সায়ন লাহিড়ী। —ফাইল চিত্র।
নবান্ন অভিযানের অন্যতম আহ্বায়ক সায়ন লাহিড়ীর জামিনের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে এসে কঠিন প্রশ্নের মুখে পড়ল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। কলকাতা হাই কোর্টের রায়ে সায়নের জামিনের বিরোধিতা করে রাজ্যের মামলাও খারিজ করে দিল শীর্ষ আদালত। সেই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জে বি পারদিওয়ালা প্রশ্ন তুললেন, শুধুমাত্র সায়ন লাহিড়ীর জামিন বাতিলের জন্যই সুপ্রিম কোর্টে মামলা করতে হল? কয়েকশো মানুষের বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে কেন সায়নকেই গ্রেফতার করা হল? তাঁর মন্তব্য, “সায়নের জামিন মঞ্জুর হওয়াই উচিত।”
আর জি কর-কাণ্ডের বিরুদ্ধে নবান্ন অভিযানে গোলমালের ঘটনায় ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’-এর আহ্বায়ক সায়ন লাহিড়ীকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। কলকাতা হাই কোর্ট তাকে জামিন দিয়ে বলেছিল, নবান্ন অভিযান সংক্রান্ত মামলা বা অন্য কোনও মামলায় আপাতত হাই কোর্টের অনুমতি ছাড়া সায়নকে পুলিশ ফের গ্রেফতার করতে পারবে না। এর বিরুদ্ধেই সুপ্রিম কোর্টে এসেছিল রাজ্য সরকার।
আজ রাজ্য সরকারের হয়ে আইনজীবী জয়দীপ গুপ্ত যুক্তি দেন, নবান্ন অভিযান থেকে হিংসা ছড়ানো হয়েছিল। তার তদন্তেই সায়নকে গ্রেফতার করা হয়। যে তিন জন নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিল, তাঁদের মধ্যে সায়ন অন্যতম। সায়ন নিজেই নবান্ন অভিযান কর্মসূচি করিয়েছিলেন, না কি এর নেপথ্যে অন্য কেউ আছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। আন্দোলনকারীদের হামলায় ৪২ জন পুলিশকর্মী আহত হন। বিচারপতি পারদিওয়ালা প্রশ্ন করেন, এক জনই ৪২ জন পুলিশকর্মীকে ঘায়েল করেছেন? পুলিশের এফআইআরে কত জনের নাম রয়েছে? রাজ্যের আইনজীবী জানান, মোট ১৪২ জনকে অশান্তির অভিযোগে গ্রেফতার করা রয়েছে। সায়নের বিরুদ্ধে ১১টি এফআইআর রয়েছে।
কলকাতা হাই কোর্ট যে ভাবে সমস্ত মামলায় পুলিশি পদক্ষেপের বিরুদ্ধে রক্ষাকবচ দিয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন জয়দীপ। সুপ্রিম কোর্ট আজ জানতে চেয়েছে, সায়ন লাহিড়ীর পেশা কী? তিনি কি ডাক্তার? শুধু ছাত্রনেতা হলে তাঁকে কী ভাবে প্রভাবশালী বলে রাজ্য সরকার
দাবি করছে?
জয়দীপ যুক্তি দেন, সায়ন অশান্তিতে প্ররোচনা দিয়েছিলেন। অভিযুক্ত জামিন পেয়ে যাওয়ায় হিংসার ঘটনার তদন্ত ব্যহত হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টই রাজ্য সরকারকে বলেছিল, শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ হিংসাত্মক হয়ে উঠলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে। রাজ্য সরকার সেই নির্দেশই পালন করেছে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট জামিনের বিরোধিতা করে রাজ্যের মামলা খারিজ করে দেয়।
অন্য দিকে আজ রাজ্যের এক মহিলা আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়ে অভিযোগ তুলেছিলেন, সন্দেশখালি ও আর জি কর হাসপাতালের মামলায় অংশ নেওয়ার জন্য কলকাতা পুলিশ ও রাজ্য প্রশাসন তাঁকে নিশানা করেছে। তাঁর উপরে হামলা হতে পারে বলেও তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট তাঁকে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy