জন্মদিনেও সুখবর জুটল না হরীশ রাওয়তের কপালে। শুক্রবারের আস্থাভোট স্থগিত রেখে উত্তরাখণ্ডে রাষ্ট্রপতি শাসন বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট। তবে তারা মোদী সরকারকে আজ যে সাতটি কড়া প্রশ্ন করেছে, তাতে আশার আলো দেখছে কংগ্রেস।
উত্তরাখণ্ড হাইকোর্ট রাষ্ট্রপতি শাসন খারিজ করে শুক্রবার আস্থাভোট করার রায় দিয়েছিল। কেন্দ্র সেই রায়কে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ জানায়। আজ রাওয়তের জন্মদিনেই তার শুনানি ছিল। রাওয়াত আশায় ছিলেন, হয়তো সুখবর আসবে। কিন্তু তা হয়নি। আদালত জানিয়েছে, ৩ মে শুনানি হবে। আরও দুই একদিন শুনানির পরে সুপ্রিম কোর্ট চূড়ান্ত রায় দেবে বলে আইনজীবী মহলের ধারণা। কাল, শুক্রবার হচ্ছে না আস্থাভোট।
বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বে ডিভিশন বেঞ্চ আজ কেন্দ্রকে যে সাতটি প্রশ্ন করেছে, তাতে উৎসাহিত কংগ্রেস। চূড়ান্ত রায়ের আগে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির ব্যাপারে কেন্দ্রের সাংবিধানিক ব্যাখ্যা যাচাই করে নিতে চায় শীর্ষ আদালত। প্রশ্নগুলি হল:
১) আস্থাভোটে দেরি হওয়া কি রাষ্ট্রপতি শাসন জারির উপযুক্ত ভিত্তি হতে পারে?
২) স্পিকার যদি বিধায়কদের সদস্যপদ খারিজ করেন, সেটি কি রাষ্ট্রপতি শাসনের জন্য প্রাসঙ্গিক?
৩) বিধানসভার কার্যসূচি কি কেন্দ্রের মাথাব্যথার কারণ হতে পারে?
৪) রাজ্যপাল কি আস্থাভোটের জন্য এ ভাবে বার্তা পাঠাতে পারেন?
৫) রাজ্যপাল কি স্পিকারকে ভোট বিভাজনের কথা বলতে পারেন? কারণ, উভয়েই সাংবিধানিক পদে আসীন।
৬) অর্থবিল পাশ না হলে সরকার পড়ে যাবে। কিন্তু স্পিকার যদি সেটি না বলেন, অন্য কার বলার তা অধিকার রয়েছে?
৭) রাষ্ট্রপতি শাসন জারির পর সেই বিলটির অবস্থা কী?
উত্তরাখণ্ডে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করতে গিয়ে স্পিকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল কেন্দ্র। তবে সুপ্রিম কোর্ট আজ মন্তব্য করেছে, বিধানসভায় স্পিকারই শেষ কথা। আদালতের প্রশ্নগুলি নিয়ে সরকারের পক্ষে ব্যাখ্যা দেন অ্যাটর্নি জেনারেল ও সলিসিটর জেনারেল। তাঁদের যুক্তি, উত্তরাখণ্ডে অর্থ বিল নিয়ে আলোচনা ও ভোটাভুটির দিন সকালেই বিজেপি বিধায়করা স্পিকার ও রাজ্যপালকে স্মারকলিপি দিয়ে ভোট বিভাজনের দাবি জানিয়েছিলেন। বিধানসভায় বিল পাশের সময়েও একই দাবি জানানো হয়। কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধ বিধায়করাও সেই দাবি করেন। কিন্তু সব উপেক্ষা করে স্পিকার একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়ে জানান, বিল পাশ হয়ে গিয়েছে। শীর্ষ আদালতে কেন্দ্রের দাবি, সংখ্যালঘু একটি সরকারকে সংখ্যাগরিষ্ঠ দেখাতে চেয়েছেন স্পিকার, যেটি আগাগোড়া অসাংবিধানিক কাজ। কেননা, বিজেপির ২৭ জন ও কংগ্রেসের ৯ জন বিধায়ক মিলে রাজ্যপালের কাছে এ নিয়ে ফের স্মারকলিপি দেন।
কেন্দ্রের ব্যাখ্যা, অর্থবিল পাশ করাতে না পারায় সংবিধান অনুসারে সরকার যখন পড়ে গেল, তখন রাজ্যপালের আর আস্থা ভোট চাওয়ার প্রাসঙ্গিকতা থাকছে না। তাই রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করে কেন্দ্রকে রাজ্যের বাজেট পাশ করাতে হয়েছে। একই সঙ্গে হরীশ রাওয়তের বিরুদ্ধে স্টিং অপারেশনের প্রসঙ্গও আদালতে তোলা হয়। বিধায়ক কেনাবেচার অভিযোগ তোলা হয়েছে যেখানে।
এ দিকে উত্তরাখণ্ডে কংগ্রেসের দুই বিধায়ক আজ দাবি করেন, বিজেপির পক্ষ থেকে তাঁদের ঘুষ দিয়ে কেনার চেষ্টা হচ্ছে। বিজেপি এই অভিযোগ খারিজ করেছে।
উত্তরাখণ্ডে শেষ হাসি কে হাসবে, সে জন্য মে মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy