মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
আর জি কর কাণ্ডের জেরে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র মধ্যে একদিকে যেমন চাপান-উতোর চলছে, তেমনই চলছে উভয়ের মধ্যে ভারসাম্য ধরে রাখার চেষ্টা। রাজ্য প্রশাসনের দিকে আঙুল তুলে লোকসভার বিরোধী দলনেতা তথা কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীর মন্তব্যের পরে তাঁকে নাম না করে খোঁচা দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে রাজ্যের পরিস্থিতির জন্য ‘রাম-বাম’কে আক্রমণ করলেও রাজ্য স্তরে কংগ্রেসকে কখনওই তার সঙ্গে যুক্ত করেননি তৃণমূল নেত্রী।
মমতা নিজে না করলেও আজ তাঁর দলের শীর্ষ সূত্রে বলা হচ্ছে, রাহুলের মন্তব্য কংগ্রেস এবং তৃণমূলের মধ্যে ‘গুরুতর ব্যবধান’ তৈরি করছে। এর ফলে জাতীয় স্তরে ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চে প্রভাব পড়তে পারে। অন্য দিকে কংগ্রেসের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, আর জি কর কাণ্ডের বিচার চেয়ে প্রতিবাদ করা হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম করে কোথাও আক্রমণ করা হচ্ছে না। বরং অপরাধের বিচার চাওয়া হচ্ছে। শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, উন্নাও, কাঠুয়া, হাথরসের ঘটনাগুলিকেও টেনে জাতীয় প্রেক্ষিত তৈরি করছে কংগ্রেস।
এই পরিস্থিতিতে আজ তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর জন্মদিনে তাঁর প্রতি মমতার শ্রদ্ধা ও সৌজন্যের সাক্ষী পুরনো সংসদ ভবনের সেন্ট্রাল হল। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিবসের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সাকেত গোখলে। সূত্রের খবর, প্রথম সারিতে বসেছিলেন সনিয়া গান্ধী, মল্লিকার্জুন খড়্গে, কে সি বেণুগোপালেরা। পিছনে বসেছিলেন সাকেত। সনিয়া তাঁকে অনুরোধ করেন, কংগ্রেস শীর্ষ সাংসদদের পাশে বসতে। তখন উঠে গিয়ে সনিয়া, খড়্গেদের পাশে বসেন তৃণমূল সাংসদ। তবে বিষয়টিকে জাতীয় রাজনীতির প্রশ্নে বৃহত্তর বার্তা হিসেবে দেখাতে চাইছেন না তৃণমূল নেতৃত্ব। তাঁদের বক্তব্য, এটি একেবারেই রাজীবের জন্মবার্ষিকীতে মমতার শ্রদ্ধা জানানো। তাঁদের অতীতের সম্পর্কের সঙ্গে বিষয়টি যুক্ত। তৃণমূলের এক নেতার বক্তব্য, “পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে এসপি, আরজেডি, আপ মমতা সরকারের পাশেই দাঁড়িয়েছে। ডিএমকে, শরদ পওয়ারপন্থী এনসিপি এবং উদ্ধবের শিবসেনাও আগাম মুখ খোলেনি, একমাত্র কংগ্রেসকেই দেখা গিয়েছে তৃণমূল সরকারকে আক্রমণ করতে।”
তৃণমূলের বক্তব্যে স্পষ্ট, সাম্প্রতিক অতীতে ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চের মধ্যে যে ভাবে ‘জিঞ্জার গোষ্ঠীর’ বিষয়ে তারা উদ্যোগী হয়েছিল, আর জি কর কাণ্ডেও সেই আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের গোষ্ঠীচেতনা যেন আবারও ফিরে আসছে। সদ্য সমাপ্ত সংসদের বাদল অধিবেশনে যে সর্বাত্মক সমন্বয় ‘ইন্ডিয়ার’ মধ্যে (বিশেষত তৃণমূল ও কংগ্রেসের মধ্যে) দেখা গিয়েছিল, তা আপাতত অন্তর্হিত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। যদিও রাহুলের মন্তব্যের পরে এই নিয়ে দু’বার মুখ খুলেছিলেন মমতা। কিন্তু বড় মাপের ক্ষোভ বর্ষণ করেননি রাহুল বা কংগ্রেসের প্রতি। প্রশ্ন তুলেছিলেন, “ধর্ষণ একটি সামাজিক ব্যধি। তা দূর করতে নিজের রাজ্যগুলিতে কী ব্যবস্থা নিয়েছিল কংগ্রেস?” কংগ্রেসের বক্তব্য, রাহুলও তাঁর এক্স হ্যান্ডলে করা পোস্টে মমতার নাম না-করে স্থানীয় প্রশাসনকেই দুষেছিলেন। ষয়টি এমন জায়গায় যায়নি যাতে ‘ইন্ডিয়া’র মধ্যে সংঘাত তৈরি হতে পারে। কংগ্রেস নেতাদের বক্তব্য, সংঘাত হলে লাভ বিজেপিরই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy