রাজশেখর পাতিল। গ্রামে তিনি পরিচিত বাঁশ চাষি হিসাবে। এক সময়ে দেনায় ডুবে থাকা রাজশেখর স্রেফ বাঁশ চাষ করে আজ কোটিপতি।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৯:৩১
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৬
রাজশেখর পাতিল। গ্রামে তিনি পরিচিত বাঁশ চাষি হিসাবে। এক সময়ে দেনায় ডুবে থাকা রাজশেখর স্রেফ বাঁশ চাষ করে আজ কোটিপতি।
০২১৬
বছরে তিনি অন্তত ১ কোটি টাকা আয় করেন বাঁশ চাষ থেকে। তার উপর চাষের জমিতে ফল, সবজির মতো অন্যান্য ফসল তো রয়েছেই।
০৩১৬
‘রাজশেখর পাতিল বাম্বু’ নামে তাঁর একটি ইউটিউব চ্যানেলও রয়েছে। তাঁর গ্রাহক সংখ্যা ৮ হাজারেরও বেশি। কী ভাবে বিভিন্ন প্রজাতির বাঁশ চাষ করে সাফল্য পাওয়া যাবে তা শেখান তিনি।
০৪১৬
আজ গ্রামের সকলেই তাঁর প্রশংসায় পঞ্চমুখ। কিন্তু একটা সময় এমন ছিল যখন তাঁকে নিয়ে সবাই ঠাট্টা করতেন। ‘ব্যর্থ’ হিসাবে দাগ পড়ে গিয়েছিল তাঁর নামের সামনে।
০৫১৬
রাজশেখরের জন্ম মহারাষ্ট্রের খরা কবলিত অঞ্চল নিপানি গ্রামে। নিপানির অর্থই হল জলহীন। তাঁদের গ্রামে প্রবল জলসঙ্কট ছিল। তাঁর বাবাও একজন চাষি ছিলেন।
০৬১৬
কিন্তু জলের সঙ্কট থাকায় চাষাবাদ ছিল ব্যয়বহুল। এক সময়ে ১০ লাখ টাকা দেনা করে ফেলেছিলেন তাঁর বাবা। কিন্তু অসুস্থ হয়ে পড়ায় সেই দেনা শোধ করতে পারেননি তিনি।
০৭১৬
রাজশেখর তখন পড়াশোনা করছেন। দেনার ভার মাথায় নিয়েই তিনি পড়াশোনা শেষ করেন। তারপর স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় যোগ দেন। সেখান থেকে প্রতি মাসে ২ হাজার টাকা বেতন পেতেন।
০৮১৬
পরে তাঁর বেতন বেড়ে হয় ৬ হাজার টাকা। কিন্তু দেনা শোধ করার জন্য এই টাকা যথেষ্ট ছিল না। তিনি ২৭ বছরের হলে পরিবারের হাল ধরার জন্য বাবা-মা তাঁকে গ্রামে ডেকে পাঠান।
০৯১৬
প্রথমে তিনি আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন উচ্চপদস্থ সরকারি অফিসার হওয়ার। কিন্তু সাফল্য আসেনি। এরপর তাঁদের ১৬ একর জমিতে ফলের চাষ শুরু করেন।
১০১৬
ফল চাষ ছিল লাভজনক। আম, জাম, সফেদার চাষ করতেন তিনি। তা থেকে দৈনিক ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা আয় হত।
১১১৬
তাঁর জীবনের আমূল বদল আসে ২০০২ সালে। তাঁর গ্রামেরই এক চাষি বাঁশের চারা পুঁতেছিলেন। কিন্তু সেই ব্যবসায় খরিদ্দার না পাওয়ায় অনেক ক্ষতি হয়ে যায় তাঁর। তিনি সমস্ত বাঁশ তুলে ফেলে দিচ্ছিলেন।
১২১৬
রাজশেখর তাঁর কাছ থেকে সেই সমস্ত বাঁশ গাছ নিয়ে নিজের জমির চারপাশে পুঁতে দেন। উদ্দেশ্য ছিল জমির বেড়া হিসাবে সেগুলিকে কাজে লাগানো।
১৩১৬
২০০৫ সাল থেকে গ্রাহক নিজে থেকেই খোঁজ নিয়ে বাঁশ কেনার জন্য তাঁর কাছে আসতে শুরু করলেন। বছরে ২০ লাখ টাকা উপার্জন করতে শুরু করলেন তিনি।
১৪১৬
রাজশেখর সারা দেশ ঘুরে বাঁশের বিভিন্ন প্রজাতির চারা নিয়ে এসে জমিতে পুঁততে শুরু করে দেন তারপর থেকেই। কারণ তিনি বুঝে গিয়েছিলেন এই ব্যবসা কতটা লাভদায়ক।
১৫১৬
বাঁশ গাছের খুব একটা পরিচর্যাও করতে হয় না। চাষে জলও খুব কম লাগে। জলসঙ্কটের গ্রামে তাই বাঁশ চাষই হয়ে ওঠে তাঁর কাছে আদর্শ।
১৬১৬
গলা পর্যন্ত দেনায় ডুবে থাকা রাজশেখর আজ কোটিপতি। প্রতি বছরে বাঁশ চাষ থেকেই অন্তত ১ কোটি টাকা আয় করেন তিনি। তাঁর নাম লোকের মুখে মুখে ফেরে। গ্রামবাসীরা এখন ‘ব্যর্থ’ রাজশেখরের কাছে বাঁশ চাষের পাঠ নিতে আসেন।