Advertisement
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Uttarkashi Tunnel Rescue Operation

‘শেষ হয়েও’ শেষ হল না উত্তরকাশীর উদ্ধারকাজ! শেষ বাধা পেরোতে আর কত ক্ষণ, স্পষ্ট নয় এখনও

প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, উত্তরকাশী জেলা হাসপাতালে ৪১টি শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রত্যেক শয্যায় রয়েছে অক্সিজেনের ব্যবস্থা। ট্রমা কেয়ার ইউনিট, আইসিইউ শয্যাও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

উত্তরকাশীর ভাঙা সুড়ঙ্গে চলছে উদ্ধারকাজ।

উত্তরকাশীর ভাঙা সুড়ঙ্গে চলছে উদ্ধারকাজ। ছবি: রয়টার্স।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
উত্তরকাশী শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০২৩ ১৯:২৬
Share: Save:

উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে আটকে থাকা কর্মীদের উদ্ধার করতে মঙ্গলবার রাত পেরিয়ে বুধবার সকাল হয়ে যেতে পারে! ১৭ দিন ধরে চলা উদ্ধারকাজ পা দিতে পারে ১৮ দিনে। এমনটাই জানাল ‘ন্যাশনাল ডিজ়াস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি (জাতীয় বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা বাহিনী বা এনডিএমএ)। এনডিএমএ কর্তা সৈয়দ আতা হাসনাইন জানিয়েছেন, পুরো অভিযান প্রক্রিয়া শেষ হতে সারা রাত লাগতে পারে। অর্থাৎ, সে ক্ষেত্রে ভাঙা সুড়ঙ্গের ভিতরে আটকে থাকা ৪১ জন কর্মীকে বাইরে বার করে আনতে বুধবার সকাল হয়ে যেতে পারে। হাসনাইনের কথায়, ‘‘আমার মতে, পুরো অভিযান শেষ হতে পুরো রাতও লাগতে পারে।’’

সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির সঙ্গে কথা বলার সময় হাসনাইন বলেন, ‘‘কোনও বাধা যে আসবেই, তা বলছি না। তবে বাধা আসতেও পারে। যত ক্ষণ না ৪১ জন কর্মীই সুস্থ ভাবে বাইরে বেরোচ্ছেন, তত ক্ষণ এই অভিযান শেষ হবে না।’’ উদ্ধারকাজ প্রসঙ্গে হাসনাইন আরও বলেন, ‘‘আমরা অভিযান শেষ হওয়ার খুব কাছাকাছি রয়েছি। কিন্তু অভিযান এখনও শেষ হয়নি। সারা রাত ধরে কাজ চলেছে। আমরা আমাদের ‘র‌্যাট মাইনিং’ কর্মী এবং সেনার ইঞ্জিনিয়ারদের ধন্যবাদ জানাই। ভিতরে আটকে পড়া শ্রমিকরাও জানিয়েছেন যে, উদ্ধারকাজের আওয়াজ তাঁদের কানে পৌঁছেছে।’’

এর আগে মনে করা হচ্ছিল, মঙ্গলবার সন্ধ্যার মধ্যেই সুড়ঙ্গ থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন ওই ৪১ জন কর্মী। কিন্তু পরে হাসনাইন জানান, উদ্ধারকারীদের বার করে আনতে এখনও দু’মিটার খোঁড়া বাকি রয়েছে। সংবাদিকদের হাসনাইন বলেন, ‘‘পাইপ পুরোপুরি ঢোকানো হয়ে গেলে এক এক জন আটকে পড়া শ্রমিককে বার করে আনতে পাঁচ মিনিট করে সময় লাগবে। সেই হিসাবে ৪১ জন কর্মীকে বার করে আনতে তিন থেকে চার ঘণ্টা সময় লেগে যাবে।’’ তবে সন্ধ্যার পরে তিনি জানান, উদ্ধার অভিযান শেষ হতে পুরো রাতও লাগতে পারে। সুড়ঙ্গে আটকে থাকা ৪১ জন কর্মী মঙ্গলবারই বেরিয়ে আসতে পারেন শুনে হাসি ফুটেছিল তাঁদের পরিবার-পরিজনের মুখে। সে ক্ষেত্রে প্রিয়জনদের সঙ্গে দেখা করতে তাঁদের আরও কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হতে পারে।

মঙ্গলবার দুপুরে সুড়ঙ্গের বাইরে পৌঁছেছিলেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামী। বিকালের পর তাঁকেও সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গ থেকে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যেতে দেখা গিয়েছে। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ তিনি আবার উদ্ধারস্থলে পৌঁছন।

প্রসঙ্গত, ইঁদুরের মতো গর্ত খুঁড়ে সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গে আটক শ্রমিকদের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে উদ্ধারকারী দল। যে পাইপের মাধ্যমে বেরিয়ে আসবেন শ্রমিকেরা, তা উপযুক্ত জায়গায় রাখা হয়েছে। শ্রমিকদের বার করে আনার জন্য শেষ মুহূর্তের কাজ চলছে। সুড়ঙ্গের বাইরে রয়েছে চিকিৎসকদের একটি দল। প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর শ্রমিকদের পাঠানো হবে জেলা হাসপাতালে। সুড়ঙ্গের বাইরে উপস্থিত রয়েছে ৪১টি অ্যাম্বুল্যান্স। সেখানে অস্থায়ী একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রও গড়া হয়েছে। সেই কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসার পর শ্রমিকদের ৩০ কিলোমিটার দূরের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে। যেতে যাতে বেশি সময় নষ্ট না হয়, সেই কারণে তৈরি করা হয়েছে গ্রিন করিডর। কোনও শ্রমিকের অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে দ্রুত উড়িয়ে হৃষীকেশের এমস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য অস্থায়ী হেলিপ্যাড তৈরি করে চপারের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছিল। তবে সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় আপাতত চপার ওড়ানোর বিষয়টি স্থগিত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।

প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, উত্তরকাশী জেলা হাসপাতালে ৪১টি শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রত্যেক শয্যায় রয়েছে অক্সিজেনের ব্যবস্থা। ট্রমা কেয়ার ইউনিট, আইসিইউ শয্যাও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। শরীরের পাশাপাশি, মানসিক চিকিৎসাও চলবে শ্রমিকদের। গত ১২ নভেম্বর থেকে সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গে আটক শ্রমিকেরা। সেই থেকে বিভিন্ন উপায়ে চলছে উদ্ধারের চেষ্টা। একটি পরিকল্পনা ব্যর্থ হলে অন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করে এগিয়েছে উদ্ধারকাজ। শেষ পর্যন্ত ইঁদুরের মতো গর্ত খনন করে উদ্ধারকাজ চালানো হয়েছে। যন্ত্রের পরিবর্তে শাবল-গাঁইতি দিয়েই হয়েছে খনন কাজ। তা সফলও হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE