ইডির ডিরেক্টর সঞ্জয়কুমার মিশ্র। — ফাইল চিত্র।
ইডির ডিরেক্টর পদে সঞ্জয়কুমার মিশ্রের তৃতীয় বার মেয়াদ বৃদ্ধি করা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশকে অবৈধ বলে রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। এ ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের ২০২১ সালের নির্দেশকে অমান্য করা হয়েছে বলে পর্যবেক্ষণ শীর্ষ আদালতের। যদিও মঙ্গলবার শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, ইডির ডিরেক্টর হিসাবে চলতি মাসের শেষ দিন অর্থাৎ ৩১ জুলাই পর্যন্ত বহাল থাকতে পারবেন সঞ্জয়।
ইন্ডিয়ান রেভিনিউ সার্ভিসের অফিসার সঞ্জয়কুমার মিশ্রকে ২০১৮ সালে প্রথম বার এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর ডিরেক্টর পদে নিয়োগ করা হয়েছিল। সে বার দু’বছরের জন্য তাঁকে ওই দায়িত্ব দিয়েছিল কেন্দ্র। এর পর ২০২০ সালে তাঁর মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানো হয়। সেই নির্দেশ কার্যকর করার জন্য ২০১৮ সালের নিয়োগের পুরনো নির্দেশিকা সংশোধন করে ওই দু’বছরের নিয়োগকে তিন বছর করা হয়েছিল।
ইডির ডিরেক্টর হিসাবে পর পর তিন বার সঞ্জয়ের মেয়াদ বৃদ্ধি নিয়ে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে একাধিক আবেদন জমা পড়ে। যদিও শীর্ষ আদালতের শুনানির সময় কেন্দ্রীয় সরকারের যুক্তি ছিল আর্থিক দুর্নীতির বহু গুরুত্বপূর্ণ মামলার তদন্তে জড়িত রয়েছে ইডি। ফলে সে সব তদন্তের স্বার্থেই ডিরেক্টর হিসাবে সঞ্জয়ের কার্যকালের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে। তবে ২০২১ সালে সেপ্টেম্বরে মামলাগুলির শুনানিতে শীর্ষ আদালত জানিয়েছিল, ওই তদন্তগুলির স্বার্থে অবসরের পরেও সঞ্জয়ের কার্যকালের মেয়াদ কিছু সময়ের জন্য বৃদ্ধি করা যেতে পারে। তবে তার পর মেয়াদ বৃদ্ধি করা যাবে না।
ঘটনাচক্রে, ২০২১ সালের বছরের নভেম্বরে সেন্ট্রাল ভিজিল্যান্স কমিশন আইন এবং দিল্লি স্পেশাল পুলিশ এস্টাবলিশমেন্ট আইনে সংশোধন করে কেন্দ্রীয় সরকার। সংশোধিত বিধিতে বলা হয়েছিল, সরকার চাইলে সিবিআই প্রধান এবং ইডি ডিরেক্টরের কার্যকালের মেয়াদ তিন বছরের জন্য বৃদ্ধি করতে পারে। সংশোধিত বিধির বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কংগ্রেস নেতা রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা, জয়া ঠাকুর তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র।
কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে শীর্ষ আদালতে সওয়াল করেছেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। গত মে মাসে শুনানিতে তাঁর যুক্তি ছিল, ‘‘এই আধিকারিক (সঞ্জয়কুমার মিশ্র) কোনও রাজ্যের ডিজিপি নন। ইনি এমন এক আধিকারিক, যিনি রাষ্ট্রপুঞ্জের মতো একটি সংস্থার প্রতিনিধিত্ব করছেন। এতে আদালতের হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়।’’
শীর্ষ আদালতের কেন্দ্রীয় সরকারের তরফের আইনজীবী আরও বলেছিলেন, ‘‘আর্থিক তছরুপের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মামলার তদন্তের দায়িত্বে রয়েছেন তিনি (সঞ্জয়)। রাষ্ট্রের স্বার্থেই তাঁকে প্রয়োজন। তবে ২০২৩ সালের নভেম্বরের পর থেকে তিনি এ পদে থাকবেন না।’’ শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, ২০২১ সালের রায়ে স্পষ্ট ভাবেই বলা হয়েছিল যে ইডির ডিরেক্টর হিসাবে অবসরের পরেও কোনও আধিকারিকের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হলে তা সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য হবে। সে সময় স্পষ্ট ভাবেই জানানো হয়েছিল, সঞ্জয়কুমারের কার্যকালের মেয়াদ আর বৃদ্ধি করা যাবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy