—ফাইল চিত্র।
প্রয়াত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ান। বেশ কিছু দিন ধরে অসুস্থ ছিলেন তিনি। দিল্লির একটি হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলছিল। ৭৪ বছর বয়সে বৃহস্পতিবার সেখানেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন প্রবীণ এই রাজনীতিক।
এ দিন ছেলে চিরাগ পাসোয়ানই রামবিলাসের মৃত্যুর কথা প্রকাশ করেন। রাত পৌনে ন’টা নাগাদ টুইটারে তিনি লেখেন, ‘‘বাবা, আপনি আর এই দুনিয়ায় নেই। কিন্তু আমি জানি, যেখানেই থাকুন না কেন, সবসময় আমার পাশে রয়েছেন আপনি। খুব মিস করছি।’’
১৯৬৯ সালে সংযুক্ত সমাজবাদী পার্টির হয়ে বিহারে বিধানসভা ভোটে দাঁড়ান রামবিলাস। সেটাই ছিল রাজনৈতিক জীবনে পা রাখা। সে বার বিধায়ক হন তিনি। কালক্রমে জয়প্রকাশ নারায়ণের অনুগামী হয়ে ওঠেন ওই দলিত নেতা। কিন্তু জরুরি অবস্থার সময় গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। ১৯৭৭ সালে জেল থেকে বেরিয়ে আরও বৃহত্তর রাজনৈতিক বৃত্তে ঢুকে পড়েন রামবিলাস। ১৯৭৭ সালে প্রথমবার লোকসভা ভোটে দাঁড়ান হাজিপুর কেন্দ্র থেকে। প্রথম বার সংসদে যাওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেই ছক্কা হাঁকান রামবিলাস। নিকটবর্তী কংগ্রেস প্রার্থী বলেশ্বর রামকে ৪ লক্ষ ২৪ হাজারেরও বেশি ভোটে হারিয়ে দেন তিনি। খাগারিয়ার বাসিন্দা হলেও তাঁকে হাজিপুর থেকে প্রার্থী করা হয়েছিল সে বার। তাঁর প্রার্থী পদ ঘোষণা করেছিলেন জয়প্রকাশ নারায়ণ স্বয়ং।
১৯৮৯ সালে নিজের রেকর্ড নিজেই ভেঙে দেন রামবিলাস। হাজিপুরে কংগ্রেস প্রার্থী মহাবীর পাসোয়ানকে তিনি ৫ লক্ষেরও বেশি ভোটে হারিয়ে দেন। তার পর থেকে হাজিপুর আর রামবিলাস পাসোয়ান কার্যত সমার্থক হয়ে ওঠে। হাজিপুরের কলার খ্যাতি দেশ জোড়া। তার সঙ্গে জুড়ে যায় রামবিলাসের নামও।
২০০০ সালে জনতা দল থেকে বেরিয়ে এসে লোক জনশক্তি পার্টি (এলজেপি) তৈরি করেন রামবিলাস পাসোয়ান। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে আট বার লোকসভার সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। রাজ্যসভার সাংসদ হয়েছেন দু’দফায়। মৃত্যুর আগে পর্যন্ত রাজ্যসভার সাংসদই ছিলেন তিনি। এ ছাড়াও কেন্দ্রীয় সরকারের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দফতরের দায়িত্ব সামলেছেন। ২০১৪ সাল থেকে কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রী মন্ত্রী ছিলেন তিনি।
पापा....अब आप इस दुनिया में नहीं हैं लेकिन मुझे पता है आप जहां भी हैं हमेशा मेरे साथ हैं।
— युवा बिहारी चिराग पासवान (@iChiragPaswan) October 8, 2020
Miss you Papa... pic.twitter.com/Qc9wF6Jl6Z
আরও পড়ুন: লাঠি, বোমা, গ্যাসে ধুন্ধুমার, শূন্য নবান্ন, দূরেই বিজেপি
আরও পড়ুন: জলকামান ছুঁতে পারল না দিলীপকে, ১ ঘণ্টার কর্মসূচি হল ‘রীতি’ মেনেই
দিল্লির রাজনীতির সমস্ত অলিন্দেই অবাধ গতি ছিল রামবিলাসের। ইউপিএ, এনডিএ দুই আমলেই একাধিক মন্ত্রকের দায়িত্ব সামলানোর অভিজ্ঞতা ছিল তাঁর। বিশ্বনাথ প্রতাপ সিংহ সরকারের শ্রমমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন তিনি। দেবেগৌড়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন তিনি ছিলেন রেলমন্ত্রী। আবার অটলবিহারী বাজপেয়ীর সময়ে তাঁর হাতে ছিল যোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক। বাজপেয়ীর আমলে তিনি খনি মন্ত্রকের দায়িত্বও সামলেছেন। আবার মনমোহন সিংহের সরকারে তিনি ছিলেন রাসায়নিক এবং সার মন্ত্রকের দায়িত্বে। মোদী সরকারের দ্বিতীয় দফায় রামবিলাস ছিলেন কেন্দ্রীয় উপভোক্তা বিষয়ক এবং খাদ্যবণ্টন মন্ত্রী।
তবে বিহার বিধানসভা নির্বাচন ঘিরে সম্প্রতি এনডিএ শরিক বিজেপির সঙ্গে বিরোধ বাধে তাঁর দলের। তার জেরে জোট ছেড়ে একক ভাবেই নির্বাচনে লড়ার সিদ্ধান্ত নেয় তাঁর দল। এ ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল তাঁর ছেলে চিরাগ পাসোয়ানেরও। সেই নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যেই হৃদযন্ত্রের সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। দিন কয়েক আগে অস্ত্রোপচার হয় তাঁর। তার পরেই এ দিন তাঁর মৃত্যুর খবর সামনে এল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy