Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪

২৪ হাজারও মিলছে না কেন, জানতে চাইল সুপ্রিম কোর্ট

সুপ্রিম কোর্টে নোট বাতিল মামলায় আজ ফের কড়া প্রশ্নের মুখে পড়তে হল নরেন্দ্র মোদী সরকারকে। সপ্তাহে জনপ্রতি ব্যাঙ্ক থেকে ২৪ হাজার টাকা তোলা যাবে বলে জানিয়েছিল কেন্দ্র। তা হলে মানুষ কেন অনেক সময়ই সেই পরিমাণ টাকা তুলতে পারছেন না, জানতে চাইল সুপ্রিম কোর্ট।

দীর্ঘ ক্ষণ অপেক্ষা। তার পরে পেনশন পেলেন সুধীররঞ্জন সাহা। ৮০ বছরের সুধীরবাবুর কথায়, ‘‘আগে কখনও এমন অবস্থা হয়নি।’’ শুক্রবার কৃষ্ণনগরে সুদীপ ভট্টাচার্যের তোলা ছবি।

দীর্ঘ ক্ষণ অপেক্ষা। তার পরে পেনশন পেলেন সুধীররঞ্জন সাহা। ৮০ বছরের সুধীরবাবুর কথায়, ‘‘আগে কখনও এমন অবস্থা হয়নি।’’ শুক্রবার কৃষ্ণনগরে সুদীপ ভট্টাচার্যের তোলা ছবি।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৪:০৮
Share: Save:

সুপ্রিম কোর্টে নোট বাতিল মামলায় আজ ফের কড়া প্রশ্নের মুখে পড়তে হল নরেন্দ্র মোদী সরকারকে। সপ্তাহে জনপ্রতি ব্যাঙ্ক থেকে ২৪ হাজার টাকা তোলা যাবে বলে জানিয়েছিল কেন্দ্র। তা হলে মানুষ কেন অনেক সময়ই সেই পরিমাণ টাকা তুলতে পারছেন না, জানতে চাইল সুপ্রিম কোর্ট। কেন্দ্রের তরফে অবশ্য আশ্বাস দিয়ে বলা হল, নোট সমস্যা আর ১০-১৫ দিনের মধ্যে মিটে যাবে।

প্রধান বিচারপতি টি এস ঠাকুর এ দিন সরাসরিই প্রশ্ন করেন, ‘‘নোট বাতিলের পরে এক জন গ্রাহক সপ্তাহে ২৪ হাজার টাকা তুলতে পারবেন বলে সরকারই জানিয়েছে। তা হলে সেই পরিমাণ টাকাও অনেকে পাচ্ছেন না কেন? সপ্তাহে ন্যূনতম কত টাকা তোলা যাবে তা নিশ্চিত ভাবে বলা যাচ্ছে না কেন?’’

তার পরেই সমবায় ব্যাঙ্কগুলির প্রসঙ্গ তোলেন প্রধান বিচারপতি। কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক আগে জানিয়েছে, সমবায় ব্যাঙ্কগুলির উপরে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নিয়ন্ত্রণ কম। তা ছাড়া ওই ব্যাঙ্কগুলিতে পরিকাঠামোর অভাবও আছে। তাই সেগুলিকে বাতিল নোট জমা প্রক্রিয়ার বাইরে রেখেছে সরকার। কিন্তু এর ফলে গ্রামাঞ্চলে প্রবল সমস্যা হয়েছে বলে অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখেছেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীস। আজ অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহতগিকে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘সমবায় ব্যাঙ্কগুলিকে এই প্রক্রিয়ায় সামিল করা যায় কি না তা সরকারের কাছ থেকে জানুন।’’ জবাবে রোহতগি বলেন, ‘‘না, ওই ব্যাঙ্কগুলিকে এর আওতার বাইরেই রাখা হবে।’’

এর মধ্যেই এক আবেদনকারীর আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ বলেন, ‘‘আসলে নোট বাতিলের পরের পরিস্থিতির জন্য সরকার তৈরিই ছিল না। তাই এটিএমে টাকা নেই। এটিএমগুলিকে নয়া নোটের জন্য ঠিক মতো তৈরিও করা হয়নি।’’ সঙ্গে সঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল জবাব দেন, ‘‘সরকার বসে নেই। আর ১০-১৫ দিনের মধ্যে সমস্যা মিটে যাবে।’’ সওয়াল-পাল্টা সওয়ালে এজলাসে গোলমাল শুরু হয়। তাতে ক্ষুব্ধ হয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘২৩ বছর বিচারপতির আসনে বসছি। আইনজীবীদের এমন আচরণ কখনও দেখিনি। এমন স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে শুনানিতেও আপনারা সঠিক আচরণ করছেন না।’’ গোলমালের মধ্যেও ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করছিলেন আর এক আবেদনকারীর আইনজীবী, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘ওঁকে দেখে অন্য আইনজীবীদের শিক্ষা নেওয়া উচিত।’’ এর পর সওয়াল করতে উঠে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘‘নোট বাতিলের মাধ্যমে সরকার ১২ লক্ষ কোটি টাকা বাজার থেকে তুলে নিয়েছে। এখনও পর্যন্ত বাজারে এসেছে মাত্র ৩ লক্ষ কোটি টাকা। নগদের উপরে রেশন চালু হয়েছে। পরিস্থিতি ঠিক হতে অন্তত ৫ মাস সময় লাগবে।’’

সওয়াল শুনতে শুনতে প্রধান বিচারপতি হঠাৎই রোহতগির কাছে জানতে চান, ‘‘নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত কি আদৌ সরকার নিতে পারে? এই সিদ্ধান্ত কতটা গোপন রাখা হয়েছিল?’’

অ্যাটর্নি জেনারেল আজ এই প্রশ্নের জবাব দেননি। কিন্তু অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিও এই সিদ্ধান্তের কথা আগে জানতেন কি না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাহুল গাঁধী-সহ বিরোধী নেতারা। যার জবাবে বিরোধীদের পাল্টা তোপ দাগছে বিজেপি। ১৪ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টে অবশ্য কিছু প্রশ্নের জবাব দেওয়ার কথা সরকারের। সে দিনই পরবর্তী শুনানি।

অন্য বিষয়গুলি:

Supreme Court demonetisation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy