শুক্রবার মোরবীর জেলা আদালত জামিন দিয়েছে তৃণমূলের মুখপাত্র সাকেতকে। ফাইল চিত্র।
জামিনে মুক্ত হয়েই একেবারে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বকে তাক করে আক্রমণ শানালেন তৃণমূল মুখপাত্র সাকেত গোখলে। শনিবার সকালে পর পর আটটি টুইট করেন তিনি। তাঁর প্রতিটির নিশানায় ছিলেন বিজেপি নেতৃত্ব থেকে শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ। নিজের গ্রেফতারিকে ‘বিজেপির প্রতিহিংসার রাজনীতি’ আখ্যা দিয়ে সাকেত লিখেছেন, ‘‘বিজেপির উদ্দেশ্য ছিল আমাকে টার্গেট করা, আমাকে জেলে ফেলা এবং আমাকে সেখানে রাখা। উত্তরপ্রদেশ ও গুজরাতে এটিই মোদি ও শাহের পাঠ্যপুস্তক।’’
নিজের গ্রেফতারি প্রসঙ্গে সাকেত লিখেছেন, ‘‘বিজেপির নির্দেশে আমাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, জামিন পেয়েছি, পুনরায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল এবং পুনরায় জামিন পেয়েছি, সবই হয়েছে চার দিনের ব্যবধানে। আমার স্বাধীনতা বজায় রাখার জন্য আমি বিচারবিভাগের কাছে কৃতজ্ঞ।’’ তৃণমূল মুখপাত্র আরও লিখেছেন, ‘‘আমদাবাদে একটি এফআইআর দায়ের করার পরে আমাকে ৫ দিন কোনও নোটিস দেওয়া হয়নি। পুলিশ আমাকে বলেছে যে আইবি আমাকে ট্র্যাক করছে এবং সিআইএসএফকে বলেছে জয়পুর বিমানবন্দরে আমাকে আটকাতে।’’
টুইটে সাকেত দাবি করেছেন, ‘‘আমদাবাদ পুলিশ যারা ভিন্ন মামলার জন্য দিল্লিতে ছিল তাদের আমাকে গ্রেপ্তার করতে জয়পুরে ছুটে যেতে বলা হয়েছিল।’’ তিনি আরও লিখেছেন, ‘‘অন্য কারও করা একটি টুইট শেয়ার করার জন্য একটি তুচ্ছ মামলা দায়ের করা হয়েছে। মজার ব্যাপার হল ওই ব্যক্তি কে, পুলিশের কাছে কোনও প্রমাণ নেই।’’
সাকেত লিখেছেন, ‘‘হাস্যকর ভাবে মোরবী ব্রিজ ভেঙে পড়ার বিষয়ে একটি টুইট করার জন্য আমাকে ৩ দিনের মধ্যে দু’বার গ্রেফতার করা হয়েছিল। কিন্তু আজ অবধি ওরেভা কোম্পানির মালিক, যাঁরা ত্রুটিপূর্ণ ব্রিজটি মেরামত করেছিলেন তাদের এফআইআর-এ নামও দেওয়া হয়নি, গ্রেফতার তো দূরের কথা।’’ তাঁকে গ্রেফতারের পর যে ভাবে তৃণমূল নেতৃত্ব উদ্যোগী হয়েছেন, তাতে নিজের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন তৃণমূলের এই মুখপাত্র। মোরাবীর ঘটনার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীকে খোঁচা দিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘‘টুইট করায় আহত হয়েছেন মোদী। ১৩৫ জন নিরীহ মানুষের মৃত্যুতে নয়।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার মোরবীর জেলা আদালত জামিন দিয়েছে তৃণমূলের মুখপাত্র সাকেতকে। গুজরাতের মোরবীতে সেতু বিপর্যয় নিয়ে একটি টুইট করার অভিযোগে গত মঙ্গলবার ভোররাতে রাজস্থানের জয়পুর বিমানবন্দর থেকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় মুখপাত্র সাকেতকে গ্রেফতার করেছিল গুজরাত পুলিশ। এর পর আমদাবাদের একটি আদালতে হাজির করানো হলে, শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) পর্যন্ত তাঁকে পুলিশি হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক। এর পর শুক্রবার সাকেতের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন। কিন্তু জামিনে মুক্তি পাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই গুজরাত পুলিশ তাঁকে ফের গ্রেফতার করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করেন তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন।
শুক্রবারই গুজরাতে গিয়ে পৌঁছেয় তৃণমূলের ৫ সদস্যের প্রতিনিধিদল। এই দলে ছিলেন ৫ সাংসদ শান্তনু সেন, দোলা সেন, খলিলুর রহমান, সুনীল মণ্ডল এবং অসিত মাল। ঘটনাচক্রে শুক্রবার বিকেলেই জামিনে মুক্ত হলেন সাকেত। যে টুইটের জন্য সাকেতকে গ্রেফতার করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব, সেটি গত ১ ডিসেম্বর নিজের টুইটার হ্যান্ডল থেকে পোস্ট করেছিলেন সাকেত। তিনি লিখেছিলেন, ‘‘গুজরাতে মোরবী সেতু ভাঙার পর সেখানে মোদীর পরিদর্শনের জন্য ৩০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। যার মধ্যে সাড়ে ৫ কোটি খরচ হয়েছে শুধু মাত্র মোদীকে অভ্যর্থনা জানানোর অনুষ্ঠান এবং ছবি তোলার জন্য। যেখানে মোরবী সেতু ভেঙে মৃত ১৩৫ জনের পরিবারকে মোট ৫ কোটি টাকার এককালীন ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে।’’ সাকেত ওই টুইটে লিখেছিলেন, ‘‘শুধু মোদীকে স্বাগত জানানোর অনুষ্ঠানের দাম ১৩৫ জনের জীবনের থেকে বেশি!’’ সম্প্রতি ওই টুইটটিকে ‘ভুয়ো’ বলে দাবি করে একটি পাল্টা টুইট করেছিল পিআইবি ফ্যাক্ট চেক নামে টুইটারের একটি ব্লু টিক দেওয়া ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্ট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy