কথা ছিল, চলতি মাসেই আলোচনা করে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (এমএসপি) নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কিন্তু সে গুড়ে বালি! আরও এক বার অমীমাংসিত ভাবেই শেষ হল কেন্দ্র এবং আন্দোলনরত কৃষক ইউনিয়নগুলির বৈঠক। মিলল না কোনও সমাধানসূত্র।
উৎপন্ন ফসলের উপর ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নির্ধারণে আইনি নিশ্চয়তা চেয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে দীর্ঘ আন্দোলন শুরু করেছিলেন কৃষকেরা। শেষমেশ কেন্দ্রের তরফে আশ্বাস দিয়ে জানানো হয়, শীঘ্রই এ বিষয়ে দু’পক্ষের বৈঠকের আয়োজন করা হবে। এ নিয়ে গত ১৪ এবং ২২ ফেব্রুয়ারি দু’টি বৈঠক হয়। অথচ মাত্র আট দিনের মধ্যে দু’টি দীর্ঘ বৈঠকের পরেও কেন্দ্র ও কৃষকদের দূরত্ব ঘোচেনি বলে জানিয়েছে সূত্র।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, দু’টি বৈঠকের পরেও কোনও সমাধানসূত্র না মেলায় আগামী ১৯ মার্চ আরও একটি বৈঠকের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তবে সমাধান না মিললেও বৈঠকটিকে ‘গঠনমূলক’ বলেই মনে করছেন কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিরা। জানা গিয়েছে, ওই বৈঠকে এমএসপি-র বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে কৃষকেরা চাইছেন, ২৩টি ফসলকে এমএসপি-র আওতাভুক্ত করা হোক। কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান বলেছেন, ‘‘আমরা কৃষকদের বক্তব্য শুনেছি। তবে আলোচনা এখনও কিছু বাকি রয়েছে। ১৯ মার্চের বৈঠকটি হবে চণ্ডীগড়ে।’’
আরও পড়ুন:
ফসলের এমএসপি, কৃষিঋণ মকুব, পেনশনের ব্যবস্থা এবং বিদ্যুতের বিল না-বৃদ্ধি করার মতো বেশ কয়েকটি দাবি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে কৃষকদের আন্দোলন চলছে। গত বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে দিল্লি সংলগ্ন পঞ্জাব এবং হরিয়ানার শম্ভু এবং খানাউড়ি সীমানায় অবস্থানে বসেছেন কৃষকেরা। নভেম্বরের শেষ থেকেই কৃষকেরা শম্ভু সীমানা থেকে দফায় দফায় দিল্লির উদ্দেশে মিছিল করে এগোনোর চেষ্টা করেছিলেন। তবে পুলিশ-প্রশাসনের বাধায় বার বারই কৃষকদের সেই ‘দিল্লি চলো’ অভিযানের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। এর পর দাবি আদায়ে খানাউড়ি সীমান্তে গত ২৬ নভেম্বর ‘আমরণ অনশন’ শুরু করেন কৃষক নেতা জগজিৎ সিংহ ডাল্লেওয়াল। ক্রমে তাঁর শারীরিক অবস্থাও সঙ্কটজনক হয়ে পড়ে। সেই আবহেই কৃষকদের প্রতি সুর নরম করে কেন্দ্র। শেষমেশ ৫৫ দিন অনশনের পর গত ১৯ জানুয়ারি কেন্দ্রের তরফে মৌখিক আশ্বাস পেয়ে অনশন ভাঙেন ডাল্লেওয়াল। সঙ্গে অনশন ভাঙেন আরও ১২১ জন কৃষক। তবে অনশন উঠলেও আন্দোলন থামেনি। কৃষকেরা স্পষ্ট জানিয়েছেন, ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (এমএসপি)-র আইনি স্বীকৃতি না মেলা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।