Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Allahabad

একরত্তির যন্ত্রণাদায়ক মৃত্যুর তদন্তে জাতীয় শিশু কমিশন

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
লখনউ শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০২১ ০৭:৪০
Share: Save:

ইলাহাবাদের একটি বেসরকারি হাসপাতালের বাইরে তিন বছরের একরত্তি শিশুকন্যার যন্ত্রণাদায়ক মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে এ বারে তদন্তে নামল জাতীয় শিশু অধিকার রক্ষা কমিশন। শিশুটির বাবা-মায়ের অভিযোগ, পরিবার টাকা দিতে না পারায় একরত্তি শিশুটির অপারেশনের ক্ষত খোলা রেখেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। তাকে কেউ দেখভালও করেনি। বিষয়টি নিয়ে একাধিক ভিডিয়ো সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পরে নড়ে বসেছে উত্তরপ্রদেশ সরকারও। তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে তারাও। বেসরকারি হাসপাতালটির বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করার জন্য জেলা কালেক্টরকে নির্দেশ দিয়েছে শিশু কমিশন।

গত ৫ মার্চ এক সাংবাদিক টুইট করে জানান, ইলাহাবাদের ইউনাইটেড মেডসিটি হাসপাতালে শিশুটির অপারেশন হয়। ওই সাংবাদিকের অভিযোগ, হাসপাতাল অপারেশনের জন্য ৫ লক্ষ টাকা দাবি করেছিল। অতি দরিদ্র পরিবারটি নিজেদের চাযের জমি বিক্রি করে প্রায় ২ লক্ষ টাকা তাদের হাতে তুলে দেয়। এর পরে অপারেশনের পরে শিশুটির ক্ষতস্থান সেলাই না করেই তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। জাতীয় শিশু অধিকার রক্ষা কমিশন তাদের অভিযোগেও এই কথা বলেছে। হাসপাতালের অমানবিক আচরণের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ভারতীয় দণ্ডবিধির সংশ্লিষ্ট ধারায় ব্যবস্থার আর্জি নিতে বলেছে কমিশন। শিশুটির পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতেও বলেছে তারা।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সমর বাহাদুর সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, শিশুটি ১৬ ফেব্রুয়ারি বেসরকারি হাসপাতালটিতে ভর্তি হয়। সেখানে তার অপারেশনের পরে তাকে এসআরএম হাসপাতালে রেফার করা হয়। কিন্তু তার বাবা-মা তাকে শিশু হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেও তার চিকিৎসা হয়। তার পরে শিশুটিকে ফের বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সে মারা যায়। আমরা শিশুটির ময়নাতদন্ত করেছি।’’

যন্ত্রণায় ছটপট করতে থাকা তিন বছরের একরত্তি শিশুটি ও তার বাবা-মায়ের ভিডিয়ো সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, শিশুটির নাকে একটি নল গোঁজা রয়েছে। তার বাবা-মা ক্যামেরার সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। একটি ভিডিয়ো ক্লিপে দেখা গিয়েছে শিশুটির বাবা-মা বলছেন, ‘‘সব টাকা নেওয়ার পরে ডাক্তার বলছেন, এখন আমার কিছু করার নেই! উনি ৫ লাখ টাকা চেয়েছিলেন। উনি যা চেয়েছেন, আমরা দিয়েছি। উনি তিন বার রক্ত চেয়েছিলেন, আমরা সেটাও দিয়েছি।’’ তার পেটে দু’বার অপারেশনের পরেও সেই ক্ষত সেলাই না করেই তাকে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ বাবা-মায়ের। আর একটি ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, শিশুটির ক্ষতের ঢাকনা বাবা সরিয়ে দিয়েছেন যাতে ছবি তোলা যায়। ক্ষতে তখন মাছি ভনভন করছে। তৃতীয় একটি ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, মৃত শিশুটির দেহ আঁকড়ে তার বাবা-মায়ের আকুল কান্নার ছবি। আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া পরিবারটি কৌশাম্বির বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে।

ইউনাইটেড মেডসিটি হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ অবশ্য শিশুটির বাবা-মায়ের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের বক্তব্য, মৃত্যুর আগের তিন দিন শিশুটি তাদের হাসপাতালে ভর্তি ছিল না। মেডিক্যাল ডিরেক্টর প্রমোদ কুমারের বক্তব্য, সরকারি স্পেশালিটি হাসপাতালে পাঠানোর আগে শিশুটি ১৫ দিন তাঁদের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। এমনকি তার চিকিৎসার বিল ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা হলেও তার বাবা-মায়ের কাছ থেকে মাত্র ৬ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছিল বলেও দাবি ওই বেসরকারি হাসপাতালের কর্তার।

অন্য বিষয়গুলি:

Child death Allahabad
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy