টুইটার থেকে নেওয়া ছবি।
চায়ের বিজ্ঞাপন ঘিরে বিতর্কে সাম্প্রদায়িকতার অভিযোগ উঠল। বিজ্ঞাপনটি প্রায় এক বছরের পুরনো। কিন্তু হঠাত্ই সেই বিজ্ঞাপন শুধু ভাইরাল হওয়াই নয় ব্র্যান্ডটিকে বয়কটের রব উঠেছে টুইটারে। চা কোম্পানি ব্রুক বন্ডের রেড লেবেল ব্র্যান্ডের একটি বিজ্ঞাপনকে ঘিরে নতুন করে এই বিতর্ক। টুইটারে অভিযোগ উঠতে আরম্ভ করেছে, বিজ্ঞাপনে হিন্দুদের সম্পর্কে ভুল বার্তা দেওয়া হয়েছে।
ব্রুক বন্ড অ্যান্ড কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন আর্থার ব্রুক। ইংল্যান্ডে ১৮৪৫ সালে জন্ম হয় তাঁর। ১৮৬৯ সালে ম্যাঞ্চেস্টারে খুচরো চা পাতা বিক্রির ব্যবসা শুরু করেন। পরে সিদ্ধান্ত নেন পাইকারি ব্যবসা করবেন। সেই মতো ১৮৭০ সালে পাইকারি ব্যবসা চালু হয়। ব্যবসা বাড়তে থাকে, ১৯০৩ সালে ইংরেজ শাসিত ভারতে রেড লেবেল ব্র্যান্ডে চা বিক্রি শুরু করে ব্রুক বন্ড। একাধিক হাত ঘুরে এখন এই ব্র্যান্ড হিন্দুস্তান ইউনিলিভারের মালিকানাধীন।
রেড লেবেল ইন্ডিয়া তাঁদের ইউটিউব চ্যানেলে গত বছর ১৩ সেপ্টেম্বর একটি বিজ্ঞাপন প্রকাশ করে। ২ মিনিট ১৯ সেকেন্ডের ভিডিয়োটিতে দেখানো হচ্ছে, এক ব্যক্তি বাড়ির গণেশ পুজোর জন্য ঠাকুর কিনতে গিয়েছেন। যিনি প্রতিমা তৈরি করেন সেই শিল্পী ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন ভঙ্গিতে তৈরি গণেশ মূর্তি দেখাচ্ছেন। কোনও গণেশের চার হাত, কেউ বাহন ইঁদুরের সঙ্গে রয়েছেন। কথা চলতে চলতেই ‘ছোটু’-কে চা দিয়ে যেতে বলেন ওই প্রতিমা শিল্পী।
আরও পড়ুন : দুধের শিশুকে গ্রেফতারের ‘হুমকি’ পুলিশ বাবার! তীব্র প্রতিবাদ ‘অভিযুক্ত’-র!
আরও পড়ুন : ‘উচ্চবর্ণের’ পাত্রে জল খাওয়ায় প্রধান শিক্ষকের নোটিস ‘নিম্নবর্ণের’ শিক্ষককে
বিজ্ঞাপনে এরপর আসে নতুন মোড়। ওই সময় দূর থেকে আজানের শব্দ ভেসে আসে। সেই আওয়াজ শুনেই পকেট থেকে ফেজ টুপি বার করে পরে নেন প্রতিমা শিল্পী। সেই দৃশ্য দেখে কার্যত হতবাক হয়ে যান ওই ক্রেতা।তাঁর অভিব্যক্তি বুঝিয়ে দেয়, একজন মুসলিমের কাছ থেকে তিনি হিন্দু দেবতার মূর্তি কিনতে স্বচ্ছন্দবোধ করছেন না। প্রতিমা কবে নেবেন জিজ্ঞেস করেন ওই শিল্পী। ক্রেতা জানান আজ তাঁর কিছু কাজ আছে। একথা বলেই দ্রুত সেই জায়গা ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য হাঁটা দেন।
ইতিমধ্যেই ছোটু চা নিয়ে হাজির হয়। ক্রেতাকে চা খেয়ে যেতে অনুরোধ করেন মুসলিম শিল্পী। সেই অনুরোধে চায়ে চুমুক দেন ক্রেতা। তখনই কথা বলতে বলতে শিল্পী বলেন, নামাজ পড়া হাতে গণেশকে সাজালে বিস্ময়তো হবেই। ক্রেতা জিজ্ঞেস করেন, এই কাজ কেন বাছলেন? উত্তরে শিল্পী বলেন, এটাও তো আরাধনা। শিল্পীর কথা শুনে, নিজের মত বদলে সেই দিনই প্রতিমা কেনার সিদ্ধান্ত নেন ওই ক্রেতা।বিজ্ঞাপনটি এক বছরের পুরনো হলেও, এই গণেশ পুজোর মরসুমে কোনও ভাবে ফের সামনে চলে আসে। তারপরই অভিযোগ ওঠে, মুসলিমদের সম্পর্কে হিন্দুদের মানসিকতা যেভাবে দেখানো হয়েছে, মোটেই তেমন নয়। হিন্দুদের সম্পর্কে ভুল বার্তা দেওয়ার অভিযোগে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। রেড লেবেল বয়কটের জন্য হ্যাশট্যাগ শুরু হয়ে যায় টুইটারে। কয়েক হাজার মানুষ রেড লেবেল বয়কটের ডাক দিয়ে টুইট করেন।
Hindus are targeted by add companies in the time of Hindus festivals. #boycottredlabel pic.twitter.com/RNwOox0tVC
— ASHISH BHATIYA (HINDU)🚩 (@ashishbhatiya41) September 1, 2019
তবে প্রচুর মানুষ বিজ্ঞাপনটির মধ্যে খারাপ কিছু খুঁজে পাননি। তাঁরাও তাঁদের মতামত ব্যক্ত করেছেন টুইটারে।
saw this trend #BoycottRedLabel and then saw the ad to find nothing wrong with that.. in solidarity, bought a pack of #RedLabel yesterday for the first time.. trust me, this is the best tea I have had all my life.. thanks to this trend 😊😊 pic.twitter.com/t8XNh6S4lm
— फकीरा (@fcukeera) September 2, 2019
হিন্দুস্তান ইউনিলিভারের তরফে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি গোটা বিষয়টি নিয়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy