Tamil Nadu school dropout K Elambahavath becomes IAS officer after 19 years of struggle dgtl
K Elambahavath
টাকার অভাবে মাঝপথেই থেমেছিল স্কুলের পাঠ, ১৯ বছরের লড়াইয়ে আইএএস হলেন ইনি
কলেজে পা রাখতে পারবেন, এমনটা স্বপ্নেও ভাবেননি তামিলনাড়ুর কে এলামভবত। কিন্তু দীর্ঘ ১৯ বছরের চেষ্টায় আইএএস অফিসার হয়ে অসাধ্যসাধন করে দেখালেন তিনি।
সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০১৯ ১০:১৭
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১২
দ্বাদশ শ্রেণিতেই স্কুলের পাঠ চুকেছিল। তাই কলেজে পা রাখতে পারবেন, এমনটা স্বপ্নেও ভাবেননি তামিলনাড়ুর কে এলামভবত। কিন্তু দীর্ঘ ১৯ বছরের চেষ্টায় আইএএস অফিসার হয়ে অসাধ্যসাধন করে দেখালেন তিনি। অনুপ্রেরণা জোগালেন দেশের লক্ষ লক্ষ যুবককে।
০২১২
১৯৮২ সালে তামিলনাড়ুর তাঞ্জাভুর জেলার ছোট্ট একটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন কে এলামভবত। তাঁর বাবা ছিলেন গ্রামের প্রশাসনিক প্রধান। চাষবাস করতেন মা। সমাজসেবামূলক কাজেও যুক্ত ছিলেন তিনি। আর তাতে খরচ হত দেদার।
০৩১২
আর পাঁচটা শিশুর মতোই স্বাভাবিক ভাবে বেড়ে উঠছিলেন এলামভবত। তাঁদের গ্রামে তাঁর বাবাই ছিলেন প্রথম স্নাতক। তাই পড়াশোনার পরিবেশ ছিল বাড়িতে। কিন্তু ১৯৯৭ সালে পরিস্থিতি অন্য দিকে মোড় নেয়।
০৪১২
এলাবভবত দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ার সময় আচকাই মারা যান তাঁর বাবা। তাতেই অন্ধকার নেমে আসে গোটা পরিবারে। সমাজসেবায় প্রচুর ব্যয়ের ফলে সঞ্চয় সে ভাবে কোনও দিন হয়নি। ফলে টাকার অভাবে স্কুলের পাঠ চুকিয়ে চাষবাসে মাকে সাহায্য করতে শুরু করেন তিনি।
০৫১২
কিন্তু সামান্য আয়ে সংসার চালানো সম্ভব নয় বুঝে গিয়েছিলেন তিনি। সরকারি চাকুরে কেউ মারা গেলে, সরকারি প্রকল্পের আওতায় তাঁর পরিবারের কেউ একজন চাকরি পান। সেই মতো চাকরি পেতে আবেদন করেন এলামভবত। তবে যেহেতু স্নাতক হননি, তাই নিচুতলার কেরানি হতে চেয়ে আবেদন করেন।
০৬১২
ওই চাকরি পেতে গেলে সব মিলিয়ে প্রায় ২০ রকমের নথিপত্র জমা দিতে হয় জেলাশাসকের অফিসে। কষ্ট করে সব জোগাড়ও করে ফেলেন এলামভবত। তা সত্ত্বেও চাকরি পাননি তিনি।
০৭১২
চাকরি না পেয়ে আরও কয়েকজনের সঙ্গে মিলে জেলাশাসক, রাজস্ব সচিব, পুলিশ কমিশনার, এমনকি রাজ্যের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দরবার করেন তাঁরা। কিন্তু তাতেও লাভ হয়নি। তখনই মনস্থির করে ফেলেন তিনি, ওই জেলাশাসকের অফিসে একদিন ফিরে আসবেন। তবে সম্পূর্ণ অন্য রূপে।
০৮১২
শুরু থেকেই আইএএস অফিসারের পদটিকে সম্মান করতেন তিনি। পদ্ধতিগত বদল আনতে গেলে সরকারের অংশ হতে হয়, তাই আইএএস হওয়ার প্রতিজ্ঞা নেন এলামভবত। দূরশিক্ষার মাধ্যমে ইতিহাস নিয়ে মাদ্রাজ ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হন। প্রাইভেট টিউটর রাখার সামর্থ্য ছিল না। বাড়িতে নিজেই পড়তেন তিনি।
০৯১২
একই ভাবে ইউপিএসসি পরীভার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। কোনওরকম প্রশিক্ষণ ছাড়া, শুধুমাত্র স্থানীয় লাইব্রেরির বইয়ের ভরসায় আদা জল খেয়ে লেগে পড়েন তিনি। বিষয়টি নজরে পড়তে কিছু মানুষ তাঁকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন। তার পরই প্রশিক্ষণ নেওয়ার সুযোগ পান।
১০১২
ইউপিএসসি পরীক্ষায় তিন-তিনবার ইন্টারভিউ পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছলেও, সফল হতে পারেননি তিনি। তবে তামিলনাড়ু পাবলিক সার্ভিস কমিশনের একাধিক পরীক্ষায় কৃতকার্য হন। কিন্তু সরকারি চাকরি পাওয়ার পরও আইএএস হওয়ার স্বপ্ন তাড়িয়ে বেড়াচ্ছিল তাঁকে। তাই কর্মরত অবস্থাতেই নতুন করে প্রস্তুতি শুরু করেন।
১১১২
পাঁচবার মেইন এবং তিনবার ইন্টারভিউ রাউন্ড পর্যন্ত পৌঁছেও খালি হাতে ফিরে আসতে হয় তাঁকে। তার পরেও ২০১৪ সালে কেন্দ্রীয় নীতি অনুযায়ী আরও দু’বার পরীক্ষায় বসার সুযোগ পেয়ে যান তিনি। অবশেষে ২০১৫-র আইএএস পরীক্ষায় ১১৭ র্যাঙ্ক করেন তিনি। রানিপেটের ভেলোরের জেলাশাসক হিসাবে নিযুক্ত হন।
১২১২
সরকারি আধিকারিক হিসাবে এখনও পর্যন্ত কী শিখেছেন, তা জানতে চাইলে সংবাদমাধ্যমে এলামভবত জানান, ‘‘সরকারি কাজকর্ম নিয়ে নানা অভিযোগ রয়েছে মানুষের। অত্যন্ত ধীর গতিতে কাজ হয়, বার বার চক্কর কাটতে হয়, সরকারি কর্মীরা উদাসিন, এমন নানা অভিযোগ রয়েছে মানুষের। কিন্তু সরকারি কর্মীরা জনকল্যাণেই কাজ করেন।’’