ত্রিপুরার খোয়াই জেলা কোর্ট থেকে তৃণমূল যুব নেতানেত্রীদের নিয়ে বেরিয়ে আসছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার সন্ধ্যায়। নিজস্ব চিত্র
ত্রিপুরায় তৃণমূল কংগ্রেসের উপর ‘হামলা’ এবং সেখানকার সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে এ বার সংসদে সরব হবে দল। আজ সোমবার সংসদ চত্বরে গাঁধী মূর্তির সামনে মুখে কালো মাস্ক পরে ওই ঘটনার প্রতিবাদ করবেন তৃণমূলের সাংসদেরা। পরে সংসদের ভিতরেও এ নিয়ে কেন্দ্রের ব্যাখ্যা চাইবে তৃণমূলের সংসদীয় দল। তাদের অভিযোগ, ত্রিপুরায় বিজেপি সরকার যা করছে তাতে কেন্দ্রের মদত রয়েছে।
তৃণমূলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ত্রিপুরায় গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে। তৃণমূলের শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচিকে ভেস্তে দিতে হিংসার আশ্রয় নেওয়া হয়েছে। বিদ্বেষের মাধ্যমে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে। সংসদ অধিবেশন চলাকালীন আমরা চুপচাপ বসে থাকতে পারি না।” দলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, “পেগাসাস নিয়ে সংসদের ভিতরে প্রতিবাদ চলছে। ত্রিপুরায় তৃণমূল নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যা হয়েছে, তা নিয়েও সংসদ চত্বরেই প্রতিবাদ হবে।” সকাল সাড়ে দশটায় দুই কক্ষের তৃণমূল সাংসদেরা হাজির হবেন গাঁধী মূর্তির সামনে। দলীয় সূত্রের খবর, তৃণমূলে যোগ দেওয়া আইনজীবী বিশ্বজিৎ দেবকে ত্রিপুরায় যেতে বলা হয়েছে। বার্তা স্পষ্ট, রাজনৈতিক মোকাবিলার পাশাপাশি আইনগত দিকটিও খতিয়ে দেখছে দল।
ত্রিপুরার ঘটনা নিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব বিজেপিও। রবিবার রাতে টুইট করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের অভিযোগ, ‘ত্রিপুরার রাজনৈতিক স্বার্থে যারা সক্রিয়, উন্নয়নে তারা (তৃণমূল) ত্রিপুরার থেকে পিছিয়ে। রাজনৈতিক চক্রান্ত চলছে। কয়েকটি দল অশান্তি ছড়াতে চাইছে।’ এ রাজ্যের বিজেপি নেতারাও তৃণমূলের বিরুদ্ধে অশান্তি তৈরির চেষ্টার অভিযোগ তুলেছেন। বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের কটাক্ষ, “তৃণমূল মঙ্গল গ্রহে গিয়ে ধর্না দিলেও অসুবিধা নেই। ত্রিপুরা থেকে এত তাড়াতাড়ি বিজেপিকে উৎখাত করা যাবে না। কারণ বহু রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম পেরিয়ে বিজেপি সেখানে ক্ষমতায়। ওখানে তৃণমূল প্রাসঙ্গিক শক্তি নয়।”
শনিবার দলের নেতাকর্মীদের উপর ‘হামলা’র পরই বিষয়টি নিয়ে কঠোর মনোভাব নিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, ত্রিপুরায় বিজেপিকে ক্ষমতাচ্যুত করার লক্ষ্য থেকে তৃণমূল সরবে না। এ দিন সকালে আগরতলায় পৌঁছে গ্রেফতার হওয়া দলের নেতাকর্মীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। জামিনে মুক্ত দলের নেতাদের সঙ্গে নিয়ে ত্রিপুরা থেকে ফেরার আগে অভিষেকের হুঁশিয়ারি, “ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী যদি ভয় দেখিয়ে তৃণমূলকে দমিয়ে রাখতে পারবেন বলে ভেবে থাকেন, তা হলে মূর্খের স্বর্গে বাস করছেন। ১৭ মাস পরে আর তাঁর সরকার থাকবে না।”
রবিবার ত্রিপুরার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টিকে সর্বভারতীয় স্তরে বিজেপি-বিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত করতে দিল্লিতে কর্মসূচি নিয়েছে তৃণমূল। লোকসভায় দলের মুখ্যসচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ত্রিপুরায় আইনের শাসন নেই। এখন ক্ষমতা হারানোর ভয়ে বিজেপি সেখানে হিংসাত্মক হয়ে উঠেছে। কিন্তু তাতে লাভ হবে না। মানুষ সেখানে সরকার পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন। তৃণমূল মানুষের সঙ্গে থাকবে।” রাজ্যসভায় তৃণমূলের মুখ্যসচেতক সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, “বিজেপি যেখানে ক্ষমতায় আছে সেখানেই ফ্যাসিস্ত শাসন চালায়। কিন্তু আজ আগরতলায় পৌঁছে অভিষেক বুঝিয়ে দিয়েছেন, তৃণমূল ত্রিপুরার লড়াইকে কত দূর নিয়ে যেতে পারে। সংসদেও আমাদের এই মনোভাবই থাকবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy