তৃণমূলের দাবি, মোট ৬৪ পাতার ওই ‘অঙ্গীকারপত্র’ ছুঁয়ে গিয়েছে মেঘালয়ের প্রতিটি বিষয়কে। ছবি: তৃণমূলের ফেসবুক থেকে।
মেঘালয়ে ভোটের ইস্তাহার প্রকাশ করল তৃণমূল। মঙ্গলবার শিলংয়ে গিয়ে ওই ইস্তাহার প্রকাশ করেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। গত সপ্তাহে মেঘালয় সফরে গিয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই রাজ্যে ক্ষমতায় এলে তৃণমূল কী ভাবে সরকার পরিচালনা করবে, তার আভাস দিয়ে এসেছিলেন তিনি। প্রকাশ্যেই বলেছিলেন সে সব কথা। মঙ্গলবার অভিষেকের হাতে যে ইস্তাহার প্রকাশিত হল, সেখানে মমতার বলা সব কিছুই রয়েছে বলে তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে।
আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি মেঘালয়ে ভোট। ইতিমধ্যে মেঘালয়ের ৬০টি আসনের মধ্যে ৫২টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। অভিষেকের সঙ্গে মঙ্গলবার ইস্তাহার প্রকাশের কর্মসূচিতে ছিলেন বিরোধী দলনেতা মুকুল সাংমা, মেঘালয় তৃণমূলের সভাপতি চালর্স, মেঘালয় তৃণমূলের সহ-সভাপতি জর্জ লিংডো, চালর্স লিংডো, তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন ও মেঘালয় তৃণমূলের পর্যবেক্ষক তথা মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া।
ইস্তাহার প্রকাশের পর অভিষেক জানান, মেঘালয়ে ক্ষমতায় এলে পশ্চিমবঙ্গের ধাঁচে সে রাজ্যের মহিলাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১০০০ টাকা করে দেবে তৃণমূল সরকার। প্রত্যেক মহিলা বছরে ১২ হাজার টাকা করে পাবেন। মেঘালয়ের ইস্তেহারে মূলত ১০টি বিষয়কে সামনে রেখে এগিয়েছে তৃণমূল। যদিও অভিষেকের দাবি, এই ১০টি বিষয় কোনও প্রতিশ্রুতি নয়, অঙ্গীকার। তৃণমূল ক্ষমতায় এলে এই ১০ অঙ্গীকারই পূরণ করা হবে। খাসো ও গারো ভাষাকে স্বীকৃতি দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেছেন অভিষেক। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের সরকার ক্ষমতায় এলে মেঘালয়ের মানুষকে উপেক্ষা করে কোনও সিদ্ধান্ত নেবে না।’’
মেঘালয়ে তৃণমূল-বিরোধী নেতৃত্ব মমতা-অভিষেককে বহিরাগত বলে আক্রমণ শানাচ্ছেন। বিজেপিও প্রকাশ্যে তৃণমূলকে বহিরাগত বলেই দাবি করছে। এর প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার অভিযেক বলেন, ‘‘আমাদের বহিরাগত বলা হচ্ছে। কিন্তু মেঘালয়ে তৃণমূলই একমাত্র দল, যারা মেঘালয়ের জন্য অঙ্গীকার করেছে। আপনাদের কী মনে হয়, মুকুল সাংমা বা চার্লস পিনগ্রোপ বহিরাগত! আমি বিজেপির কাছে জানতে চাই, তাদের কি সৎ সাহস আছে? তাঁদের কোনও জাতীয় নেতা এসে মেঘালয়ে বলতে পারবেন যে, দিল্লি বা গুয়াহাটি থেকে মেঘালয় শাসন করা হবে না। গারো এবং খাসির মানুষই এই রাজ্য পরিচালনা করবেন! বলতে পারবে না।’’ এখানে না থেমে তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি বলে যাচ্ছি, তৃণমূল ক্ষমতায় এলে এখানে সরকার চালাবে মেঘালয়ের মানুষ, আমরা না। এখানে উন্নয়নের অনেক খামতি রয়েছে। তৃণমূল সেই বিষয়গুলি অল্প সময়ের মধ্যে কর্মী-সমর্থকদের চোখ দিয়ে দেখেছে। তাঁদের অভিজ্ঞতা নিয়েই ১০ অঙ্গীকার তৈরি হয়েছে।’’
তৃণমূলের দাবি, মোট ৬৪ পাতার ওই ‘অঙ্গীকারপত্র’ ছুঁয়ে গিয়েছে মেঘালয়ের প্রতিটি বিষয়কে। সেখানে যেমন দেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন (জিডিপি)-কে দু’অঙ্কের সংখ্যায় নিয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে, তেমনই নতুন কর্মসংস্থান করে মেঘালয়ের জন্য উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়ার কথাও রাখা হয়েছে। রয়েছে দ্বাদশ শ্রেণি থেকে কলেজ-ছাত্রছাত্রীদের জন্য ১০ লক্ষ ল্যাপটপ দেওয়ার কথাও। নতুন করে ‘মেঘালয় মিনারেল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন’ গড়ে নয়া সম্ভাবনা তৈরি করার পাশাপাশি, প্রত্যেক বাড়িতে পানীয় জল ও বিদ্যুৎ সংযোগ পৌঁছনোর অঙ্গীকারও রয়েছে। মেঘালয়ের পর্যটন ক্ষেত্রকে নতুন করে ঢেলে সাজানো হবে বলেও জানিয়েছেন অভিষেক।
এর আগে গোয়াতেও ভোটে লড়েছিল তৃণমূল। সেখানেও এমন ইস্তাহার প্রকাশ করেছিল তারা। কিন্তু তৃণমূলের কৌশল ওই রাজ্যে কাজে আসেনি। কিন্তু দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের এই রাজ্যে বাংলায় সফল হওয়ার প্রকল্পগুলির ‘প্রতিশ্রুতি’ কাজে দেবে বলেই দাবি করেছেন অভিষেক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy