সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত তথ্য ও মতের উপরে রাজনৈতিক ও কর্পোরেট প্রভাব নিয়ন্ত্রণে বেশ কিছু সুপারিশ করল টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অব ইন্ডিয়া (ট্রাই)। তাতে সংবাদমাধ্যমের মালিকানার উপরে কিছু নিয়ন্ত্রণের কথা বলা হয়েছে।
আজ সুপারিশগুলি প্রকাশ করার সময়ে ট্রাই চেয়ারম্যান রাহুল খুল্লার বলেন, “সংবাদমাধ্যমের মালিকানা কার হাতে রয়েছে তা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। ধরা যাক ভোপালের কোনও বিধায়ক বা সাংসদের হাতে একটি টিভি চ্যানেল রয়েছে। সেটি যে কিছুটা রং মিশিয়ে খবর প্রচার করছে না তা আমরা জানছি কী ভাবে?”
ট্রাইয়ের সুপারিশ অনুযায়ী, রাজনৈতিক দলের হাতে বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমের মালিকানা থাকাই উচিত নয়। ধর্মীয় সংগঠন, কেন্দ্র ও রাজ্যের কোনও মন্ত্রক বা দফতর ও সরকারি অর্থসাহায্যে পুষ্ট কোনও সংস্থাকেও বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমের মালিকানা দেওয়া উচিত নয় বলে জানিয়েছে ট্রাই। এই বিষয়ে নয়া আইন তৈরির পরামর্শ দিয়েছে তারা। কোনও ক্ষেত্রে ইতিমধ্যেই অনুমতি দেওয়া হয়ে থাকলে সে জন্য আইনে আলাদা ব্যবস্থা রাখতে হবে। বিভিন্ন রাজ্যে বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমে রাজনৈতিক দলের নিয়ন্ত্রণের কথা রিপোর্টে উল্লেখ করেছে ট্রাই।
সংবাদমাধ্যমে কর্পোরেট সংস্থার মালিকানার ক্ষেত্রেও বেশ কিছু নিয়ন্ত্রণ থাকা উচিত বলে জানিয়েছে ট্রাই। খুল্লারের কথায়, “বোর্ডরুম ও নিউজরুমের মধ্যে কতটা দূরত্ব তা জানতে হবে। সাংবাদিকরা কতটা স্বাধীনতা পান তার উপরে নজর রাখতে হবে।” সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমের মালিকানায় কর্পোরেট সংস্থার উপস্থিতি বেড়েছে। ‘নেটওয়ার্ক ১৮’ গোষ্ঠী হাতে নিয়েছে মুকেশ অম্বানীর নিয়ন্ত্রণাধীন রিলায়্যান্স গোষ্ঠী। আরও কয়েকটি কর্পোরেট সংস্থার সংবাদমাধ্যমের মালিকানা হাতে নেওয়ার কথা উল্লেখ রিপোর্টে উল্লেখ করেছে ট্রাই।
ট্রাইয়ের বক্তব্য, “সংবাদমাধ্যমকে কোনও বিশেষ স্বার্থের অধীন হতে দেওয়া যাবে না। অন্য পণ্য বা পরিষেবার সঙ্গে সংবাদমাধ্যমকে গুলিয়ে ফেলা যাবে না। ভাবনার বাজার জুতো বা বিস্কুটের বাজারের চেয়ে আলাদা। সংবাদমাধ্যম আরও উন্নত উদ্দেশ্য পূরণ করে। তাই তা নিয়ে আলাদা ভাবনাচিন্তা প্রয়োজন।”
সংবাদমাধ্যমের জন্য একটি স্বাধীন নিয়ন্ত্রক সংস্থা তৈরির সুপারিশ করেছে ট্রাই। তার নেতৃত্বে থাকবেন সুপ্রিম কোর্টের এক জন প্রাক্তন বিচারপতি। সেই সঙ্গে সংবাদজগতের বাইরের কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তি। টাকা নিয়ে খবর করা (পেড নিউজ), সাংবাদিকদের স্বাধীনতা সংক্রান্ত বিষয় ও সংস্থার স্বার্থে খবর করার বদলে শেয়ার পাওয়া (প্রাইভেট ট্রিটি) নিয়ে তদন্ত করতে পারবে ওই সংস্থা। প্রয়োজনে জরিমানা ধার্য করতে পারবে তারা। ‘পেড নিউজ’-এর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সংবাদমাধ্যমও দায় এড়াতে পারে না বলে মনে করেন খুল্লার। ট্রাইয়ের সুপারিশ অনুযায়ী, খবরের চেহারায় বিজ্ঞাপনের (অ্যাডভার্টোরিয়াল) ক্ষেত্রে স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করতে হবে, ওই খবরটির জন্য টাকা নেওয়া হয়েছে। প্রসার ভারতী ও কেন্দ্রের মধ্যে দূরত্ব বাড়ানোর সুপারিশ করেছে ট্রাই। তাদের মতে, প্রসার ভারতীর স্বশাসন ও স্বাধীনতা বাড়ানোর চেষ্টা করা উচিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy