আট বছর আগে প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা প্রথম পরামর্শ দিয়েছিলেন, কংগ্রেসের মধ্যে একটি ‘ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট’ বা ভোটের কৌশল তৈরির বিভাগ তৈরি হোক।
তিন বছর আগে উদয়পুরে কংগ্রেসের চিন্তন শিবিরে আনুষ্ঠানিক ভাবে দল সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, প্রতিটি ভোটের পরিস্থিতি অনুযায়ী রণকৌশল ঠিক করতে একটি পৃথক দফতর তৈরি হবে। তিন বছর কেটে গেলেও সেই বিভাগ এখনও তৈরি হয়নি।
এবার মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, দিল্লির তিনটি বিধানসভা নির্বাচনে ধরাশায়ী হওয়ার পরে কংগ্রেস অবশেষে সেই নির্বাচন পরিচালনা দফতর বা ‘ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট অথরিটি’ তৈরি করতে চলেছে। খোদ প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরাই তার দায়িত্ব পেতে পারেন বলে কংগ্রেস সূত্রের খবর। এ বিষয়ে অবশ্য গান্ধী পরিবারই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। কংগ্রেসের সূত্রটির দাবি, প্রিয়ঙ্কা যদি এই দফতরের দায়িত্ব নিতে রাজি না হন, সেক্ষেত্রে এটি কংগ্রেসের সাংগঠনিক সাধারণ সম্পাদকের অধীনে রাখা হবে।
প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা দীর্ঘদিন সর্বভারতীয় কংগ্রেস কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে উত্তরপ্রদেশের দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু এখন কংগ্রেসের ১৩ জন সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে একমাত্র তাঁর হাতেই খাতায়-কলমে কোনও দায়িত্ব নেই। যদিও তিনি দলের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে জড়িত থাকেন। সূত্রের খবর, সংগঠনে প্রিয়ঙ্কার ভূমিকা ঠিক কী হবে, তা নিয়ে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের সঙ্গে তাঁর বৈঠক হয়েছে। কংগ্রেস নেতৃত্ব মনে করছে, লোকসভা ও বিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের রণকৌশল, তার প্রচারের মন্ত্র, বুথ স্তরের এজেন্ট নিয়োগ থেকে সামগ্রিক ভাবে ভোট পরিচালনার জন্য যে দফতর তৈরি হবে, তার মাথায় একজন শক্তপোক্ত নেতৃত্ব দরকার। প্রিয়ঙ্কা তার জন্য সবথেকে উপযুক্ত।
গান্ধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ এক নেতার বক্তব্য, ২০১৭ সালে উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরকে রণকৌশল তৈরির দায়িত্ব দিয়েছিল। রাহুল গান্ধী তখন কংগ্রেসের সহ-সভাপতি। কিন্তু দেখা যায়, কংগ্রেসের নেতারা প্রশান্ত কিশোরের মতো ‘বাইরের লোক’-এর নির্দেশ মেনে চলতে চাইছেন না। প্রিয়ঙ্কার তাই মত ছিল, বাইরে থেকে পেশাদার ভোটকুশলী না এনে কংগ্রেসের মধ্যেই একটি বিভাগ তৈরি হোক। প্রয়োজনে কংগ্রেসের জন্য একাধিক রাজ্যে ভোটের কৌশল তৈরি করে আসা সুনীল কানুগোলুর মতো পেশাদার ভোটকুশলীরা এই দফতরের সঙ্গে কাজ করবেন। উদয়পুরের চিন্তন শিবিরে প্রিয়ঙ্কার সেই মতেই সিলমোহর পড়েছিল। তিন বছর পরে, পরপর তিন রাজ্যের হার থেকে শিক্ষা নিয়ে এখন সেই সিদ্ধান্তের রূপায়ণ হতে চলেছে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)