Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Narendra Modi

Niti Aayog: ‘দান’ নিয়ে নীরব মোদী, রাজ্যের প্রাপ্য বৃদ্ধির দাবি

বৈঠকে কংগ্রেস শাসিত ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বঘেল কেন্দ্রীয় করের ভাগ থেকে রাজ্যগুলির জন্য আরও বেশি অর্থের দাবি করেছেন।

নীতি আয়োগের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রবিবার নয়াদিল্লিতে। পিটিআই

নীতি আয়োগের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রবিবার নয়াদিল্লিতে। পিটিআই

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০২২ ০৭:৫৮
Share: Save:

বিভিন্ন রাজ্যে ভোটে জিততে খয়রাতি বিলি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে একের পর এক জনসভায় সরব হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অথচ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সামনে তিনি এ বিষয়ে কোনও কথাই বললেন না!

আজ নীতি আয়োগের পরিচালন পরিষদের বৈঠকের বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা কেন্দ্রের থেকে আরও বেশি অর্থের দাবি করেছেন। জিএসটি ক্ষতিপূরণের মেয়াদ বাড়ানোর দাবি করেছেন। কিন্তু সেই অর্থ যাতে খয়রাতি খাতে খরচ না হয়, রাজ্যগুলি যাতে নিজের আয় বুঝে খরচ করে, এ নিয়ে আজ মোদী মুখ্যমন্ত্রীদের কোনও রকম সতর্ক করার পথে হাঁটেননি। নীতি আয়োগের উপাধ্যক্ষ সুমন বেরি বলেন, ‘‘খয়রাতি নিয়ে আজ কোনও আলোচনা হয়নি।’’

গত এক মাসে প্রধানমন্ত্রী দু’বার খয়রাতি বিলির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। প্রথম বার ঝাড়খণ্ডে গিয়ে তিনি ভোটে জেতার জন্য নানা রকম নগদ বা খয়রাতি বিলিকে ‘শর্টকাট’ রাজনীতি বলে কটাক্ষ করেছিলেন। তার পরে উত্তরপ্রদেশে বুন্দেলখণ্ড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন করতে গিয়ে মোদী খয়রাতি বিলিকে ‘রেউড়ি সংস্কৃতি’ বা মিষ্টি বিলি বলে সমালোচনা করেছিলেন। পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যে বিভিন্ন খয়রাতি প্রকল্পকে চিহ্নিত করে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এই রাজ্যগুলির কোষাগারের হাল নিয়ে দুশ্চিন্তা জানিয়েছিল। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে বৈঠকে শ্রীলঙ্কার আর্থিক সঙ্কটের উদাহরণ তুলে ধরে সতর্ক করেছিলেন। আজকের নীতি আয়োগের বৈঠকের প্রস্তুতি হিসেবে জুন মাসে হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালায় মুখ্যসচিবদের বৈঠকেও এ নিয়ে অর্থ মন্ত্রকের তরফে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছিল। ফলে প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকে এই প্রসঙ্গ আসা স্বাভাবিক ছিল।

তা হলে প্রধানমন্ত্রী আজ এ নিয়ে মুখ খুললেন না কেন? নীতি আয়োগ সূত্রের বক্তব্য, এই বিষয়টি সরকারি আলোচ্যসূচিতে ছিল না। সরকারি সূত্র বলছে, ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্ট এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেছে। নীতি আয়োগের বৈঠকে এ নিয়ে বলতে গেলে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হত। এমনিতেই বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলি ক্রমাগত কোভিড-উত্তর পরিস্থিতিতে রাজ্যের কোষাগারের সঙ্কটের কথা বলছে। এই সবের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী যদি রাজ্যগুলি কী ভাবে টাকা খরচ করবে, তা নিয়ে উপদেশ দিতে যেতেন, তা হলে পাল্টা আক্রমণ ধেয়ে আসার আশঙ্কা ছিল।

আজকের বৈঠকে কংগ্রেস শাসিত ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বঘেল কেন্দ্রীয় করের ভাগ থেকে রাজ্যগুলির জন্য আরও বেশি অর্থের দাবি করেছেন। কেন্দ্র বিপুল পরিমাণে সেস আদায় করে নিজের ঘরে টাকা তুলছে বলে কেন্দ্রীয় করের ভাগ হিসেবে রাজ্যগুলির পাওনা কমে গিয়েছে বলে আগেই অভিযোগ উঠেছে। বঘেল এবং কেরলের মুখ্যমন্ত্রীপিনারাই বিজয়ন জিএসটি ক্ষতিপূরণের মেয়াদ পাঁচ বছর বাড়ানোর দাবি তুলেছেন। পিনারাই বলেছেন, রাজ্যগুলির ঋণ নেওয়ার উপরে ঊর্ধ্বসীমা শিথিল করা হোক। কৃষি আইন পাশের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠেছিল। ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক বলেছেন, কেন্দ্র-রাজ্যের বিবাদের ক্ষেত্রে নীতি আয়োগ সালিশির কাজ করতে পারে। পিনারাই কেন্দ্রকে কার্যত সতর্ক করে বলেছেন, যৌথ তালিকায় থাকা বিষয়ে আইন তৈরির আগে যেন রাজ্যগুলির সঙ্গে আলোচনা করা হয়। নীতি আয়োগের বৈঠককে ‘নিষ্ফলা’ বলে তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও বৈঠকে যোগ দেননি। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালও বৈঠকে যোগ না গিয়ে গুজরাতে প্রচারে চলে গিয়েছেন।

কেন্দ্র ও রাজ্যগুলির মধ্যে দূরত্ব কমাতে প্রধানমন্ত্রী আজ যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ও কেন্দ্র-রাজ্য সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, কোভিড সঙ্কটের সময় ভারত এ ক্ষেত্রে বিশ্বের সামনে মডেল হয়ে উঠেছে। ভারত উন্নয়নশীল দেশগুলিকে বার্তা দিয়েছে, অর্থের টানাটানি থাকলেও চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করা যায়। প্রধানমন্ত্রী বৈঠকের গোড়াতেই বলেন, ‘‘এ জন্য রাজ্যগুলিরই কৃতিত্ব প্রাপ্য। কারণ রাজ্যগুলি তৃণমূল স্তরে পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ায় নজর দিয়েছে। রাজনৈতিক মত নির্বিশেষে সমন্বয় হয়েছে।’’

এ দিনের বৈঠকে জাতীয় শিক্ষা নীতির রূপায়ণ অন্যতম আলোচ্যসূচি ছিল। শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান এ বিষয়ে রাজ্যগুলির সামনে কেন্দ্রের বক্তব্য জানানোর পরে প্রধানমন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রীদের এ বিষয়ে নিয়মিত নজরদারি করতে অনুরোধ করেন। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জি-২০গোষ্ঠী ও এসসিও (সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন)-এ ভারত সভাপতির পদে বসতে চলেছে বলে জানিয়ে তার তাৎপর্য ব্যাখ্যা করেন। প্রধানমন্ত্রী জি-২০সম্মেলনে রাজ্যগুলিকেও নিজেদের সাফল্য তুলে ধরতে বলেন। বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল রাজ্যগুলি কোথায় কী ভাবে রফতানিতে নজর দিতে পারে, তার বিস্তারিত বর্ণনাপেশ করেছেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Narendra Modi NITI Aayog
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy