ফাইল চিত্র।
উত্তরপ্রদেশের নদীতে ফের মৃতদেহের সারি।
তবে এ বারে আর মানুষ নয়, গবাদি পশু। অন্তত ১৭টি গরু এবং ২০টি মোষের মৃতদেহ ভাসতে দেখা গেল কন্নৌজের কাছে কালী এবং গঙ্গার সঙ্গমস্থলে।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে উত্তরপ্রদেশের গঙ্গায় ভেসে গিয়েছিল মানুষের লাশের সারি। গোটা বিশ্ব শিউড়ে উঠেছিল সেই দৃশ্য দেখে। কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার এবং উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ সরকারের করোনা মোকাবিলায় ব্যর্থতা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছিল গঙ্গা এবং তার পাড়ে ভেসে যাওয়া, আটকে থাকা সারি সারি মানুষের মৃতদেহ।
এ বারে গঙ্গীয় একগুলি গবাদি পশুর দেহ নিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে। কন্নৌজের জেলাশাসক রাকেশ কুমার মিশ্র এ সম্পর্কে বলেছেন, ‘‘শুক্রবার সঙ্গমে ৩৭টি গবাদি পশুর দেহ ভাসতে দেখা গিয়েছে। এর মধ্যে ২০টি মোষ এবং বাকিগুলো গরু।’’ কন্নৌজ প্রশাসনের দাবি, ওই জেলায় এতগুলি গবাদি পশুর মৃত্যুর কোনও খবর তাঁদের কাছে নেই। সম্ভবত সেগুলি অন্য কোনও এলাকা থেকে ভেসে এসেছে। পরে গবাদি পশুগুলির দেহ জল থেকে তুলে জেসিবি-র সাহায্যে পুঁতে ফেলা হয়েছে। গোটা বিষয়টি নিয়ে তদন্তও শুরু হয়েছে বলে জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।
প্রশাসনিক ব্যাখ্যা যা-ই হোক, গুরুত্বপূর্ণ বিধানসভা ভোটের আগে যোগীরাজ্যে গরুর দেহ এ ভাবে গঙ্গায় ভেসে যাওয়া নিয়ে সুর চড়াতে শুরু করেছে সবক’টি বিজেপি-বিরোধী দল। তাদের কটাক্ষ, যে বিজেপির শাসনে গোমাংস বাড়িতে রাখার অভিযোগ তুলে মানুষকে পিটিয়ে মারা হয়, যে বিজেপির শাসনে গরু পাচারকারী সন্দেহে মানুষকে খুন করা হয়, যে বিজেপি গোহত্যা নিষিদ্ধ করার দাবি তুলে বারবার সুর চড়ায়, তাদের আমলেই গঙ্গায় গরুর দেহ ভাসছে! আর সেই গঙ্গা, যা শুদ্ধ করার দাবি তুলে খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে তাবড় বিজেপি নেতারা নিত্য দিন সুর চড়ান! একই সঙ্গে বিরোধীদের বক্তব্য, গরু এবং গঙ্গা দুই-ই পবিত্র। বিজেপি শাসনে তাদেরই অপবিত্র করা হচ্ছে, দূষিত করা হচ্ছে।
গত মাসে মধ্যপ্রদেশের একটি গোশালায় একাধিক গরুর মৃত্যু নিয়ে বিস্তর হইচই হয়েছিল। সেই বিতর্ক কোনও রকমে চাপা দেয় সে রাজ্যের বিজেপি সরকার। তার পরেই যোগী রাজ্যে গরুর দেহ এ ভাবে গঙ্গায় ভেসে যাওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে গোশালাগুলির সামগ্রিক অবস্থা নিয়েই। বিরোধী নেতাদের অনেকেরই অভিযোগ, কেবল মাত্র ধর্মীয় জিগির তোলার কারণে রাজ্যের যত্রতত্র গোশালা গড়ে তোলা হয়েছে বিজেপি আমলে। কিন্তু না সেখানে গবাদি পশুগুলিকে ঠিক মতো খেতে দেওয়া হয়, না তাদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা হয়, না যথাযথ চিকিৎসা হয়। ফলে অনেক
সময়েই মড়ক লাগে গোশালাগুলিতে। মারা যায় বহু গরু। সেই সব মৃত্যু আড়াল করতেই সেগুলিকে এ ভাবে গঙ্গায় ভাসিয়ে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। এ ক্ষেত্রেও সে রকমই হয়েছে বলে প্রশাসনের একটি অংশের ধারণা। যদিও তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা। তবে বিরোধীরা ইঙ্গিত দিয়েছে, তারা এ নিয়ে নিশানা করবে যোগী প্রশাসনকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy