Advertisement
১৩ নভেম্বর ২০২৪
Ayodhya Ram Temple

রাম রাখি না কুল, দ্বিধায় বিরোধীরা

দলিত নেত্রী মায়াবতী গত কালই স্পষ্ট করে দিয়েছেন, তিনি বিরোধীদের হাত ধরবেন না, একলা লড়বেন বিজেপি-র বিরুদ্ধে।

ayodhya ram temple

অযোধ্যার রামমন্দির। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২৪ ০৭:৩২
Share: Save:

উত্তর ভারতে হিন্দুভোট হারানোর ঝুঁকি নিয়েও রামমন্দিরের অনুষ্ঠানকে প্রত্যাখ্যান করেছেন কংগ্রেস হাইকমান্ড। কিন্তু অরবিন্দ কেজরীওয়ালের আপ এবং উত্তরপ্রদেশ কংগ্রেসের নেতারা-সহ উত্তর ভারতের অন্যান্য বিরোধী দল সকলেই অত্যন্ত সতর্ক। রাম নিয়ে নরম হিন্দুত্বের পথে হাঁটতে দেখা যাচ্ছে বিএসপি-র মায়াবতী, এসপি-র অখিলেশ, আপ-এর কেজরীওয়াল, উত্তরপ্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অজয় রাই, সাংসদ দীপেন্দ্র হুডাদের সকলেকেই। হিন্দুত্বের ঝড় তাঁদের উড়িয়ে দিতে পারে, এমন আশঙ্কা বিরোধী শিবিরে রয়েছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

দলিত নেত্রী মায়াবতী গত কালই স্পষ্ট করে দিয়েছেন, তিনি বিরোধীদের হাত ধরবেন না, একলা লড়বেন বিজেপি-র বিরুদ্ধে। এসপি এবং কংগ্রেস শিবিরের পক্ষ থেকে অভিযোগ উঠেছে, মায়াবতী আসলে বিজেপির হাতই শক্ত করছেন বিরোধী ভোট কেটে। রামমন্দির নিয়েও তাঁর রাজনৈতিক দোলাচল রয়েছে। কিন্তু মন্দির প্রতিষ্ঠাকেও স্বাগত জানাতে ভুলছেন না তিনি। মায়াবতীর বক্তব্য, ২২ তারিখ তিনি রামমন্দিরের উদ্বোধনে থাকতে পারবেন কি না, তা এখনও ঠিক নেই। কারণ তাঁর ‘দলীয় কর্মসূচি’ রয়েছে। কিন্তু সেই সঙ্গে এ কথাও বলছেন, ২২ জানুয়ারির অনুষ্ঠান নিয়ে তাঁর ‘কোনও সমস্যাই নেই’ বরং তিনি তাকে ‘স্বাগতই’ জানাচ্ছেন। বিএসপি ধর্মনিরপেক্ষ দল— মন্দির এবং মসজিদ কোনও কিছু নিয়েই তাদের সমস্যা নেই, এই বার্তাই দিয়েছেন মায়াবতী।

এর ঠিক দু'দিন আগেই এসপি নেতা অখিলেশ সিংহ যাদব মন্দিরের ট্রাস্ট-এর জেনারেল সেক্রেটারিকে একটি চিঠি লিখে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তাঁকে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য। সেই সঙ্গে বলেছেন, ২২ জানুয়ারির পর তিনি অবশ্যই মন্দির দর্শনে যাবেন তাঁর পুরো পরিবার নিয়ে। এই অনুষ্ঠানের সাফল্য প্রার্থনাও করেছেন ‘মৌলা মুলায়ম’ নামে খ্যাত মুলায়ম সিংহ যাদবের পুত্র। সূত্রের মতে, তিনি ওই অনুষ্ঠানে যোগ না দিয়ে এক দিকে মুসলমান ভোটব্যাঙ্ককে বার্তা দিতে চাইলেন। অন্য দিকে এই চিঠিটি লিখলেন, যাতে হিন্দু ভোট ব্যাঙ্ক রুষ্ট না হয়, সে দিকে লক্ষ রেখে।

অন্য দিকে রাম যে কংগ্রেসেরও আরাধ্য, সেই বার্তা দিতেই উত্তরপ্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অজয় রাই, সাংসদ দীপেন্দ্র হুডা, অখিলেশ প্রতাপ সিংহেরা সরযূ নদীতে স্নান করে রামলালা দর্শন করে পুজো দিয়েছেন। এই পুজা ‘লোকদেখানো’ ও ‘রাজনৈতিক’ বলে আক্রমণ শানিয়েছে বিজেপি। কিন্তু উত্তরপ্রদেশের কংগ্রেস নেতা অবিনাশ পাণ্ডের বক্তব্য, ‘‘আমাদের নেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে খো‌লাখুলি নির্দেশ দিয়েছেন, যাঁরা রামমন্দিরে বিশ্বাসী, তাঁরা যেতে পারেন। কাউকে জোর করাও হচ্ছে না, কাউকে নিষেধ করাও হচ্ছে না।’’

আপ-ও বিজেপির এই হিন্দুত্বের জোয়ার মোকাবিলার জন্য আসরে নেমেছে। আম আদমি পার্টি প্রতি মাসের প্রথম মঙ্গলবার দিল্লির সমস্ত বিধানসভা কেন্দ্রে রামায়ণের সুন্দরকাণ্ড পাঠের (হনুমান পর্ব) আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আজ রোহিণী এলাকার একটি মন্দিরে গিয়ে কেজরীওয়াল তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে ওই পাঠে অংশ নেন। তাঁর কথায়, ‘‘এর আগেও সমস্ত আপ নেতা এবং কর্মীরা সুন্দর কাণ্ড পাঠের আয়োজন করতেন। এখন স্থির হয়েছে প্রতি মাসে অনেক সংগঠিতভাবে তার আয়োজন করা হবে। সাধারণ মানুষকেও আমরা এই পাঠে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘আপাতত স্থির হয়েছে দিল্লির ২৬০০টি জায়গায় সুন্দরকাণ্ড পাঠ এবং হনুমান চালিসার আয়োজন হবে। রামের নাম এবং হনুমানের প্রতি কেউ যেন কোনও প্রশ্ন তুলতে না পারে। রামমন্দির নিয়ে আমাদের কোনও প্রশ্ন নেই। রামমন্দির নির্মাণ আমাদের কাছে আনন্দ এবং গর্বের বিষয়।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Ayodhya Ram Temple Ayodhya Ram Mandir BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE