প্রায় ৪ মাস আগে দেশের চতুর্দশতম উপরাষ্ট্রপতি হিসাবে শপথ নিয়েছিলেন তিনি। বুধবার তাঁকে পদাধিকার বলে প্রাপ্ত নতুন আসনে দেখল দেশ। রাজ্যসভার চেয়ারম্যান হিসাবে প্রথম বার অধিবেশন পরিচালন করলেন জগদীপ ধনখড়।
বুধবারই সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের সূচনা হয়েছে। চলবে আগামী ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত। অধিবেশনের সূচনা-পর্বে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বক্তৃতাতেও বার বার এসেছে বাংলার প্রাক্তন রাজ্যপালের নাম। উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ধনখড়ের বিপুল জয়ের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মোদী বলেন, ‘‘উনি রাজ্যপালের দায়িত্ব পালন করেছেন। সকলকে নিয়ে কাজ করতে পারেন। আমার বিশ্বাস, আমাদের সকলকে নিয়ে উনি এগিয়ে যাবেন। ওঁর মার্গদর্শনে আমরা সমৃদ্ধ হব।’
আরও পড়ুন:
রাজস্থানের কৃষক পরিবারের সন্তান ধনখড়ের আইনজীবী হিসাবে সাফল্যের কথাও বক্তৃতায় তুলে ধরেন মোদী। উপরাষ্ট্রপতির সঙ্গে আদালতের তিন দশকের সম্পর্কের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, ‘‘সংসদে এলে আর আপনার মনে আদালতের অভাব অনুভূত হবে না।’’ সেই সঙ্গে সভা পরিচালনায় নয়া চেয়ারম্যানের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য বিরোধী সাংসদদের কাছে আবেদন জানান প্রধানমন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, গত ৬ অগস্ট উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধী জোট প্রার্থী মার্গারেট আলভাকে হারিয়ে বড় ব্যবধানে জয়লাভ করেছিলেন এনডিএ প্রার্থী ধনখড়। বাংলার প্রাক্তন রাজ্যপাল পান ৫২৮টি ভোট। আলভা ১৮২টি। লোকসভা এবং রাজ্যসভার ৩৪ জন তৃণমূল সাংসদ ভোটদানে বিরত ছিলেন। এর পর ১১ অগস্ট উপরাষ্ট্রপতি পদে শপথ নেন তিনি। সেই সঙ্গে পদাধিকার বলে রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পান।
আরও পড়ুন:
ঘটনাচক্রে, গত ১২ অগস্ট সংসদের বাদল অধিবেশনের সমাপ্তির নির্ধারিত সূচি থাকলেও তার ৪ দিন আগে ৮ অগস্ট মুলতুবি হয়ে যায় সংসদ। তাই শীতকালীন অধিবেশনেই প্রথম সভা পরিচালনা করছেন ধনখড়। আগামী দিনে সুষ্ঠু ভাবে সংসদের উচ্চকক্ষের কাজ পরিচালনা করাই তাঁর কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে চলেছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকে। কারণ, লোকসভা ভোটের আগে সংসদে শাসক এবং বিরোধী শিবিরের সংঘাতের পারদ আরও চড়তে পারে বলে তাঁদের ধারণা।

রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের আসনে ধনখড়। ছবি: পিটিআই।
নীতীশ কুমারের জেডি(ইউ) বিজেপির সঙ্গ ছাড়ার পরে রাজ্যসভায় এনডিএ-র সাংসদ সংখ্যা কমে বিরোধী সাংসদদের সম্মিলিত সংখ্যার কাছাকাছি চলে এসেছে। ‘বিতর্কিত’ বিল বা প্রস্তাব পাশ করানোর বিরোধিতা থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিষয়ে রাজ্যসভা অচল করতে হলে কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ বিরোধীরা এখন আগের চেয়ে বেশি শক্তি নিয়ে অধিবেশন কক্ষে নামতে পারবে। সম্ভাব্য সেই পরিস্থিতি সামলানোই ধনখড়ের কাছে ‘বড় চ্যালেঞ্জ’।