Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Muslim Women Alimony

‘খয়রাতি নয়, অধিকার’! বিবাহবিচ্ছিন্ন মুসলিম নারী খোরপোশ পাবেন, স্পষ্ট করে জানাল সুপ্রিম কোর্ট

স্ত্রীর খোরপোশের দাবিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিলেন মহম্মদ আবদুল সামসাদ। সেই মামলাটির শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট বলে স্ত্রীকে খোরপোশ দেওয়া দাক্ষিণ্য নয়। এটা তাঁদের অধিকার।

গ্রাফিক— সনৎ সিংহ।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৪ ১৩:২৪
Share: Save:

বিবাহবিচ্ছেদের পরে মুসলিম মহিলারাও খোরপোশ চাইতে পারেন তাঁদের স্বামীর কাছে। এ ব্যাপারে দেশে যে খোরপোশ আইন চালু রয়েছে, তা সমস্ত ধর্মের মহিলাদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য বলে জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট।

স্ত্রীর খোরপোশের দাবিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিলেন মহম্মদ আবদুল সামসাদ নামে এক ব্যক্তি। সেই মামলাটির শুনানি ছিল সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিভি নাগারত্ন এবং বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মাসির বেঞ্চে। শুনানিতে সামসাদের আর্জি খারিজ করে সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চ তাদের পর্যবেক্ষণে বলে, ‘‘খোরপোশকে যদি স্বামীরা তাঁদের স্ত্রীর প্রতি দাক্ষিণ্য বা খয়রাতি ভাবেন, তবে ভুল করবেন। এটা যে কোনও বিবাহিত মহিলার অধিকার। ধর্মনির্বিশেষে সমস্ত মহিলাই এই অধিকার পাওয়ার যোগ্য।’’

সামসাদের মামলাটি এর আগে তেলঙ্গানার পারিবারিক আদালত থেকে তেলঙ্গানার হাই কোর্টে ধাক্কা খেয়েছে। তাঁর বিবাহবিচ্ছিন্ন স্ত্রীর খোরপোশের আর্জিতে সায় দিয়ে পারিবারিক আদালত রায় দিয়েছিল, সামসাদকে মাসে ২০ হাজার টাকা খোরপোশ হিসাবে দিতে হবে তাঁর স্ত্রীকে। পরে সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তিনি হাই কোর্টে গেলে হাই কোর্ট আগের রায় বহাল রাখে। তবে খোরপোশের পরিমাণ কমিয়ে দেয় ১০ হাজার টাকায়। এর পরে হাই কোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সামসাদ।কিন্তু সুপ্রিম কোর্টও তাঁকে ফিরিয়ে দেয়।

সুপ্রিম কোর্ট বুধবার জানিয়েছে, ভারতীয় খোরপোশ আইনে ( ১২৫ ফৌজদারি আইন) বলা আছে এক জন ব্যক্তি কখনওই তাঁর স্ত্রী, সন্তান এবং বাবা-মায়ের প্রতি আর্থিক দায়িত্ব অস্বীকার করতে পারেন না। আর এই আইন ধর্মবৈষম্যের উর্ধ্বে। সমস্ত বিবাহিত মহিলার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।

সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশ ফিরিয়ে দিল ৩৯ বছর আগে শাহ বানো মামলার স্মৃতি। ১৯৮৫ সালে ওই মামলায় সুপ্রিম কোর্ট এই একই নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু তার এক বছর পরে ১৯৮৬ সালে তৎকালীন কংগ্রেস সরকার মুসলিম মহিলা (বিবাহবিচ্ছেদের পরবর্তী অধিকার) আইন প্রণয়ন করে। সেই আইনে বলা হয়, মুসলিম মহিলারা ওই খোরপোশ চাইতে পারবেন শুধু বিচ্ছেদের পরের ৯০ দিনের ‘ইদ্দত’-এর সময়টুকুতেই।

বুধবার অবশ্য সুপ্রিম কোর্ট ১৯৮৫ সালের সেই পুরনো রায়ই দিল। সেই সঙ্গে আদালত বলেছে, ‘‘স্বামীরা অনেক সময়েই এটা বুঝতে পারেন না যে, গৃহিণীরা তাঁদের উপর মানসিক ভাবে তো বটেই এবং আরও নানা ভাবে তাঁদের উপর নির্ভরশীল। গৃহিণীরা বাড়িতে থেকে যে ভূমিকা পালন করেন এবং যে ত্যাগ স্বীকার করেন, তাঁর স্বীকৃতি দেওয়ার সময় এসেছে ভারতীয় পুরুষদের।’’


অন্য বিষয়গুলি:

Muslim Women Alimony Supreme Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy