কাশ্মীরে পুলিশি প্রহড়া।—ছবি পিটিআই।
বিশেষ মর্যাদা লোপ ও রাজ্য ভেঙে দুই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল তৈরির পর থেকেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে জম্মু-কাশ্মীর। আজ বাজেট বক্তৃতার গোড়ায় সেই কাশ্মীরেরই কবি দীননাথ কউল নাদিমের কবিতা উদ্ধৃত করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।
বাজেট পেশের সময়ে কবিতার উদ্ধৃতি দেওয়ার নজির রয়েছে অতীতেও। আজ সরকারের লক্ষ্যের কথা বলতে গিয়ে দীননাথের কবিতার উদ্ধৃতি দেন নির্মলা। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের দেশ ফুলে ভরা শালিমার বাগের মতো, আমাদের দেশ ডাল লেকে ফোটা পদ্মের মতো। আমাদের দেশ তরুণদের গরম রক্তের মতো। আমার দেশ, আপনাদের দেশ, আমাদের দেশ দুনিয়ার সবচেয়ে প্রিয়।’’ অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘আমরা যা করছি, বাজেটের মাধ্যমে যা বলছি এবং সরকার যে কাজ করছে তার সবটাই আমাদের দেশের জন্য।’’
১৯১৬ সালে শ্রীনগরে জন্ম হয় দীননাথের। তিনি কাশ্মীরি, উর্দু ও ইংরেজিতে শতাধিক কবিতা লেখেন। ১৯৩০, ১৯৪০ ও ১৯৫০-এর দশকে কাশ্মীরের উদারপন্থী আন্দোলনের অন্যতম মুখও ছিলেন তিনি। আজ দীননাথের কবিতার উদ্ধৃতি দিয়ে নির্মলা জম্মু-কাশ্মীরের মানুষকে বার্তা দিতে চেয়েছেন বলেই ধারণা রাজনীতিকদের।
শুধু কবিতার উদ্ধৃতি নয়, বাজেটে জম্মু-কাশ্মীরের জন্য ৩০,৭৫৭ কোটি ও লাদাখের জন্য ৫,৯৫৮ কোটি টাকা বরাদ্দও করেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। জম্মু-কাশ্মীরে বরাদ্দের মধ্যে ২৭৯ কোটি টাকা দেওয়া হবে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিলে। বাকি অর্থ জম্মু-কাশ্মীরের সম্পদের ঘাটতি মেটানোর কাজে ব্যবহার করা হবে। লাদাখে বরাদ্দের মধ্যে ৮৩.৩৮ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে গ্রামীণ উন্নয়নে, ৮০.৬৯ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে পূর্ত দফতরকে, ৫৪.০৭ কোটি বরাদ্দ হয়েছে বিদ্যুৎ খাতে, ৫২ কোটি টাকা বিমান পরিবহণে ও ৪৭.৫০ কোটি টাকা পর্যটন খাতে। তবে ওই দুই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের জন্য কোনও বিশেষ প্রকল্পের কথা এ দিন ঘোষণা করেননি অর্থমন্ত্রী।
নির্মলার উদ্ধৃতি বা ঘোষণায় অবশ্য বিশেষ প্রভাব পড়ছে না উপত্যকার বাসিন্দাদের বড় অংশের মনে। জম্মু-কাশ্মীর সরকারের মৎস্য দফতরের কর্মী রিয়াজ় ওয়ানি বললেন, ‘‘বরাদ্দ যে হয়েছে তা তো জানি। কিন্তু অর্থমন্ত্রী ফের ডিজিটাল ইন্ডিয়ার কথা বললেন। এই ডিজিটাল যুগে এখনও কাশ্মীরে পুরোপুরি ইন্টারনেট চালু হল না। সরকারি কিয়স্ক ছাড়া পরীক্ষার ফর্ম ভর্তি করার মতো সাধারণ কাজগুলিও করা যাচ্ছে না। এর পরে এ সব ঘোষণা প্রহসন বলে মনে হয়।’’
ওয়ানির বক্তব্য, ‘‘তুষারপাতের ফলে এ বারের শীতে কাশ্মীরে অন্তত ৬ হাজার ট্রান্সফর্মার খারাপ হয়েছিল। আগে টুইটারে স্থানীয় প্রশাসনকে রীতিমতো ধমকধামক দিতেন বাসিন্দারা। এখন টুইটারও বন্ধ। আর সরকার কী করছে তাও বোঝা যায় না।’’ প্রায় একই সুরে পড়ুয়া রিয়াজ় খালিক বললেন, ‘‘রাস্তাঘাটের হাল এখন খুব খারাপ। প্রশাসন অন্তত সে দিকে নজর দিলেও কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যায়।’’ বাজেটে বরাদ্দ কোন খাতে খরচ হবে তা নিয়ে মুখ খুলতে রাজি হয়নি জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসন। প্রতিক্রিয়া জানাতে রাজি নয় স্থানীয় ব্যবসায়ী সংগঠনও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy