ছবি সংগৃহীত।
আগামী তিন বছরের মধ্যে প্রত্যেক গ্রাহকের ঘরে স্মার্ট প্রি-পেড মিটার লাগানোর ব্যাপারে শনিবার কেন্দ্রীয় বাজেটে প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। প্রথাগত মিটার বদলে ফেলার ব্যাপারে প্রতিটি রাজ্যকে এগিয়ে আসার কথাও বলেছেন তিনি। অর্থমন্ত্রীর মতে, স্মার্ট মিটার লাগালে গ্রাহকরা মাসুল বুঝে পছন্দসই বিদ্যুৎ সরবরাহ সংস্থা বেছে নেওয়ার স্বাধীনতাও পাবে।
দীর্ঘদিন ধরেই দেশের বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থাগুলির অধিকাংশই আর্থিক সঙ্কটের মুখে পড়ে রয়েছে। অনেক সংস্থা বিদ্যুৎ কিনেও টাকা মেটাতে পারছে না। এ দিন বাজেটে অর্থমন্ত্রী বণ্টন সংস্থাগুলির সঙ্কটের প্রসঙ্গ টেনেই স্মার্ট মিটার লাগানোর প্রস্তাব দিয়েছেন। কিন্তু ঋণ ভারে জর্জরিত বণ্টন সংস্থাগুলিকে ঘুরে দাঁড় করানোর ব্যাপারে বাজেটে কোনও নতুন প্রস্তাবের কথা বলা হয়নি। তবে আগামী ২০২০-২১ অর্থবর্ষের জন্য বিদ্যুৎ-সহ অচিরাচরিত শক্তি ক্ষেত্রে বাজেটে ২২,০০০ কোটি টাকা বরাদ্দের কথা ঘোষণা করেছেন নির্মলা। যেখানে প্রতিটি মানুষের ঘরে দিন-রাত বিদ্যুৎ পরিষেবা দেওয়ার পাশপাশি গ্রাহকের চাহিদাকে মর্যাদা দেওয়াই কেন্দ্রের লক্ষ্য। রেললাইনের ধারে বড় সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ে তোলার কথাও বাজেটে বলা হয়েছে।
দেশের বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে স্মার্ট মিটার-সহ মাসুল বুঝে বিদ্যুৎ সংস্থা বাছাই করা নিয়ে অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাবকে ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবেই দেখছেন রাজ্যের কর্তারা। বিষয়টি নিয়ে সরকারের অন্দরমহলে অনেক দিন ধরেই চর্চা চলছে বলে তাঁদের দাবি। এ সংক্রান্ত একটি খসড়াও তৈরি হয়ে গিয়েছে বলে বিদ্যুৎ দফতর সূত্রে খবর। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎমন্ত্রী আর কে সিংহও স্মার্ট মিটার লাগালে গ্রাহকদের বিদ্যুতের মাসুল কমানোর ব্যাপারে বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলির সঙ্গে কথা বলার ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে বলেছেন। তবে বিষয়গুলিকে কার্যকর করতে দেশের বিদ্যুৎ আইনে কিছু সংশোধন করা হবে বলেই বিদ্যুৎ বিশেষজ্ঞরা দাবি করছেন।
রাজ্যের এক বিদ্যুৎ কর্তার বক্তব্য, স্মার্ট মিটার লাগাতে গেলে বিপুল টাকা খরচ হবে বণ্টন সংস্থাগুলির। মিটার দেখা-সহ বিল তৈরির কাজের সঙ্গে যাঁরা যুক্ত, তাঁদের কাজের নিশ্চয়তা নিয়েও একটা আশঙ্কা তৈরি হবে। এই সমস্যাগুলি কী ভাবে সমাধান হবে তা পরিষ্কার হওয়া দরকার।
অন্যদিকে, কোনও একটি অঞ্চলে গ্রাহকদের পছন্দসই সংস্থা বেছে নেওয়ার ব্যবস্থা চালু করতে গেলেও বিভিন্ন জটিলতা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা ।
রাজ্যের প্রাক্তন এক আমলার বক্তব্য, একটি নির্দিষ্ট বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিকাঠামোর সাহায্যে (নেটওয়ার্ক) দু’টি সংস্থা বিদ্যুৎ দিলেও, ওই অঞ্চলে হুকিং-সহ অন্যান্য কারণে যে ক্ষতি হবে, তার দায়ভার কে বহন করবে তা-ও কেন্দ্রকে পরিষ্কার করতে হবে। না-হলে সংস্থাগুলি প্রতিযোগিতায় নামতে আগ্রহী হবে না। তার জন্যই বিদ্যুৎ আইনে সংশোধন দরকার হবে।
বাজেটে এ দিন এক কোটি মানুষের বসবাস রয়েছে এমন শহরগুলিতে বায়ু দুষণ রুখতে পুরনো তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। এ ব্যাপারে রাজ্যগুলিই সব দিক খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবে। বন্ধ করে দেওয়া ওই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জমি বিকল্প প্রয়োজনে ব্যবহার করা যেতে পারে। এই খাতে ৪,৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাবও বাজেটে বলা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy