পরেশ বরুয়া। ছবি: সংগৃহীত।
আলোচনার শর্তে ‘স্বাধীন ও সার্বভৌম অসম’ থাকলে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি আলফা প্রধান পরেশ বরুয়া। দিল্লি নয় দিসপুরেই শান্তি আলোচনায় বসতে তৈরি আলফা স্বাধীন। প্রয়োজনে পরেশ নিজেই হাজির হবেন আলোচনার টেবিলে। গতকালই অসম সরকারের তরফে হিমন্তবিশ্ব শর্মা আলফা (স্বাধীন)-কে আলোচনায় আহ্বান জানান। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তারই প্রত্যুত্তরে এই বার্তা দিলেন পরেশ। আগের অবস্থান থেকে নরম হয়ে তিনি এও জানালেন, ‘‘সার্বভৌমত্ব নিয়ে আলোচনা মানেই সার্বভৌমত্ব দিয়ে দেওয়া নয়। দু’পক্ষই যুক্তি সহকারে আলোচনা চালাতে পারে।’’
এ দিন শিলচরে মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বলেন, ‘‘সবাই এখন অসমে স্থায়ী শান্তি চাইছেন। পরেশ বরুয়াকেও একই আহ্বান জানাই।’’ কিন্তু আলফা নেতা যে অসমের সার্বভৌমত্বের দাবি ছেড়ে কথা বলতে নারাজ। মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, ‘‘আগে হিংসা ছেড়ে আসুন। বৈঠক শুরু হলে সব প্রসঙ্গেই কথা হতে পারে।’’
সংবাদমাধ্যমের একাংশের খবর, আলোচনায় বসতে রাজি আলফা। বহাগ বিহুর আগেই পরেশ বরুয়ার সঙ্গে শান্তি চুক্তি হবে ভারত সরকারের। কিন্তু পরেশ বলেন, ‘‘এমন কোনও আলোচনা শুরু হয়নি। যদি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সত্যিই অসম সমস্যা সমাধানে আন্তরিক ও গণতন্ত্রে বিশ্বাসী হন, তা হলে সার্বভৌমত্ব নিয়ে আলোচনা শুরু করতে তাঁর আপত্তি থাকার কথা নয়।’’ তিনি এটাও স্পষ্ট করেন, ‘‘সরকার যদি নিঃশর্ত আলোচনার নামে কূটনৈতিক টোপে আলফা নেতাদের বন্দি বা বিভাজিত করতে চায় তা হলে আলোচনা করে লাভ নেই।’’
আরও পড়ুন: ‘কেজরীবালকে ভালবাসি’ লেখায় ১০ হাজার টাকা জরিমানা অটো চালকের!
এত দিন অসমের সার্বভৌমত্ব প্রসঙ্গে অনড় ছিলেন পরেশ। কিন্তু আজ সংবাদমাধ্যমে ফোন করে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পরেশ বলেন, ‘‘বিভিন্ন দেশের সরকার শান্তির স্বার্থে সার্বভৌমত্ব নিয়ে আলোচনায় বসছে। আমরাও চাইছি ভারত সরকার স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব নিয়ে আন্তরিকতার সঙ্গে আলোচনায় বসুক। আমরা অসমের ইতিহাস তুলে ধরে যুক্তি দেখাব, অসম বরাবরই স্বাধীন ছিল। এখনও বাতিল হয়নি ইয়ান্দাবুর চুক্তি। অসমের কিছু নেতা ভারতের অধীনে গিয়েছিলেন মাত্র। তাই সার্বভৌমত্ব অসমের ন্যায্য অধিকার। ভারত সরকারও পাল্টা যুক্তি দিয়ে দেখাক, কেন আমরা সার্বভৌমত্ব পেতে পারি না। কিন্তু সার্বভৌমত্ব নিয়েই আলোচনার আহ্বান জানাতে হবে।’’
অসম অখণ্ড রেখে স্বাক্ষরিত বড়ো চুক্তিকে স্বাগত জানিয়ে পরেশ বলেন, ‘‘বড়োরা বহু বছর ধরে সংগ্রাম চালিয়ে সাফল্য পেলেন।’’ তাঁরা খোলা মনে আলোচনা করতে ১০০ শতাংশ তৈরি বলে তিনি জানান। প্রথমে প্রতিনিধি পাঠানো হবে। আলোচনা এগোলে তিনি নিজেই অসমে আসবেন। অতীতে ভারতের সঙ্গে শান্তি আলোচনার জন্য পিসিজি তৈরি হয়েছিল। কিন্তু আলোচনা ভেস্তে যায়। পিসিজির অন্যতম সদস্য রেবতী ফুকন গত বছর থেকে নিখোঁজ। সেনা সূত্রে খবর, আইবির এক শীর্ষকর্তার উদ্যোগে রেবতীবাবুই পরেশের সঙ্গে আলোচনায় মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা নিয়েছেন। আছেন পরেশের ঘাঁটিতেই। অবশ্য মধ্যস্থতাকারী নিয়ে আজ সরাসরি জবাব এড়িয়েছেন পরেশ। তিনি বলেন, ‘‘ভারত সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা কোনও বড় ব্যাপার নয়। ইন্টারনেটের যুগে তা পলকেই সম্ভব।’’ কিন্তু ‘সেফ প্যাসেজ’ প্রসঙ্গে আপত্তি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমি অসমে গেলে জনতাই আমায় নিরাপত্তা দেবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy