হায়দরাবাদে সনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী ও প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢড়ার সঙ্গে মল্লিকার্জুন খড়্গে। ছবি: পিটিআই।
রাজ্যে রাজ্যে ইন্ডিয়া জোটের শরিকদের সঙ্গে প্রদেশ নেতৃত্বকে সহযোগিতা করার বার্তা দিলেন সনিয়া গান্ধী। আজ হায়দরাবাদে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে সনিয়া বলেছেন, ইন্ডিয়া-র শরিক দলগুলির সঙ্গে কংগ্রেসকে সহযোগিতা করতে হবে। তা হলেই বিজেপিকে ক্ষমতা থেকে সরানো যাবে। রাহুল গান্ধীও একই ভাবে বিরোধী জোট ইন্ডিয়াকে মজবুত করার কথা বলেছেন।
কংগ্রেস সূত্রের খবর, সনিয়া-রাহুল আলাদা ভাবে পশ্চিমবঙ্গ, পঞ্জাব ও দিল্লির কথা উল্লেখ করেননি। তবে দলের পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে, সিংহভাগ রাজ্যেই ইন্ডিয়া-র শরিক দলগুলির সঙ্গে কংগ্রেসের আসন সমঝোতা হয়ে রয়েছে বা হতে সমস্যা হবে না। একমাত্র ব্যতিক্রম পশ্চিমবঙ্গ, দিল্লি ও পঞ্জাব। এই তিন রাজ্যের প্রদেশ নেতৃত্বের তরফে তৃণমূল ও আম আদমি পার্টির সঙ্গে জোট নিয়ে দ্বিধা রয়েছে। তাই সনিয়ার বার্তা এই তিনটি রাজ্যের জন্যই বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে কংগ্রেস নেতারা মনে করছেন। তাঁদের মতে, আজ এই রাজ্যগুলিতে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বকে নমনীয় হওয়ার বার্তা দেওয়া হল।
পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে তৃণমূল শিবিরও চাইছে, কংগ্রেস আসন সমঝোতার প্রশ্নে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিক। অক্টোবর মাসের মধ্যে আসন সমঝোতা চূড়ান্ত করে ফেলা হোক। আম আদমি পার্টি, সমাজবাদী পার্টিও দ্রুত আসন সমঝোতা চাইছে। সে দিকে ইতিবাচক বার্তা দিয়ে আজ কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটিতে গৃহীত প্রস্তাবে ইন্ডিয়া-কে মজবুত করার কথা বলা হয়েছে। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ইন্ডিয়া জোটের গঠন প্রধানমন্ত্রী ও বিজেপিকে নড়িয়ে দিয়েছে। কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি ইন্ডিয়া-র নির্বাচনী সাফল্যের প্রতিজ্ঞা করছে।
দু’দিন আগেই ইন্ডিয়া জোটের সমন্বয় কমিটির বিবৃতিতে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ইডি-র সমনকে প্রতিহিংসার রাজনীতি বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছিল। আজ কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে দলের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে মন্তব্য করেন, মুম্বইতে বিরোধীদের জোট ইন্ডিয়া-র বৈঠকের পরে ইডি, সিবিআই, আয়কর দফতরকে কেন্দ্রীয় সরকার বিরোধী নেতাদের উপরে বদলা নিতে মাঠে নামিয়েছে। সরাসরি অভিষেককে সমনের কথা না বললেও খড়্গের মন্তব্য, “এই সব পদক্ষেপ সুস্থ গণতন্ত্রের ভাবনার বিরুদ্ধে। কিন্তু আফশোস হল এটাই এখন বাস্তব।”
সোমবার থেকে সংসদের বিশেষ অধিবেশন শুরু হচ্ছে। আজ সেখানেও মোদী সরকারের অভিসন্ধি নিয়ে সতর্ক থাকা দরকার বলে জানিয়েছেন খড়্গে। তিনি বলেছেন, সোমবার থেকে পাঁচ দিনের বিশেষ সংসদ অধিবেশনের ডাক দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের পুরো ক্ষমতা নিজের হাতে তুলে নেওয়ার জন্য মোদী সরকার বিল নিয়ে আসছে। তার বিরোধিতা করা হবে। কিন্তু মোদী সরকারের অভিসন্ধি নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে। খড়্গে বলেন, “এই সরকার বিরোধীহীন সরকার চায়। ওরা চায় না সরকারকে কোনও সাংসদ, সংবাদমাধ্যম বা আমজনতা প্রশ্ন করে।”
মোদী সরকার এখনও পর্যন্ত বিশেষ অধিবেশনের যে কার্যসূচি জানিয়েছে, তাতে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ ছাড়া আর কোনও গুরুত্বপূর্ণ বিল নেই। তবে ২০২৪-এর লোকসভা ভোটকে মাথায় রেখে মহিলা সংরক্ষণ বিল নিয়ে আসা হতে পারে বলে কংগ্রেস মনে করছে। তা আঁচ করে কংগ্রেস আজ আগেভাগেই ওয়ার্কিং কমিটির প্রস্তাবে মহিলা সংরক্ষণ বিল নিয়ে আসার দাবি তুলেছে।
বিশেষ অধিবেশনে না হলেও মোদী সরকার আগামী দিনে ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ বা অন্য কোনও ধুয়ো তুলে সংবিধান সংশোধনের পথে হাঁটতে পারে বলেও কংগ্রেসের আশঙ্কা রয়েছে। বিজেপি, আরএসএস ও সরকারের অন্দরমহল থেকে ইতিমধ্যেই অনেকে নতুন সংবিধান, সংবিধানের মূল কাঠামোর পরিবর্তনের সুযোগ নিয়ে মন্তব্য করেছেন। আজ কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির প্রস্তাবে এর বিরোধিতা করে প্রস্তাব আনা হয়েছে।
শনিবার হায়দরাবাদে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের পরে রবিবার বর্ধিত ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক বসবে। শনিবারই একাধিক কংগ্রেস নেতা দাবি তুলেছেন, রাহুল গান্ধী দ্বিতীয় ভারত জোড়ো যাত্রা শুরু করুন। কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম জানান, দক্ষিণ থেকে উত্তরে ভারত জোড়া যাত্রার সাফল্যের পরে পূর্ব-পশ্চিম ভারত জোড়ো যাত্রার অনুরোধ করেছেন অনেকে। এই বিষয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে। প্রসঙ্গত সাংসদ পদ ফিরে পাওয়ার পরে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবেও প্রত্যাবর্তন ঘটেছে রাহুলের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy