সুপ্রিম কোর্টে দায়ের করা এক আবেদনে আইনজীবী ও বিজেপি নেতা অশ্বিনী উপাধ্যায় জানান, ২০১১ সালের জনগণনার তথ্য অনুযায়ী লক্ষদ্বীপ, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, মেঘালয়, জম্মু-কাশ্মীর, অরুণাচল প্রদেশ, মণিপুর ও পঞ্জাবে হিন্দুরা সংখ্যালঘু গোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছেন।
২০১৭ সালে প্রথম এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন আইনজীবী ও বিজেপি নেতা অশ্বিনী উপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
কোনও রাজ্যের সরকারও সেই রাজ্যে কোনও ধর্মীয় বা ভাষিক গোষ্ঠীকে সংখ্যালঘু মর্যাদা দিতে পারে বলে সুপ্রিম কোর্টে হলফনামায় জানাল কেন্দ্র।
সুপ্রিম কোর্টে দায়ের করা এক আবেদনে আইনজীবী ও বিজেপি নেতা অশ্বিনী উপাধ্যায় জানান, ২০১১ সালের জনগণনার তথ্য অনুযায়ী লক্ষদ্বীপ, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, মেঘালয়, জম্মু-কাশ্মীর, অরুণাচল প্রদেশ, মণিপুর ও পঞ্জাবে হিন্দুরা সংখ্যালঘু গোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছেন। টিএমএ পাই মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী তাঁদের ওই রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে সংখ্যালঘু মর্যাদা দেওয়া উচিত। ওই মামলার রায়ে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা ও চালানোর ক্ষেত্রে ধর্মীয় ও ভাষিক সংখ্যালঘুদের অধিকারের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট রাজ্যের প্রেক্ষিতে বিচার করতে হবে। জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন আইনে মুসলিম, শিখ, বৌদ্ধ, পার্সি ও খ্রিস্টানদের সংখ্যালঘু মর্যাদা দেওয়া হয়েছে।
উপাধ্যায়ের আবেদনের প্রেক্ষিতে এই রাজনৈতিক ভাবে সংবেদনশীল বিষয়ে অবস্থান স্পষ্ট না করায় সুপ্রিম কোর্টের সমালোচনার মুখে পড়েছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। এ বার শীর্ষ আদালতে পেশ করা হলফনামায় তারা জানিয়েছে, লাদাখ, মিজোরাম, লক্ষদ্বীপ, কাশ্মীর, নাগাল্যান্ড, মেঘালয়, অরুণাচল প্রদেশ, পঞ্জাব ও মণিপুরে হিন্দুরা সংখ্যালঘু হওয়া সত্ত্বেও নিজেদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালাতে পারবেন না, এই যুক্তি ঠিক নয়। কারণ রাজ্যও কোনও প্রতিষ্ঠান বা সম্প্রদায়কে তাদের নিয়ম অনুযায়ী সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা দিতে পারে। ২০১৬ সালে মহারাষ্ট্র ইহুদিদের সংখ্যালঘু মর্যাদা দিয়েছিল। কয়েকটি ভাষিক গোষ্ঠীকে সংখ্যালঘু মর্যাদা দিয়েছে কর্নাটক।
এই আর্জি খারিজ করার আবেদন জানিয়ে কেন্দ্রের তরফে বলা হয়েছে, আবেদনের সঙ্গে বৃহত্তর জনস্বার্থ জড়িত নয়। তবে একই সঙ্গে তারা জানিয়েছে, সংসদ ও রাজ্য বিধানসভা, উভয়েরই সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা ও স্বার্থরক্ষার জন্য আইন তৈরির অধিকার আছে। কেন্দ্রের বক্তব্য, ‘‘সংখ্যালঘুদের নিয়ে আইন তৈরির ক্ষমতা কেবল রাজ্যের হাতে থাকার পক্ষে যুক্তি মেনে নেওয়ার অর্থ সংসদের হাত থেকে এই বিষয়ে আইন তৈরির ক্ষমতা সরিয়ে নেওয়া। তা সাংবিধানিক কাঠামোর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।’’
২০১৭ সালে প্রথম এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন উপাধ্যায়। তখন তাঁকে জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশনের দ্বারস্থ হতে বলে সু্প্রিম কোর্ট। সংখ্যালঘু কমিশন জানায়, এই বিষয়ে আবেদনের নিষ্পত্তি করা তাদের এক্তিয়ারে পড়ে না। কারণ, কেবল কেন্দ্রই কোনও গোষ্ঠীকে সংখ্যালঘু মর্যাদা দিতে পারে।
ফলে ফের সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন উপাধ্যায়। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের বেঞ্চ এই মামলায় অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপালের সাহায্য চায়। কিন্তু মামলাটি ফের শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত হওয়ার আগেই অবসর নেন গগৈ। নয়া প্রধান বিচারপতি এস এ বোবডের বেঞ্চ আর্জি খারিজ করে।
২০২০ সালে ফের নয়া আবেদন করেন উপাধ্যায়। তাতে জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশনের ২(সি) ধারার সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করা হয়। ওই ধারা অনুযায়ী, কেবল কেন্দ্রের হাতেই সংখ্যালঘু মর্যাদা দেওয়ার অধিকার রয়েছে। ২০২০ সালের ২৮ অগস্ট এ নিয়ে কেন্দ্রকে নোটিস পাঠায় সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু পাল্টা হলফনামা দেয়নি কেন্দ্র। গত ৩১ জানুয়ারি কেন্দ্রকে অর্থদণ্ড হিসেবে সাড়ে সাত হাজার টাকা দেওয়ার নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। চার সপ্তাহের মধ্যে নোটিসের জবাব দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয় তাদের। ২৮ মার্চ মামলার শুনানি হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy