Advertisement
২৪ অক্টোবর ২০২৪
Amit Shah

সিএএ-র প্রসঙ্গে শাহের মুখে এ বার বাংলাদেশ

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “যদি প্রতিবেশী দেশে সম্মানের সঙ্গে বাঁচতে না পারেন, এ দেশে শরণার্থী হয়ে এসে থাকেন, তা হলে আমরা কী করব? আমরা নীরব দর্শক হয়ে বসে থাকতে পারি না।”

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। —ফাইল ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০২৪ ০৮:৩০
Share: Save:

বাংলাদেশে হিন্দুদের জোর করে ধর্মান্তরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুললেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আজ আমদাবাদে নয়া নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ-র মাধ্যমে পাকিস্তান থেকে আসা ১৮৮ জন হিন্দুর হাতে ভারতীয় নাগরিকত্বের শংসাপত্র তুলে দেন শাহ। সেই অনুষ্ঠানেই শাহ অভিযোগ তোলেন, দেশভাগের সময় বাংলাদেশে ২৭ শতাংশ হিন্দু ছিলেন। এখন তা কমে ৯ শতাংশ হয়েছে। হয় তাঁদের জোর করে ধর্মান্তরণ করা হয়েছে। অথবা তাঁরা এ দেশে শরণার্থী হয়ে চলে এসেছেন।

এই প্রসঙ্গেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “যদি প্রতিবেশী দেশে সম্মানের সঙ্গে বাঁচতে না পারেন, এ দেশে শরণার্থী হয়ে এসে থাকেন, তা হলে আমরা কী করব? আমরা নীরব দর্শক হয়ে বসে থাকতে পারি না।” বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ বলেই রাজনৈতিক শিবির মনে করছে। কারণ এত দিন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব বাংলাদেশের আক্রান্ত হিন্দু শরণার্থীদের ভারতে আশ্রয় দেওয়ার জন্য দাবি তুললেও নরেন্দ্র মোদী সরকার কোনও পদক্ষেপ করেনি। সীমান্তের ওপারে বাংলাদেশি নাগরিকদের ভিড় বাড়লেও শরণার্থীদের জন্য সীমান্তের দরজা খুলে দেওয়া হয়নি। তবে স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লা থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, ‘‘ভারতের ১৪০ কোটি মানুষ বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত।’’ তার পরে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস মোদীকে ফোন করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ইউনূস তাঁকে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন।

অমিত আজ সরাসরি বলেননি যে, বাংলাদেশ থেকে এখন কোনও হিন্দু শরণার্থী চলে এলে তাঁকে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। বাংলাদেশ থেকে যাঁরা আগেই চলে এসেছেন, তিনি তাঁদের সিএএ-তে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে বলেছেন। মোদী সরকার তাঁদের বিচার পাইয়ে দেবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন। এই বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও তৃণমূল কংগ্রেসকে নাম না করে আক্রমণ করে অমিত শাহ অভিযোগ তুলেছেন, ‘‘কিছু রাজ্যের সরকার, কিছু দল মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চাইছে। অনেক আগেই যাঁরা বাংলাদেশ থেকে চলে এসে ভারতে রয়েছেন, চাকরি-বাকরি করছেন, এখন তাঁরা নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করলে আইনি সমস্যা হবে বলে ভুল বোঝাচ্ছে।’’ অমিত বলেন, “আমি দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে বলছি, কোনও ভয় নেই। আবেদন করুন। এত দিন চাকরি করলে, জমি-বাড়ি কিনে থাকলে, নাগরিকত্ব আগের থেকেই কার্যকর হবে। কোনও মামলা মোকদ্দমা হবে না।”

২০১৯-এ লোকসভা নির্বাচনে দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পরে মোদী সরকার সিএএ পাশ করিয়েছিল। কিন্তু ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের আগে সেই আইনের বিধিনিয়ম তৈরি হয়। তার পরে পশ্চিমবঙ্গে মতুয়াদের নাগরিকত্ব বিলির কাজ শুরু হয়। এত দিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দাবি ছিল, কোভিড ইত্যাদির কারণে সিএএ-র বিধিনিয়ম চালু করতে দেরি হয়েছে। আজ অমিত অভিযোগ তুলেছেন, সিএএ পাশের পরে সংখ্যালঘুদের উস্কানি দেওয়া হয়েছিল। তাঁদের নাগরিকত্ব চলে যাবে বলে ভয় দেখানো হয়। অনেক জায়গায় আন্দোলন হয়, হিংসা হয়। সেই কারণেই বিধিনিয়ম চালু করতে দেরি। শাহ বলেন, “আমি মুসলিম ভাই-বোনদের আশ্বাস দিচ্ছি, কারও নাগরিকত্ব যাবে না। এই আইনে নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার কোনও ব্যবস্থা নেই।” কংগ্রেস ও তার সহযোগী দলগুলিকে নিশানা করে শাহ বলেন, দেশভাগের পরে কংগ্রেস নেতারা হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, শিখ শরণার্থীদের এ দেশের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলেছিলেন। কিন্তু তার পরে ভোটের জন্য সংখ্যালঘু তোষণের রাজনীতি করতে গিয়ে তা দেওয়া হয়নি। মোদী সরকার সিএএ-র মাধ্যমে সেই ব্যবস্থা করেছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Amit Shah CAA Bangladesh Sheikh Hasina
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE