সুধীরকুমার ওঝা।
দেশে ক্রবর্ধমান অসহিষ্ণুতা এবং ধর্মের নামে হিংসার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লেখায় অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, চিত্রপরিচালক অপর্ণা সেন, আদুর গোপালকৃষ্ণান, শ্যাম বেনেগাল, অভিনেত্রী কঙ্কনা সেনশর্মা, ইতিহাসবিদ রামচন্দ্র গুহ-র মতো বিশিষ্টদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন তিনি। গত মাসেই তাঁর করা এফআইআরের ভিত্তিতে ৪৯ জন বিশিষ্টের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহ-সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে। তার পরেই ফের আলোচনায় উঠে এসেছেন মুজফ্ফরপুরের আইনজীবী সুধীরকুমার ওঝা।
তাঁদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের মামলা করা হয়েছে শুনে বিশ্বাসই করতে পারছেন না চিত্র পরিচালক আদুর গোপালকৃষ্ণন। তাঁর কথায়, ‘‘আমার বিশ্বাসই হচ্ছে না যে ওই চিঠিটি নিয়ে কোনও আদালত দেশদ্রোহের মামলা গ্রহণ করেছে! কেউ সরকারের সমালোচনা করলেই তা দেশদ্রোহ নয়। আমরা গণতন্ত্রে বাস করি।’’
বিশিষ্টরা চিঠি দেওয়ার পরেই তাঁদের বিরুদ্ধে সরব হন একাধিক বিজেপি নেতা। সুধীরের মামলার পরে প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কি বিজেপি বা কেন্দ্রীয় সরকার রয়েছে এর পিছনে? যদিও শনিবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভরেকর বলেন, ‘‘সরকার কোনও মামলা করেনি। এক জন আদালতে গিয়েছেন, আদালত নির্দেশ দিয়েছে।’’
বছর পঞ্চাশের সুধীর এর আগেও দেশের নানা ক্ষেত্রের একাধিক বিশিষ্ট জনকে মামলায় জড়িয়েছেন। সেই তালিকায় অমিতাভ বচ্চন থেকে লালুপ্রসাদ এমনকি এমএনএস প্রধান রাজ ঠাকরেও রয়েছেন। মানুষ নয়, রামসেতু একটি প্রাকৃতিক কাঠামো বলায় মনমোহন সিংহ এবং বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধেও মামলা করেছিলেন তিনি। কিন্তু রাষ্ট্রপতি এবং রাজ্যপালের অনুমোদন না থাকায় মামলা গোড়াতেই খারিজ হয়ে যায়।
সুধীরের নিজের হিসেবে তিনি এ পর্যন্ত ৭৪৫টি জনস্বার্থ মামলা করেছেন। তার মধ্যে ১৩০টি মামলা আদালত খারিজ করে দিয়েছে। ৪৯ জন বিশিষ্টের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রসঙ্গে তাঁর সাফ কথা, ‘‘প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লেখা অপরাধ না। কিন্তু সেটা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করে ওঁরা ইচ্ছাকৃত ভাবে প্রধানমন্ত্রী ও দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন।’’ আর নিজের বক্তব্যের সমর্থনে তাঁর হাতে ‘প্রমাণ’ও আছে। অন্যান্য ক্ষেত্রের ৬২ জন পরিচিত মুখ ওই চিঠিটির বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন এবং তাঁরাও দেশের ভাবমূর্তি নষ্টের কথাই বলেছিলেন।
সুধীর কখনও সিনেমায় চুম্বন-দৃশ্যের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন তো কখনও জাঙ্ক ফুডের বিরুদ্ধে। তাঁর মামলা নিয়ে অনেকেরই প্রশ্ন এগুলি কোর্টের অনুমতি পায় কী ভাবে? কেউ বলেছেন এগুলি প্রচারের জন্য করেন সুধীর। কিন্তু তাঁর কথায়, ‘‘আমি মানুষকে স্বস্তি দিতেই বিচারব্যবস্থাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy