Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Karnataka

উচ্চবর্ণকে ওভারটেকের ‘শাস্তি’ নিগ্রহ, আত্মঘাতী যুবক

অভিযুক্তেরা সকলেই তথাকথিত উচ্চবর্ণ ভোক্কালিগা সম্প্রদায়ের। সকলেই পলাতক। দলিত নির্যাতন প্রতিরোধ আইন এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে।

উদয় কিরণ।

উদয় কিরণ। ছবি সংগৃহীত।

সংবাদ সংস্থা
বেঙ্গালুরু শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২২ ০৮:২৩
Share: Save:

তথাকথিত উচ্চবর্ণের বাইক-আরোহীদের ওভারটেক করেছিলেন রাস্তায়। সেই অপরাধে গাছে বেঁধে নিগ্রহ। কর্নাটকে অপমানিত দলিত যুবক তার পর গাছে ঝুলেই আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ। বুধবারের ঘটনা।

মৃতের নাম উদয় কিরণ। বেঙ্গালুরু থেকে ১১০ কিলোমিটার দূরে কোলার জেলার বেওয়াহল্লি গ্রামের বাসিন্দা। ২২ বছরের উদয়কে বড় করেছেন গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য নাগরাজু। ওঁরা আদি কর্নাটক সম্প্রদায়ের মানুষ, তফসিলি জাতিভুক্ত। উদয়ের নিগ্রহকারীদের চিহ্নিত করেছে পুলিশ। জানানো হয়েছে, তাদের নাম রাজু, শিবরাজ, গোপাল কৃষ্ণাপ্পা এবং মুনিভেঙ্কটাপ্পা। সকলেই তথাকথিত উচ্চবর্ণ ভোক্কালিগা সম্প্রদায়ের। সকলেই পলাতক। দলিত নির্যাতন প্রতিরোধ আইন এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে।

পুলিশ এবং পরিবার সূত্রে জানা যাচ্ছে, গত ৩০ নভেম্বর উদয় মুদিখানার জিনিসপত্র কিনতে গ্রাম থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে বাইকুরু নামে একটা জায়গায় যাচ্ছিলেন। তিনি একটি মোটরবাইক চালাচ্ছিলেন। অভিযুক্তেরা অন্য তিনটি মোটরবাইকে ছিল। মত্ত অবস্থায় ছিল। রাস্তায় বারবারই বাইক নিয়ে এ পাশ ও পাশ করছিল তারা। উদয় অনেক বারই চেষ্টা করছিলেন তাদের পাশ কাটিয়ে এগিয়ে যেতে। শেষে একটি মোটরবাইককে ওভারটেক করতে সক্ষম হন তিনি। পুলিশ আধিকারিকের কথায়, ‘‘বাইকুরু পৌঁছতেই তিনটি বাইক উদয়কে ঘিরে ধরে। তাঁর বাইক এবং মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া হয়। উদয়কে বলা হয়, বাড়ির লোকেদের নিয়ে এসে বাইকুরু আর বেওয়াহল্লির মাঝামাঝি পেট্টান্ডলাহল্লি থেকে বাইক উদ্ধার করে নিয়ে যেতে হবে।’’ এর পরে উদয় একাই একটা ভাড়া অটোতে চেপে পেট্টান্ডলাহল্লিতে হাজির হন এবং বাইক-ফোন ফেরত চান। জবাবে তাঁকে গাছে বেঁধে গ্রামবাসীদের সামনে নিগ্রহ করা হতে থাকে। খবর পেয়ে নাগরাজু সেখানে পৌঁছে রাত সাড়ে আটটা নাগাদ উদয়কে নিয়ে গ্রামে ফেরেন।

এফআইআর অনুযায়ী, বাড়ি ফিরেই উদয় আবার বেরিয়ে যান। শীঘ্রই ফিরবেন বলেও জানিয়ে যান। কিন্তু দশটা বেজে যাওয়ার পরেও না ফেরায় পরিবারের লোকজন খোঁজ করতে থাকেন। দেখা যায়, একটি খামারবাড়ির গাছে উদয়ের দেহটা ঝুলছে। নাগরাজুর অভিযোগ, ‘‘যে ভাবে গ্রামবাসীদের সামনে উদয়কে নিগ্রহ করা হয়েছে, মারধর করা হয়েছে, তাতে অত্যন্ত অপমানিত বোধ করেছিল সে। ওদের (অভিযুক্ত) একটা বাইককে ওভারটেক করাতেই ওরা খেপে যায়।’’ বেওয়াহল্লি গ্রাম পঞ্চায়েতে ভোক্কালিগারাই সংখ্যাগুরু। ৩০-৩৫ ঘর দলিত আছেন। নাগরাজুরা তাঁদেরই একজন। দ্বাদশের পরীক্ষা পাশ করে চাষবাসের কাজে হাত দিয়েছিলেন উদয়। ‘‘আমার একমাত্র ভরসা ছিল যে, সে-ই চলে গেল’’, বলছেন নাগরাজু।

অন্য বিষয়গুলি:

Karnataka Dalit Man
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy