প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: টুইটার।
কর্নাটকে বিধানসভা ভোটের শেষ বেলায় এ বারে জাতীয়তাবাদের তাস খেললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর বক্তব্য, দেশবিরোধী বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তি ‘টুকড়ে টুকড়ে গ্যাং’ প্রভাব ফেলেছে কর্নাটকের রাজনীতিতে। কর্নাটককে ভারত থেকে আলাদা দেখতে চাইছে ওই গ্যাং। পিছনে রয়েছে গান্ধী পরিবার। যারা কর্নাটককে স্বাধীন দেশ হিসাবে সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন বলে দাবি করেন মোদী।
কর্নাটকে বিধানসভা ভোটের আগে প্রবল চাপে বিজেপি তথা সঙ্ঘ পরিবার। দক্ষিণের এই একমাত্র রাজ্যে ক্ষমতায় থাকলেও সেখানে দুর্নীতি-সহ নানা প্রশ্নে রীতিমতো চাপে বিজেপি। একাধিক জনমত সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে, সেখানে বিজেপির পক্ষে এ বারে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া কঠিন। এই অবস্থায় প্রচারে নেমে বিজেপি নেতারা দুর্নীতি বা উন্নয়নের বদলে অন্য নানা বিষয় নিয়ে নানা সময়ে সরব হয়েছেন। মণিপুরে অশান্তি, রাজধানী দিল্লিতে কুস্তিগীরদের বিক্ষোভ বা কাশ্মীর পরিস্থিতির মধ্যেও দক্ষিণের একমাত্র রাজ্যে ক্ষমতা ধরে রাখতে দিনরাত এক করে কর্নাটকে পড়ে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এ বারে শেষ বেলায় এই রাজ্যে ভোট কুড়াতে জাতীয়তাবাদকেই অস্ত্র করার কৌশল নিলেন তিনি।
আজ প্রচারের শেষ রবিবারে দীর্ঘ শোভাযাত্রা করার পাশাপাশি একাধিক জনসভা করেন মোদী। মাইসুরুর নানজানগুডু এলাকার সভা থেকে মূলত গত কাল থেকে প্রচারে নামা সনিয়া গান্ধীকে নিশানা করেন মোদী। তিনি বলেন, ‘‘গত কাল গান্ধী পরিবার প্রচারে এসে কর্নাটকের সার্বভৌমত্ব রক্ষার কথা বলেছিলেন। এর অর্থ হল, যখন কোনও দেশ স্বাধীন হয়, তখন সেটিকে সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসাবে ধরা হয়ে থাকে। কংগ্রেস নেতারা যা বলছেন, তা ধরলে মেনে নিতে হয়, কর্নাটক আর ভারতের অংশ নয়।’’ এর পরেই ‘টুকড়ে টুকড়ে গ্যাং’-এর সমালোচনার মাধ্যমে পরোক্ষে রাহুল গান্ধীর দিকে আঙুল তুলে মোদী বলেন, ‘‘এর অর্থ, কংগ্রেস প্রকাশ্যে কর্নাটককে ভারত থেকে পৃথক করার কথা বলছে। আমি ভাবতেও পারিনি, ‘টুকড়ে টুকড়ে গ্যাং’-এর প্রভাব এই উচ্চতায় পৌঁছবে।’’
আজ যে ভাবে কর্নাটকের সার্বভৌমত্ব নিয়ে মোদী সরব হন, তা আসলে তা শেষ পর্যায়ে জাতীয়তাবাদের কথা বলে বিজেপির পক্ষে সমর্থনের হাওয়া তোলার কৌশল বলেই মনে করছেন রাজনীতিকেরা। যদিও মোদী যে ‘টুকড়ে টুকড়ে গ্যাং’-এর প্রসঙ্গ তুলেছেন, সেই রকম কোনও ‘গ্যাং’য়ের কথা অস্বীকার করেছে তাঁরই সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। তথ্যের অধিকার আইনে করা এক প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছিল, এ সম্পর্কে সরকার কিছু জানে না! আজ বিরোধীরা সেই প্রশ্ন তুলে মোদীকে নিশানা করেছেন। পাশাপাশি কর্নাটকের বিজেপি সরকারের দুর্নীতির প্রসঙ্গটি টেনে ফের আক্রমণ শানিয়েছেন রাহুল গান্ধী। কর্নাটকের বিজেপি সরকারের মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে সরকারি প্রকল্পে ৪০ শতাংশ কমিশন খাওয়ার অভিযোগ তুলেছেন রাজ্যের ঠিকাদারেরা। সেই সূত্র ধরে আজ রাহুল গান্ধী জানতে চান, ‘‘রাজ্য ও কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী যে ডাবল ইঞ্জিনের সরকারের কথা বলেন, সেই ইঞ্জিনের কে, কত শতাংশ কমিশন খেয়েছে? দিল্লির সরকার এই দুর্নীতি থেকে লাভবান হয়েছে। তা না হলে মোদীজি নির্ঘাত কর্নাটক সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেন।’’
ভোটের আগে বিজেপি থেকে কংগ্রেসে যোগদান করা জগদীশ সেট্টারের সমর্থনে গত কাল হুবলি কেন্দ্রে সভা করেছিলেন সনিয়া গান্ধী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy