপথে সেটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। দিল্লিতে রেসিডেন্ট কমিশনার দফতরে নিযুক্ত ওএসডি আর ডি মিনাকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমি ব্যস্ত আছি।’’

আরও পড়ুন: এনএসজি-র দরজা বন্ধ নয় দিল্লির জন্য: আচমকা সুর নামিয়ে বলল চিন

অথচ, এই অনুষ্ঠানে সামিল হয়ে পশ্চিমবঙ্গ নিজেকে দুনিয়ার দরবারে আরও মেলে ধরতে পারত। যেমন কংগ্রেসশাসিত রাজ্য হয়েও সে রাজ্যের স্টলে মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধারামাইয়া নিজের বড় একটি কাট আউট লাগিয়ে রাজ্যে লগ্নি টানার আহ্বান জানিয়েছেন। উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, কংগ্রেস, জয়ললিতার তামিলনাড়ু, নবীন পট্টনায়কের ওড়িশা, মায় মানিক সরকারের ত্রিপুরাও এই ‘ভারত পর্ব’-এ সামিল হয়েছে। কেন্দ্রের মতে, এটিকে সামনে রেখে বিদেশি পর্যটকদেরও আরও টানতে চাইছে। তার জন্য প্রচারও হচ্ছে বিশ্বজুড়ে। গোটা দেশ জুড়ে ১৫ দিন ধরে হবে নানা অনুষ্ঠান। খোদ মোদী সরকারের দুই মন্ত্রীও যাচ্ছেন বাংলায়। জগৎপ্রকাশ নাড্ডা ও কলরাজ মিশ্র যাবেন নোয়াপাড়ায় বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্মভিটে ও কেশপুরে ক্ষুদিরাম বসুর জন্মস্থলে। কিন্তু বাংলা থেকে কেউ আসছেন না দিল্লিতে।

অন্য বিষয়গুলি:

modi west bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy