ফাইল চিত্র
মাত্র দু’দিনের ব্যবধানে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ধাক্কা কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পরে এ বার কোভিডে আক্রান্ত হলেন পেট্রোলিয়াম ও ইস্পাতমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান।
করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ায় গত রবিবার গুরুগ্রামের মেদান্ত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন অমিত। ওই একই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ধর্মেন্দ্রও। আজ সন্ধ্যা ৭টা ২৭ মিনিটে টুইটারে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী লেখেন, ‘‘করোনার লক্ষণ দেখা দেওয়ায় পরীক্ষা করিয়েছিলাম। রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে। আমি সুস্থ আছি, তবে চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি।’’
গত বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে অমিত শাহ ছাড়াও ছিলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। যে কারণে অমিতের করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ার পরেই প্রধানমন্ত্রী-সহ বৈঠকে উপস্থিত অন্য মন্ত্রীদের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ সূত্র উদ্ধৃত করে একটি চ্যানেলের দাবি, ধর্মেন্দ্র ওই বৈঠকে ছিলেন না। তবে পরে অমিতের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়েছিল বলে খবর। বস্তুত, সংক্রমণ ধরা পড়া মাত্রই অমিত অনুরোধ জানিয়েছিলেন, সম্প্রতি তাঁর সঙ্গে যাঁরা দেখা করেছেন, তাঁরা সবাই যেন কোভিড পরীক্ষা করান। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় ইতিমধ্যেই নিভৃতবাসে চলে গিয়েছেন।
সাম্প্রতিক অতীতে দেশের শীর্ষ রাজনীতিকদের যে ভাবে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ছে, তা নিয়ে প্রশাসনিক মহল উদ্বেগে। তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল, মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী, কর্নাটকের প্রাক্তন ও বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী— সকলেরই সংক্রমণ ধরা পড়েছে হালে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী আজ ভারতে মোট সংক্রমিতের সংখ্যা ১৮.৫৫ লক্ষ হলেও সারা দিনের সংক্রমণ বৃদ্ধির নিরিখে আন্তর্জাতিক সমীক্ষায় সেই সংখ্যাটা রাতেই ১৯ লক্ষ পেরিয়েছে।
গত কালের পরে আজও সংক্রমণ বৃদ্ধির নিরিখে আমেরিকা এবং ব্রাজিলকে ছাপিয়ে প্রথম স্থানে রয়েছে ভারত। গত ২৪ ঘণ্টায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সংক্রমণ ধরা পড়েছে ৪৮,৬২২ জনের, ব্রাজিলে ১৭,৯৮৮ জনের। ভারতে সংখ্যাটা ৫২,০৫০। এমনকি গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুর নিরিখেও আমেরিকা (৫৬৮) ও ব্রাজিল (৫৭২)-কে পেরিয়েছে ভারত। এ দেশে মারা গিয়েছেন ৮০৩ জন। একটি পরিসংখ্যান বলছে, গত এক সপ্তাহে ভারতে সাড়ে ৫ হাজার মানুষ কোভিডে মারা গিয়েছেন।
বিশেষজ্ঞদের একাংশ অবশ্য বলছেন, দিন কয়েক আগেই আমেরিকায় দৈনিক গড়ে ৬০ হাজার মানুষের সংক্রমণ ধরা পড়ছিল। ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেশে অ্যাক্টিভ রোগী এখন ২২ লক্ষ, সুস্থের সংখ্যা ২৪ লক্ষ। সেখানে ভারতে সুস্থের সংখ্যা (১২.৩০ লক্ষ) অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা (৫.৮৬ লক্ষ)-র দ্বিগুণেরও বেশি। আজ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের রুটিন সাংবাদিক বৈঠকে স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণও এই বিষয়টির উল্লেখ করেন। দেশের নতুন নতুন এলাকায় করোনা ছড়িয়েছে বলে মেনে নিয়েও তিনি জানান, মোট সংক্রমণের ৮২ শতাংশই ১০টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে সীমাবদ্ধ রয়েছে। সেই হিসেবে ৬৬ শতাংশ সংক্রমণই ঘটেছে মাত্র ৫০টি জেলায় (দেশে মোট জেলা প্রায় সাড়ে ছ’শো)। সেই সঙ্গে, দেশে কোভিডে মৃত্যুহার ২.১০ শতাংশে নেমে এসেছে, যা ২৫ মার্চের প্রথম লকডাউনের পর থেকে সর্বনিম্ন। মৃতদের ৬৮ শতাংশ পুরুষ, ৩২ শতাংশ মহিলা। ৫০ শতাংশের বয়স ষাট বা তার বেশি।
প্রতি দশ লক্ষে দৈনিক ১৪০টি করোনা পরীক্ষার লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। স্বাস্থ্যসচিব জানান, এই মুহূর্তে ২৮টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ওই লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি পরীক্ষা হচ্ছে। সারা দেশের নিরিখে প্রতি দশ লক্ষে ওই হার হল ৪৭৯। ২৪টি রাজ্যে পরীক্ষার হার জাতীয় হারের চেয়েও বেশি। ভারতে সংক্রমণের হার ৮.৮৯ শতাংশ, ২৮টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে তা ১০ শতাংশের কম।
গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬,৬১,৮৯২টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত মোট পরীক্ষা হয়েছে ২ কোটিরও বেশি। যার ২৫ থেকে ৩০ শতাংশই র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা বলে জানিয়েছেন আইসিএমআরের ডিজি বলরাম ভার্গব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy