Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
COVID Vaccine

প্রতিষেধকের অভাব আরও প্রকট, দেশ জুড়ে ক্রমেই কমছে টিকাকরণ, আরও কমার আশঙ্কা

কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ে মৃত্যুর মিছিল বাড়তে থাকলেও টিকাকরণের গতি কমতে শুরু করেছে। প্রতিষেধকের অভাবই যার প্রধান কারণ বলে মত বিশেষজ্ঞেদের।

কমছে টিকাকরণের গতি।

কমছে টিকাকরণের গতি। প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০২১ ০৬:৪৬
Share: Save:

প্রধানমন্ত্রীর নতুন বাসভবন, তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এসপিজি-র জন্য নতুন ভবন, নতুন কেন্দ্রীয় সচিবালয় তৈরি করতে গিয়ে মোদী সরকার ১৩,৪৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। এ দিকে, কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ে মৃত্যুর মিছিল বাড়তে থাকলেও টিকাকরণের গতি কমতে শুরু করেছে। প্রতিষেধকের অভাবই যার প্রধান কারণ বলে বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন।

এই পরিস্থিতিতে শিল্পমহল থেকে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলিও মনে করছে, কোভিডের সংক্রমণ ও মৃত্যুর মিছিল ঠেকাতে কয়েক সপ্তাহের লকডাউন ছাড়া উপায় নেই। এমনকি কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধীও আজ মত দিয়েছেন, লকডাউনই এখন একমাত্র উপায়।

রাহুলের বক্তব্য, মোদী সরকার সেন্ট্রাল ভিস্টা প্রকল্পে ১৩,৪৫০ কোটি টাকা খরচ করছে। তার বদলে ৪৫ কোটি মানুষের পুরো টিকাকরণ হত। অথবা, ১ কোটি অক্সিজেন সিলিন্ডার হত। অথবা, ২ কোটি গরিব পরিবারকে ৬০০০ হাজার টাকা করে দেওয়া যেত। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর অহং মানুষের জীবনের থেকেও বড়। প্রতিষেধক, অক্সিজেনের অভাবের মধ্যে প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরাও সরকারের অগ্রাধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

কোভিডের ধাক্কা সামলাতে যাতে ফের লকডাউন না-করতে হয়, তার জন্য বহুদিন ধরেই শিল্পমহল দাবি করছে, দ্রুত দেশের সকলের জন্য টিকাকরণের ব্যবস্থা হোক। কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে, এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে ২.৪৮ কোটি ডোজ় প্রতিষেধক দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে মাত্র ১.৪৮ কোটি ডোজ় টিকা দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ মাসের প্রথম সপ্তাহের তুলনায় শেষ সপ্তাহে টিকাকরণ ৪০ শতাংশ কমেছে। মে মাসের গোড়ায় তা আরও কমবে বলে অনুমান।

বিশেষজ্ঞরা এর জন্য প্রতিষেধকের অভাবকে দায়ী করলেও স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কর্তারা তা মানতে রাজি নন। তাঁদের বক্তব্য, বিভিন্ন এলাকায় চলাফেরায় বিধিনিষেধের ফলে টিকাকরণ কম হচ্ছে। বিরোধীদের অভিযোগ, ১ মে থেকে কাগজে-কলমে পঁয়তাল্লিশ-অনূর্ধ্বদের টিকাকরণ শুরু হলেও, মাত্র ১২টি রাজ্যে ১৮-৪৪ বয়সিদের জন্য টিকা মিলছে। এখনও পর্যন্ত এই বয়সের মাত্র ৬.৬২ লক্ষ মানুষ এক ডোজ় টিকা পেয়েছেন। ১২টি রাজ্যেও অধিকাংশ জায়গায় টিকা মিলছে না।

এই পরিস্থিতিতে আজ রাহুল গাঁধী মত দিয়েছেন, এখন করোনা ঠেকাতে পুরো লকডাউনই একমাত্র উপায়। কেন্দ্রীয় সরকারের নিষ্ক্রিয়তার ফলে বহু মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। গরিব মানুষের জন্য রোজগারের বন্দোবস্তে ‘ন্যায়’-এর মতো প্রকল্প দরকার। গত বছর আচমকা লকডাউনের ফলে অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়ায় মোদী সরকার এখনও পর্যন্ত গোটা দেশে লকডাউন এড়িয়ে যেতে চাইছে। কিন্তু সোমবার রাতে বণিকসভা সিআইআই মত দিয়েছে, করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে দেশ জুড়ে ‘সব থেকে কড়া পদক্ষেপ’ দরকার। ব্যবসায়ীদের সংগঠন সিএআইটি-রও একই মত।

আমেরিকান প্রেসিডেন্টের স্বাস্থ্য বিষয়ক উপদেষ্টা অ্যান্টনি ফাউচি কিছু দিন আগেই মত দিয়েছিলেন, ভারতে কয়েক সপ্তাহের জন্য লকডাউন প্রয়োজন। রাহুলের বক্তব্য, মোদী সরকারের পরিকল্পনার অভাবেই লকডাউন ছাড়া আর উপায় থাকছে না। সরকার সক্রিয় হয়ে করোনাকে এই জায়গায় নিয়ে গিয়েছে। দেশের প্রতি অপরাধ হয়েছে।

কংগ্রেসের বক্তব্য, এই পরিস্থিতিতেও প্রধানমন্ত্রী নিজের নতুন বাসভবন তৈরির কাজ থেকে সরছেন না। কেন্দ্রের যুক্তি, এই সব প্রকল্পে প্রায় ৪৬ হাজার মানুষ কাজ পাবেন। সরকারি নথিতে অবশ্য স্পষ্ট করেই বলা হয়েছে যে, সবটাই নির্মাণ প্রকল্পে কিছু দিনের অস্থায়ী কাজ।

অন্য বিষয়গুলি:

COVID Vaccine
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy