Advertisement
০৪ অক্টোবর ২০২৪

রাহুলকে আড়াল করতে রাজীব-আবেগ কাজে লাগাতে চান সনিয়‌া

রাজীব-আবেগকে সামনে এনে রাহুল গাঁধীর ‘ব্যর্থতা’ ঢাকতে চাইছেন সনিয়া। অসম ও কেরল ফস্কে গিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ ও তামিলনাড়ুতেও জোট জেতেনি। তারপর থেকে শুধু বিরোধীরাই নয়, খোদ কংগ্রেসের মধ্যে থেকে রাহুল গাঁধীর নেতৃত্ব নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৬ ২১:০০
Share: Save:

রাজীব-আবেগকে সামনে এনে রাহুল গাঁধীর ‘ব্যর্থতা’ ঢাকতে চাইছেন সনিয়া।

অসম ও কেরল ফস্কে গিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ ও তামিলনাড়ুতেও জোট জেতেনি। তারপর থেকে শুধু বিরোধীরাই নয়, খোদ কংগ্রেসের মধ্যে থেকে রাহুল গাঁধীর নেতৃত্ব নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। দিগ্বিজয় সিংহের মতো নেতারা গোটা দলে ‘অস্ত্রোপচার’-এর দাওয়াই দিয়ে বসে রয়েছেন। আরও অনেক নেতা কাল থেকেই বেসুরো বাজতে শুরু করেছেন। রাহুল গাঁধীর উপরে ব্যর্থতার আঁচ যাতে আর আছড়ে না পড়ে, তার জন্য এ বারে রাজীব গাঁধীর আবেগকে সামনে আনতে চাইছেন সনিয়া গাঁধী।

আগামিকালই রাজীব গাঁধীর মৃত্যুবার্ষিকী। পঁচিশ বছর আগে এক আত্মঘাতী হামলায় প্রাণ হারান তিনি। সেই উপলক্ষে আগামিকাল ঠাসা কর্মসূচি হাতে নিয়ে নির্বাচনী বিপর্যয়ের গ্লানি কাটাতে চাইছেন সনিয়া গাঁধী। সকালে দিল্লির বীরভূমিতে প্রথামাফিক স্মরণ অনুষ্ঠান তো হবেই। তা ছাড়া দলের যুব সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে হাজির থাকবেন খোদ সনিয়া-রাহুল। হবে রক্তদান শিবির। শুধু তাই নয়, বেনজির ভাবে রাজীব গাঁধীর স্মারক বীরভূমিতে রাত পৌনে ১০টায় ফের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। ঠিক ওই সময়েই তামিলনাড়ুর শ্রীপেরমপুদুরে প্রাণ হারিয়েছেন রাজীব। দলের নেতা বলেন, আগামী দিনে আরও অনেক কর্মসূচিও হাতে নেওয়া হচ্ছে।

গতকালের হারের পর কংগ্রেসের মধ্যে থেকেই আওয়াজ উঠতে শুরু করেছে, লোকসভা বিপর্যয়ের পর যে সংগঠনের আমূল রদবদলের প্রয়োজন ছিল, তা এখনও হয়নি। দিগ্বিজয় সিংহ আজ দলে অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দিয়ে পরোক্ষে প্রিয়ঙ্কাকেও রাজনীতিতে নিয়ে আসার কথা বলেন। শশী তারুর কালই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে বদলের কথা বলেছিলেন। আজ প্রাক্তন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী নটবর সিংহও পরোক্ষে রাহুলের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। যদিও দলের পক্ষ থেকে পি সি চাকো আজ বলেন, ‘‘দিগ্বিজয় সিংহ প্রকাশ্যে না বলে দলের মধ্যে বলতে পারতেন। চিকিৎসকেরা প্রথমেই অস্ত্রোপচার করেন না। প্রথমে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়। শীঘ্রই পাঁচ রাজ্যের নির্বাচন নিয়ে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক বসবে। সেখানেই যাবতীয় বিষয় পর্যালোচনা করা হবে।’’

কিন্তু দলের বিক্ষুব্ধ নেতাদের মত, লোকসভার পর থেকে গত দু’বছর ধরে ঢের পর্যালোচনা করা হয়েছে। এখন সময় সংগঠনের আমূল বদল করা। কিন্তু কংগ্রেস নেতৃত্ব আজ স্পষ্ট করে দেন, হারের জন্য কোনও ভাবেই রাহুল গাঁধীর উপরে দায় বর্তায় না। তাঁকে সভাপতি করার সিদ্ধান্ত হয়েই রয়েছে। সনিয়া গাঁধীকে শুধু স্থির করতে হবে, সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত করার জন্য ‘উপযুক্ত’ সময় কোনটি। ফলে দলের মধ্যে থেকে রাহুলের নেতৃত্ব নিয়ে যা-ই প্রশ্ন উঠুক না কেন, তাঁকে বাদ দিয়ে অন্য কিছু ভাবার কোনও প্রশ্নই ওঠে না।

কংগ্রেসের মধ্যে থেকে উঠতে থাকা বিরোধের সুরকে আজ আরও উস্কে দিয়েছেন অরুণ জেটলি। এক ব্লগে তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘‘কংগ্রেস কী ভাবে অস্ত্রোপচার করবে? পরিবারতন্ত্রের দল ছেড়ে কংগ্রেস কি এক ঝাঁক নতুন নেতার দল হয়ে উঠতে পারবে? কংগ্রেস কি বুঝতে পারছে না, তারা ধীরে ধীরে প্রান্তিক হয়ে যাচ্ছে? ২০১৯ সালে বিজেপির মোকাবিলায় তারা কি মূল বিরোধী দল থাকতে পারবে?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Sonia Wants To Cash Rajeev Sentiment To Cover Rahul
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE