Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
Governor

‘কেন্দ্রের হাতের পুতুল!’ বাংলার পর রাজ্যপাল পদ নিয়ে সরব তামিলনাড়ু, কেরল ও তেলঙ্গানা

কেরল, তামিলনাড়ু ও তেলঙ্গানায় রাজ্যপাল পদ নিয়ে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে শাসকদলের অন্দরে। রাজ্যপাল পদটি কেন্দ্রের হাতের পুতুলে পর্যবসিত হয়েছে বলে মনে করছে সিপিএম, ডিএমকে এবং টিআরএস।

কেরলে রাজ্যপালের ‘অগণতান্ত্রিক’ আচরণের বিরোধিতা করে পথে সাংবাদিকদের সংগঠন।

কেরলে রাজ্যপালের ‘অগণতান্ত্রিক’ আচরণের বিরোধিতা করে পথে সাংবাদিকদের সংগঠন। ছবি: পিটিআই।

সংবাদ সংস্থা
কোচি শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২২ ১৮:২৫
Share: Save:

রাজ্যপাল পদ নিয়ে উত্তাপ ক্রমশ ঘনীভূত হচ্ছে দক্ষিণ ভারতে। কেরল দিয়ে শুরু হয়ে ক্ষোভ পৌঁছে গিয়েছে তামিলনাড়ু ও তেলঙ্গানাতেও। রাজ্যপাল কেন্দ্রের হাতের পুতুল— এই অভিযোগে সরব হয়েছেন তিন রাজ্যের নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রীরাই। তিন রাজ্যেই কেন্দ্রের পাঠানো রাজ্যপালের বিরুদ্ধে একাধিক প্রতিবাদ সমাবেশেরও আয়োজন চলছে। ঘটনাচক্রে, সাম্প্রতিক কালে ঠিক এই সুরেই রাজ্যপালের বিরোধিতা করতে দেখা গিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও।

মঙ্গলবার, তামিলনাড়ুর শাসকদল ডিএমকে সরাসরি আক্রমণ করেছে তেলঙ্গানার রাজ্যপাল তামিলিসাই সৌন্দররাজনের বিরুদ্ধে। গুরুতর অভিযোগ করে বলা হয়েছে, তেলঙ্গানার রাজ্যপাল অন্য রাজ্যের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ‘নাক গলাচ্ছেন’। প্রসঙ্গত, তামিলিসাই তামিলনাড়ুর একজন বিজেপি নেত্রী হিসেবে যাত্রা শুরু করেছিলেন। দীর্ঘ দিনের এই বিজেপি নেত্রীকেই তেলঙ্গানার রাজ্যপাল করে পাঠিয়েছে মোদী সরকার। শুধু তামিলনাড়ুই নয়, তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের সরকারের সঙ্গেও তামিলিসাই বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ নিয়ে বিবাদে জড়িয়েছেন। টিআরএসও লাগাতার আক্রমণ করছে রাজ্যপালকে।

মঙ্গলবার, ডিএমকের মুখপত্র মুরাসলিতে কড়া ভাষায় আক্রমণ করা হয়েছে প্রতিবেশী রাজ্য তেলঙ্গানার রাজ্যপালকে। লেখা হয়েছে, ‘‘তেলঙ্গানার রাজ্যপালের তামিলনাড়ু নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়। এটা তাঁর কাজ নয়। তিনি বরং রাজ্যপালের পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে তামিলনাড়ুতে ফিরে রাজনীতি করতে পারেন।’’ তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল আরএন রবির দিকেও তীক্ষ্ণ আক্রমণ শানিয়েছে ডিএমকের মুখপত্র। লেখা হয়েছে, ‘‘তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল সমস্ত সীমা অতিক্রম করে যে সমস্ত মন্তব্য করে চলেছেন তাতে সর্বস্তরে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।’’

এর আগে, সংবিধান বিরোধী কাজের অভিযোগে সমস্ত সমমনস্ক সাংসদদের আরএন রবিকে বরখাস্ত করতে প্রস্তাব পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছিল ডিএমকে। তেলঙ্গানাতেও বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ সংক্রান্ত একটি বিল সই না করে ফেলে রাখার অভিযোগে সরব হয়েছেন চন্দ্রশেখর রাও। একই অবস্থা কেরলেও। সেখানে বেশ কিছু দিন ধরেই সিপিএম সরকারের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েছেন কেরলের রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান। সম্প্রতি সেই ঘটনায় ঘি ঢালে রাজ্যপালের সাংবাদিক বৈঠক থেকে দুই মালয়ালি টিভি চ্যানেলের সাংবাদিককে বার করে দেওয়ার ঘটনা। রাজ্যপালের দাবি, ওই সাংবাদিক এবং দু’টি টিভি চ্যানেল মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের সমর্থক। এই ঘটনায় কেরলের সাংবাদিকরা রাজ্যপালের সাংবাদিক বৈঠক বয়কট করেন। রাজভবন পর্যন্ত প্রতিবাদ মিছিলেও পা মেলান সাংবাদিকরা।

প্রসঙ্গত, রাজ্যপাল পদের মাধ্যমে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যের সরকারগুলোর উপর চাপ তৈরি করতে চাইছে— সাম্প্রতিক কালে এই মন্তব্য প্রথম করেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। সেই সময় রাজ্যের রাজ্যপাল ছিলেন জগদীপ ধনখড়। যাঁর সঙ্গে রাজ্য সরকারের নিত্য বিবাদ লেগেই থাকত। রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের নেতারা প্রকাশ্যেই রাজ্যপালকে ‘পদ্মপাল’ নাম দিয়েছিলেন। তাঁদের অভিযোগ ছিল, রাজভবনকে বিজেপির দলীয় কার্যালয় বানিয়ে ফেলেছেন ধনখড়। বর্তমানে দেশের উপ রাষ্ট্রপতি পদে রয়েছেন ধনখড়। বাংলাতেও নতুন রাজ্যপাল কার্যভার সামলাচ্ছেন। আপাতত নবান্ন-রাজভবনে দ্বন্দ্বের খবর নেই। উল্টে তাতে সুপবন বইছে বললে অত্যুক্তি হয় না। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা রাজ্যপাল লা গণেশনের পারিবারিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে চেন্নাই গিয়েছিলেন। সেখানে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও দেখা হয় তাঁর। ঘটনাচক্রে, সেই স্ট্যালিনই এ বার নিজের রাজ্যের রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন। সঙ্গতে কেরল ও তেলঙ্গানা।

অন্য বিষয়গুলি:

Governor Kerala Tamilnadu Telangana
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE