গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
আগামী ১ অক্টোবরের পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত দেশের কোনও রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের প্রশাসন ‘বেআইনি নির্মাণ’ ভাঙার যুক্তি দিয়ে বুলডোজ়ার চালাতে পারবে না। মঙ্গলবার এই নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত অন্তর্বর্তী নির্দেশে বলেছে, ‘‘এমনকি, একটিও বেআইনি নির্মাণ যদি বুলডোজ়ার দিয়ে ভাঙা হয়, তা হবে আমাদের সংবিধানের চেতনার পরিপন্থী।’’
তবে সরকারি রাস্তা, জলাশয়, রেললাইনের ধার বা ফুটপাথ জবরদখল করে গড়ে ওঠা বেআইনি নির্মাণের ভাঙার ক্ষেত্রে কোনও বিধিনিষেধ নেই বলে জানিয়ে দিয়েছে বিচারপতির বেঞ্চ। কেবলমাত্র বেসরকারি জমিতে গড়ে ওঠা নির্মাণের ক্ষেত্রেই এই নির্দেশ প্রযোজ্য।
প্রসঙ্গত, অপরাধের মামলায় অভিযুক্তদের বাড়ি বুলডোজ়ারের মাধ্যমে ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে মামলা দায়ের হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। গত ২ সেপ্টেম্বর সেই মামলার শুনানি হয় বিচারপতি বিআর গাভাই এবং বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চে। আদালতে কেন্দ্রের তরফে উপস্থিত ছিলেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। তাঁর উদ্দেশে দুই বিচারপতির বেঞ্চের প্রশ্ন, “অভিযুক্ত হলেই কী ভাবে একজনের বাড়ি ভেঙে ফেলা যায়? দোষী সাব্যস্ত হলেও ভেঙে ফেলা যায় না।”
জবাবে সলিসিটর জেনারেল বলেছিলেন, “এই ধরনের (বুলডোজ়ারের মাধ্যমে বাড়ি ভাঙা) পদক্ষেপ তখনই করা হয়, যখন কোনও বাড়ি বা কাঠামো অবৈধ ভাবে তৈরি হয়েছে বলে প্রমাণ পাওয়া যায়।” বিচারপতি গাভাই সলিসিটর জেনারেলের উদ্দেশে বলেন, “যদি আপনারা এটি মেনে নেন, তবে আমরা এর ভিত্তিতে নিয়মবিধি তৈরি করে দেব।” কেন বুলডোজ়ারের মাধ্যমে বাড়ি ভাঙার ঘটনা ঠেকাতে নির্দেশিকা দেওয়া হবে না, সেই প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি বিশ্বনাথন। মঙ্গলবার বুলডোজ়ার ব্যবহারে স্থগিতাদেশ দিয়ে শীর্ষ আদালত কার্যত সেই পদক্ষেপের বার্তা দিয়েছে বলে আইনজীবীদের একাংশ মনে করছেন।
প্রসঙ্গত, দেশের বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, বিজেপি এবং তাদের শরিক দল পরিচালিত রাজ্য সরকারগুলি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই অভিযুক্তের বাড়ি বুলডোজ়ার নিয়ে গুঁড়িয়ে দিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট একটি ধর্মীয় জনগোষ্ঠীকে নিশানা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ। উত্তরপ্রদেশে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ প্রশাসনের বিরুদ্ধে এই ধরনের কাজের অভিযোগ সবচেয়ে বেশি। মধ্যপ্রদেশে শিবরাজ সিংহ চৌহান মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন বুলডোজ়ার দিয়ে অভিযুক্তদের বাড়ি ভাঙার অভিযোগ উঠেছে। উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুস্কর সিংহ ধামীর সরকারের বিরুদ্ধে রয়েছে একই অভিযোগ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy