বিহারের বেগুসরাইয়ে দুষ্কৃতী-তাণ্ডব।
একটি বাইক, দুই সওয়ারি। এলোপাথাড়ি গুলি, ৪৬ মিনিট আর ৩০ কিলোমিটার! ঠিক যেন কোনও ছবির সাজানো প্লট।
এক জন বাইক চালাচ্ছেন, অন্য জন পিছনে বসে পথচলতি মানুষকে লক্ষ্য করে পর পর গুলি চালাচ্ছেন। আর একের পর এক ব্যক্তি সেই গুলিতে আহত হয়ে লুটিয়ে পড়ছেন। ঠিক যেন বলিউডি কোনও ছবির দৃশ্য! না, এটা কোনও ছবির শ্যুটিং ছিল না। বাস্তবেই এমন ঘটনা ঘটেছে বিহারের বেগুসরাইয়ে ২৮ নম্বর জাতীয় সড়কে।
সন্ধ্যা তখন ৬টা। এনএইচ ২৮ দিয়ে যেতে যেতে পথচলতি মানুষকে লক্ষ্য করে বাইক থেকে একের পর এক গুলি চালাচ্ছিলেন এক দুষ্কৃতী। কারও হাতে, কারও পেটে, কারও পায়ে গুলি লাগতেই ছিটকে পড়ছিলেন। আর এ ভাবেই পর পর গুলিবিদ্ধ করতে করতে এগিয়ে যাচ্ছিলেন ওই দুষ্কৃতী। জাতীয় সড়কে ৩০ কিলোমিটার জুড়ে ৪৬ মিনিট ধরে দুষ্কৃতীরা তাণ্ডব চালাল। যে ঘটনা গোটা বিহারকে নাড়িয়ে দিয়েছে। দেশে এই ধরনের দুষ্কৃতী হামলা এই প্রথম বলে মনে করছে পুলিশ প্রশাসন।
প্রথম গুলি লাগে বেগুসরাইয়ের পঞ্চায়েত সমিতির এক সদস্য অমিত কুমারের। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। পিপরা গ্রামের বাসিন্দা। বাকি যে দশ আহত হয়েছেন তাঁরা হলেন, বিশাল সোলাঙ্কি। তিনি পটনার বাসিন্দা। মোকামার বাসিন্দা রঞ্জিত যাদব। বেগুসরাইয়ের নিতেশ কুমার। তেয়ায়য়ের গৌতম কুমার, বরৌনীর অমরজিৎ কুমার, মনসুরচকের নীতীশ কুমার, মরাঞ্চীর মোহন কুমার, প্রশান্ত কুমার এবং ভরত যাদব এবং জীতু পাসোয়ান। এঁদের মধ্যে তিন জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
তেয়ায়ের বাসিন্দা গৌতম কুমার রান্নার গ্যাস সরবরাহের কাজ করেন। এক সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, “সন্ধ্যা তখন ৬টা। জাতীয় সড়কের ধারে গ্যাসের গাড়িটি থামিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম। হঠাৎ দেখি মোটরসাইকেলে করে দু’জন গুলি ছুড়তে ছুড়তে রাস্তা ধরে এগিয়ে আসছে। প্রচণ্ড ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। নিজেকে আড়াল করতে যাব, ঠিক সেই সময়েই একটা গুলি এসে হাতে লাগল। ছিটকে পড়লাম রাস্তার ধারে। গল গল করে রক্ত বেরোচ্ছিল। রাস্তার দিকে তাকিয়ে দেখলাম ওই বাইকআরোহীরা গুলি চালাতে চালাতে এগিয়ে গেল। তার পর আমাকে স্থানীয়রাই হাসপাতালে ভর্তি করালেন।”
রাস্তার পাশে ঠেলাগাড়িতে বরফ বিক্রি করছিলেন জীতু। তাঁর পায়ে গুলি লেগেছে। তিনি বলেন, “হঠাৎই গুলি চলার আওয়াজ শুনতে পেয়ে রাস্তার দিকে তাকাতেই দেখি দু’জন গুলি চালাতে চালাতে এগিয়ে আসছে। ঠেলাগাড়ির নীচে লুকোনোর চেষ্টা করতেই পায়ে গুলি এসে লাগল।”
সমস্তিপুর থেকে মঙ্গলবার গভীর রাতে দুই সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে তাঁরা ওই দুই দুষ্কৃতী নন বলে পুলিশের কাছে দাবি করেছেন। তবে পুলিশ কোনও রকম ফাঁক রাখতে চাইছে না। ধৃত দু’জন এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কি না, তা জানতে রাস্তার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে পুলিশ। বেগুসরাইয়ের ঘটনার পর বিহারের সাত জেলায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সমস্ত সীমানা সিল করে তল্লাশি চালানো হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy