একদিনের আক্রমণেই বিধ্বস্ত ইউক্রেন। ছবি: রয়টার্স
ঠিক মতো খাবার নেই। জলও পান করতে হচ্ছে ভেবে-চিন্তে। পরিমিতভাবে। কখন কোথায় আশ্রয় নিতে হবে, তারও ঠিক-ঠিকানা নেই। আছে শুধু ভয় আর অনিশ্চয়তা। বেঁচে ঠিক ভাবে দেশে ফিরতে পারব তো? এই আশঙ্কা নিয়েই দিন কাটছে ইউক্রেনের খারকিভে আটকে থাকা ভারতীয় পড়ুয়া সৃষ্টি গর্গের।
ঝাড়খন্ডের জামশেদপুরের বাসিন্দা সৃষ্টি খারকিভের মেডিক্যাল কলেজের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী। ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলার পর থেকেই প্রাণ বাঁচাতে মরিয়া সৃষ্টির ঠাঁই হয়েছে মিলিটারি বাঙ্কারে পরিণত করা নিকটবর্তী মেট্রো স্টেশনে। সেখানেই উৎকণ্ঠা নিয়ে বৃহস্পতিবার রাত কেটেছে সৃষ্টির। সকাল হতে ফের খাদ্য, জল এবং অন্যান্য রসদের চাহিদায় নিজের বাসায় ফিরেছেন তিনি। তবে জানেন না আবার কখন ছুটতে হবে অনিশ্চয়তার পথে।
আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে কথা বলার সময় সৃষ্টি বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার এখানে বোমাবর্ষণ হয়েছে। সারা দিন-সারা রাত মেট্রো স্টেশনে কাটিয়ে ক্লান্ত। জানি না কখন আবার লুকোতে ছুটতে হবে। এত শক্তি নেই যে আবার মেট্রোতে ফিরে যাবো। এ কটুও কথা বলতে পারছি না। তাই যাওয়ার আগে একটু বিশ্রাম করে নিতে চাইছি।’’ যুদ্ধ পরিস্থিতিতে প্রাণ বাঁচাতে যে যেখানে খুশি মরিয়া হয়ে ছুটছে এবং নিকটবর্তী মেট্রো বাঙ্কারে গিয়ে লুকিয়ে পড়ছে বলেও জানান সৃষ্টি। খাবার এবং জলও নিজেদেরই জোগাড় করতে হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
বাঙ্কারে টিভি দেখার কোনও ব্যবস্থা নেই। পরিস্থিতি কোন দিকে গড়াচ্ছে, তা জানতে হাতে থাকা মোবাইলই নিত্যসময়ের ভরসা সৃষ্টির মতো বাঙ্কারে আশ্রয় নেওয়া ভারতীয়দের। সৃষ্টি বলেন, ‘‘মোবাইল সাইলেন্টে রাখতে পারছি না। সারাদিন ধরেই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আসছে। বারবার ব্যাটারি ফুরিয়ে আসছে। কথা বলতেও খুব কষ্ট হচ্ছে।’’
বৃহস্পতিবার ভারতীয় দূতাবাসে ১০-১৫ বার করে ফোন করেন সৃষ্টি। দূতাবাসের তরফ থেকে ভারতে ফেরানোর আশ্বাস দেওয়া হলেও কবে ফেরানো হবে, তা নিয়ে কোনও নিশ্চয়তা নেই। তাই সমস্ত ভারতীয়েরা একসঙ্গে দলবদ্ধভাবে থাকার চেষ্টা করছেন। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে কাউকে বিশ্বাস করা যাচ্ছে না বলেও আনন্দবাজারের সঙ্গে কথা বলার সময় জানান সৃষ্টি।
ইউক্রেন নিয়ে পুতিনের চিন্তাভাবনা সৃষ্টির মতো অনেক ভারতীয়ের জানা নেই। তবে ভারতে ফেরার ইচ্ছে প্রবল। কেন পড়তে ইউক্রেনে গিয়েছিলেন, সেই প্রশ্নও মাথায় ঘুরছে অনেকের। তার মাঝেই সৃষ্টিরা জানে এই মুহূর্তে সব থেকে দরকারি প্রাণ বাঁচানো। তার জন্য লাগবে নিজের এবং মোবাইলের জীবনীশক্তি। তাই ফোন রাখার আগেও তার শেষ কথা একটাই, ‘‘সত্যিই আর কথা বলতে পারছি না। ফোনের ব্যাটারিও ফুরিয়ে যাচ্ছে। একটু বিশ্রাম নিতে চাই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy