প্রতীকী ছবি।
অপ্রত্যাশিত কিছু নাটকীয়তার মধ্যেই সপ্তদশ লোকসভার প্রথম ভোটাভুটি হল সেই পুরনো তাৎক্ষণিক তিন তালাক বিলকে কেন্দ্র করে। ভোটাভুটির আগে বিস্তর বিতর্কও হল। সেই বিতর্কে সরব হলেও তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ভোটাভুটিতে অংশ নিল না তৃণমূল।
শুক্রবার লোকসভায় প্রশ্নোত্তর পর্ব শেষ হতেই গত লোকসভার শেষ পর্বে আনা তিন তালাক বিলটি পেশ করার জন্য স্পিকারের অনুমতি চান কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। তিনি বলেন, ‘আমরা গত লোকসভাতেই বিলটি পাশ করেছিলাম। কিন্তু রাজ্যসভায় পাশ না হওয়ায় লোকসভার মেয়াদ শেষ হতেই বিলটি বাতিল হয়ে যায়। অধ্যাদেশ জারি ছিল। তাই নতুন সংসদে বিলটি আজ আনা হয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘শাহ বানু মামলায় সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, তিন তালাক সাংবিধানিক নৈতিকতার বিরুদ্ধে। এটা ধর্ম নয়, নারীর গরিমার বিষয়।’’
বিজেপি সূত্রের বক্তব্য, পরিকল্পিত ভাবেই সংখ্যালঘু সমাজকে বার্তা দিতে প্রথমেই তিন তালাক বিল আনা হয়েছে। লোকসভা ভোটে মুসলিমদের একাংশের ভোট পেয়েছে বিজেপি। তাই উদারপন্থী সংখ্যালঘুদের মন জয়ের চেষ্টায় নেমেছে দল।
বিরোধীরা বক্তব্য পেশ করার জন্য স্পিকারের কাছে আর্জি জানান। এক-এক করে তাদের বলতে দেন স্পিকার ওম বিড়লা। কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুরের দাবি, ‘‘ওই আইন সকলের জন্য করা হোক। স্রেফ মুসলিমদের জন্য নয়।’’ তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে তিনি বলেন, ‘‘অন্য ধর্মের অনেক পুরুষ স্ত্রীকে পরিত্যাগ করে থাকেন। ওই পুরুষেরা কেন শাস্তি পাবেন না?’’ তারুর কারও নাম না নিলেও তাঁর কথা শেষ হতেই সরব হন বিজেপি সাংসদেরা। বিরোধীদের একাংশের যুক্তি, বহু হিন্দু পুরুষ একাধিক বিবাহ করেন। তাঁরা কেন শাস্তি পাবেন না? এমআইএম নেতা আসাউদ্দিন ওয়াইসির কথায়, ‘‘ওই আইন মুসলিম মহিলাদের আরও অসহায়তার দিকে ঠেলে দেবে।’’
নতুন স্পিকারের জমানায় এটাই ছিল সরকারের প্রথম বিল পেশ। বিল পেশে বিরোধীরা আপত্তি তুললে স্পিকার কড়া মনোভাব নেন। শুরু থেকেই গোলযোগ থামাতে বারবার নিজের আসন ছেড়ে উঠে পড়েন স্পিকার। অধীর চৌধুরী নিজের আসন থেকে উঠে ওয়াইসির সঙ্গে কথা বলতে গেলে আপত্তি তোলেন স্পিকার। বলেন, সভায় কথা বলা যাবে না। কথা বলতে গেলে বাইরে গিয়ে বলতে হবে। শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে। তাঁর এই কড়া মনোভাবে আরও উত্তাপ ছড়ায়। বিরোধীরা ভোটাভুটিতে অনড় থাকেন।
ভোটাভুটিতে দেখা যায় বিল পেশের পক্ষে ভোট পড়েছে ১৮৬টি, বিপক্ষে ৭৪। ভোট প্রসঙ্গে বিজেপির দাবি, বিল পেশের সময়ে ভোটাভুটি হতে পারে, তা আঁচ করা যায়নি। তা ছাড়া যোগ দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী-সহ অনেকেই ছিলেন দিল্লির বাইরে।
বিতর্কে তৃণমূল সাংসদেরা সরব হলেও ভোটাভুটিতে অংশ নেননি তাঁরা। সৌগত রায়ের যুক্তি, ‘‘অতীতেও বিলটি নিয়ে লোকসভার বিতর্কে দল অংশ নেয়নি। বিতর্কিত বিলটি সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কাছে পাঠানোর পক্ষে দল।’’
লোকসভায় নিশ্চিত হলেও রাজ্যসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় বিলটির ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তায় বিজেপি। ছ’টি করে আসন থাকা জেডিইউ ও টিআরএস বিলটির বিপক্ষে ভোট দিলে বিরোধী ভোটের সংখ্যা ১২০। দশ সাংসদের বিজেডি ঘোষিত ভাবে বিলটির বিপক্ষে। ধোঁয়াশা রয়েছে জগন্মোহনের অবস্থান ঘিরেও। তবে বিজেপি আশাবাদী, বিজেডি ও জেডিইউ ভোটাভুটিতে অনুপস্থিত থাকলেই এ যাত্রায় পাশ করানো যাবে বিলটি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy