সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। বুধবার কোচিতে। ছবি: রয়টার্স।
প্রায় পাঁচ ডজন আর্জি সত্ত্বেও নয়া নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)-এর উপরে স্থগিতাদেশ দিতে রাজি হল না সুপ্রিম কোর্ট। তার বদলে প্রধান বিচারপতি শরদ অরবিন্দ বোবডে আজ কেন্দ্রীয় সরকারকে মৌখিক ভাবে বলেছেন, সিএএ-র উদ্দেশ্য সম্পর্কে যথেষ্ট প্রচার করতে। যাতে সাধারণ মানুষের মধ্যে কোনও বিভ্রান্তি না থাকে। তাঁর কথায়, ‘‘কেন এই আইন পাশ হয়েছে, তা নিয়ে যথেষ্ট প্রচার প্রয়োজন। এর দরকার রয়েছে।’’ অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল বলেন, ‘‘আমি একমত। আমরা এই বিষয়টি দেখব।’’
সিএএ-কে অসাংবিধানিক ও অসম চুক্তির বিরোধী বলে সুপ্রিম কোর্টে ৫৯টি মামলা দায়ের হয়েছে। এ বিষয়ে কেন্দ্রের বক্তব্য জানতে চেয়ে আজ নোটিস জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট। ২২ জানুয়ারি পরবর্তী শুনানি।
সংসদে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশের পরেই দেশ জুড়ে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ থেকে দিল্লি, বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে হিংসাও হয়েছে। সিএএ-কে ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়ে মামলায় প্রধান যুক্তি, বাংলাদেশ-পাকিস্তান-আফগানিস্তান থেকে ধর্মীয় উৎপীড়নের শিকার হয়ে আসা অ-মুসলিমদের নাগরিকত্ব দেওয়ার ব্যবস্থা করে মোদী সরকার ধর্মের ভিত্তিতে ভেদাভেদ করছে। অসম গণ পরিষদ, আসু, অসমের বিরোধী নেতারা আবার সিএএ-কে অসম চুক্তির বিরোধী বলে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। কারণ, অসম চুক্তি অনুযায়ী ১৯৭১-এর ২৫ মার্চ ও তার পরে ভারতে আসা অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করে ফেরত পাঠাতে হবে। কিন্তু নতুন আইনে ২০১৪-র ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নাগরিকত্ব দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: আইনের পথ ছাড়ার প্রশ্ন নেই, মত নির্ভয়াকে কাছ থেকে দেখা ছায়ার
সুপ্রিম কোর্টে এ দিন কয়েক জন আইনজীবী আর্জি জানান, আপাতত নতুন আইনে স্থগিতাদেশ দেওয়া হোক। যদিও কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির দাবি, তাঁরা বা প্রধান মামলাকারীদের কেউই স্থগিতাদেশ চাননি। বেণুগোপাল বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের অন্তত চারটি রায় রয়েছে, যাতে বলা হয়েছে, এক বার আইনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলে স্থগিতাদেশ দেওয়া যায় না।’’ মামলাকারীদের পক্ষে প্রবীণ আইনজীবী রাজীব ধবন বলেন, ‘‘এখনও আইন কার্যকর হয়নি। আইনের বিধিনিয়ম এখনও তৈরি হয়নি।’’ আদালত জানিয়ে দেয়, আইনে স্থগিতাদেশ দেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে ২২ জানুয়ারি শুনানি হবে।
অসমের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ নিজে আইনজীবীর কালো কোট পরে সুপ্রিম কোর্টে হাজির হয়েছিলেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এই আইন সংবিধানের ১৪ নম্বর অনুচ্ছেদকে লঙ্ঘন করছে। এই আইন বাতিলের অনেক যুক্তি রয়েছে। আমরা নিশ্চিত সুপ্রিম কোর্ট ভবিষ্যতে আইন বাতিল করবে।’’
এজলাসে এ দিন ৫৯ জন মামলাকারী ও তাঁদের আইনজীবীরা একসঙ্গে বলতে শুরু করায় হট্টগোল তৈরি হয়। প্রধান বিচারপতি বলেন, ব্রিটেনে মাত্র এক জন আইনজীবীই বিচারপতিদের উদ্দেশে কথা বলতে পারেন। অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘‘আমি পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিলাম। ওখানে আইনজীবীদের জন্য নির্দিষ্ট ডেস্ক রয়েছে। এখানেও তেমন হওয়া উচিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy