মুকেশ অম্বানী। —ফাইল চিত্র।
সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা রিলায়্যান্স কর্ণধার মুকেশ অম্বানীর। ফিউচার গ্রুপের সঙ্গে তাঁর সংস্থার ৩৪০ কোটি আমেরিকান ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় ২৪ হাজার ৭১৩ কোটি টাকা)-এর চুক্তিতে আপাতত স্থগিতাদেশ দিল আদালত। ওই চুক্তি ব্যবসায়িক বিধিনিয়ম লঙ্ঘন করছে বলে শীর্ষ আদালতে আবেদন জানিয়েছিল আমেরিকান অনলাইন বিপণন সংস্থা অ্যামাজন। সেই মামলার শুনানিতেই সোমবার ওই চুক্তিতে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছে আদালত। এর আগে নিম্ন আদালত সিদ্ধান্ত ঠেলে দিয়েছিল কোম্পানি ট্রাইব্যুনালের উপরে। কিন্তু সর্বোচ্চ আদালত সাফ জানিয়েছে, কোম্পানি ট্রাইব্যুনাল শুনানি চালিয়ে যেতে পারে। তবে শীর্ষ আদালতের পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না।
আগামী ৫ সপ্তাহের জন্য মামলার শুনানি পিছিয়ে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। লিখিত ভাবে ফিউচার গ্রুপকে নিজেদের অবস্থানও জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালতের এই নির্দেশর পরেই ফিউচার গ্রুপের শেয়ার ও বন্ডের দাম ব্যাপক পড়ে গিয়েছে। তাদের শেয়ার পড়েছে ১০ শতাংশ। ২০২৫ পর্যন্ত মেয়াদ ছিল যে বন্ডের, ডলার প্রতি তার দামও পড়ে গিয়েছে ৩.৫ সেন্ট। রিলায়্যান্সের শেয়ার দরও ২.৮ শতাংশ পড়ে গিয়েছে। শীর্ষ আদালতের নির্দেশ নিয়ে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি রিলায়্যান্স এবং ফিউচার গ্রুপের তরফে। তবে এই স্থগিতাদেশ থেকে অব্যাহতি পেতে ফিউচার গ্রুপ আন্তর্জাতিক সালিশি ট্রাইব্যুনালে (আরবিট্রেশন ট্রাইব্যুনাল) যেতে পারে বলে জানা গিয়েছে।
দেনার দায়ে জর্জরিত হয়ে রিলায়্যান্সকে খুচরো ব্যবসা এবং যাবতীয় পরিকাঠামো বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ফিউচার গ্রুপ। ২০২০ সালের অগস্টে ২৪ হাজার ৭১৩ কোটি টাকার বিনিময়ে তাদের মধ্যে চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়। কিন্তু বেঁকে বসে ফিউচার গ্রুপের ৪৯ শতাংশ অংশীদার অ্যামাজন। এই চুক্তিতে সম্মতি নেই বলে সাফ জানিয়ে দেয় তারা। ফিউচার গ্রুপের সঙ্গে রিলায়্যান্সের এই চুক্তি তাদের সঙ্গে চুক্তির পরিরন্থী। এই চুক্তিতে ব্যবসায়িত বিধিনিয়ম লঙ্ঘিত হয়েছে বলে দাবি করে অ্যামাজন। জবাবে কিশোর বিয়ানির ফিউচার গ্রুপ জানায়, ২০২০-র ২৯ অগস্ট চুক্তির কথা ঘোষণা করে তারা। তাবড় সংবাদমাধ্যমে সে কথা ফলাও করে প্রকাশিত হয়। ফোন, মেসেজ এবং ই-মেল মারফত সে খবর অ্যামাজনের কাছেও পৌঁছে গিয়েছিল। তার পরেও আইনি পদক্ষেপ করতে একমাস অপেক্ষা করল কেন অ্যামাজন?
কিন্তু অ্যামাজনের এক মুখপাত্র ফিউচার গ্রুপের এই অভিযোগ নস্যাৎ করেন দেন। ফিউচার গ্রুপের দাবি মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন বলে পাল্টা বিবৃতি জারি করা হয় সংস্থার তরফে। তারা জানায়, অতিমারি পরিস্থিতিতে লাগাতার ফিউচার গ্রুপকে আর্থিক সহায়তার প্রস্তাব দেওয়া হয় সংস্থার তরফে। এমনকি দিল্লি হাইকোর্টে মামলাটি ঝুলে থাকার সময়ও দফায় দফায় বৈঠক হয় তাদের মধ্যে। অভিযোগ, রিলায়্যান্সের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরের আগে এক বারও তাদের জানানোর প্রয়োজন বোধ করেনি ফিউচার গ্রুপ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy