প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ফাইল ছবি
বিচারবিভাগ, সংসদ-বিধানসভা ও প্রশাসনের মধ্যে বিবাদ বা প্রতিযোগিতার কোনও জায়গা সংবিধানের আত্মায় নেই বলে সওয়াল করতেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর যুক্তি, সরকার হোক বা সংসদ বা আদালত, এই তিনই সংবিধান রূপী এক মায়ের তিন সন্তান। তিন জনেরই দায়িত্ব ভারতমাতার সেবা করা।
আজ রাজ্যের আইনমন্ত্রী ও আইনসচিবদের জাতীয় সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর এ হেন সওয়ালের পরে বিরোধীদের প্রশ্ন, প্রধানমন্ত্রী কি বিচার বিভাগ, সরকার ও সংসদের মধ্যে ক্ষমতার যে পৃথকীকরণ সংবিধানে করা হয়েছে, তা মানতে চাইছেন না? এই ফারাক তুলে দিয়ে স্বৈরতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা তৈরি করতে চাইছেন? মোদী জমানায় এমনিতেই বিরোধীরা বারবার বিচারব্যবস্থায় ছড়ি ঘোরানোর অভিযোগ তুলেছেন।
বিচারবিভাগে ছড়ি ঘোরানোর জন্য সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের মধ্যে থেকেই অভিযোগ উঠেছিল, সরকারের ইঙ্গিতে নির্দিষ্ট বিচারপতিদের কাছে সরকারের পক্ষে স্পর্শকাতর মামলা যাচ্ছে। রাম মন্দিরের পক্ষে রায় দিয়ে প্রধান বিচারপতি হিসেবে অবসরের পরেই রঞ্জন গগৈকে রাজ্যসভায় মনোনীত করাও বিচার বিভাগে প্রভাব খাটানোরই নমুনা।
প্রধানমন্ত্রী আজ গুজরাতে আইনমন্ত্রীদের সম্মেলনে দিল্লি থেকে ভিডিয়ো-কনফারেন্সে যোগ দেন। সেখানে তিনি আগের মতোই বিচারে দেরি হওয়ার চ্যালেঞ্জের কথা বলেছেন। পুরনো, অপ্রয়োজনীয় আইন তুলে দিয়ে নতুন আইন তৈরির সময় সহজ ভাষায়, মাতৃভাষায় আইন তৈরির কথা বলেছেন। বিচারাধীন বন্দিদের বিষয়ে রাজ্যগুলিকে পদক্ষেপ করতে বলেছেন।
সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমাদের দেশে বিচারব্যবস্থার জন্য সংবিধানই সর্বশ্রেষ্ঠ। এই সংবিধানের কোলেই আদালত, সংসদ ও সরকারের জন্ম। কাজ আলাদা হলেও সংবিধানের ভাবনা দেখা গেলে, বাদানুবাদ, একে অন্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতার কোনও সুযোগ নেই। এক মায়ের সন্তানের মতো তিন সংস্থাই ভারত মাতার সেবা করে।’’
তৃণমূলের মুখপাত্র তথা প্রবীণ আইনজীবী বিশ্বজিৎ দেব বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী বুঝিয়ে দিলেন, তিনি গণতন্ত্রের তিন স্তম্ভকে এক করে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থা কায়েম করতে চাইছেন। সংবিধানে গণতন্ত্রের তিন স্তম্ভকে আলাদা রাখার কথাই বলা হয়েছে।’’
বিরোধীদের বক্তব্য, গায়ের জোরে আলোচনা ছাড়াই, সংসদীয় কমিটিকে এড়িয়ে অধিকাংশ বিল পাশ করিয়ে মোদী সরকার এমনিতেই সংসদকে সরকারের সম্প্রসারিত অঙ্গ করে ফেলতে চাইছে। আদালত বা বিচারব্যবস্থাকেও মোদী সরকার নিজের সম্প্রসারিত অঙ্গে পরিণত করে ফেলতে চায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy