Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Rahul Gandhi

ঢাল ভোটের হার, মুখ বাঁচানোর চেষ্টা কংগ্রেসের

তিন রাজ্যে দলের হার নিয়ে আজ সংসদে প্রশ্ন করা হলে সনিয়া জবাব দেননি। সন্ধ্যায় সংসদীয় দলনেত্রী হিসেবে তিনি দলের সংসদীয় ‘স্ট্র্যাটেজি গ্রুপ’-এর বৈঠক করেন।

Rahul Gandhi.

রাহুল গান্ধী। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৫:৩৮
Share: Save:

হিন্দি বলয়ের তিন রাজ্যে পরাজয়ের পরে এখন কংগ্রেস ভোটের হারের পিছনে মুখ লুকোতে চাইছে। সনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধীর দলের দাবি, হারলেও কংগ্রেসের ভোটের হার বিশেষ কমেনি। কিন্তু দলের অন্দরেই প্রশ্ন, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান ও ছত্তীসগঢ়ে হারের পরেও কেন কমল নাথ, ভূপেশ বঘেল, অশোক গহলৌতেরা তার দায় নিতে চাইছেন না? রাহুল-ঘনিষ্ঠ এক নেতার বক্তব্য, “গত লোকসভা নির্বাচনে রাহুল গান্ধী পরাজয়ের দায় নিয়ে কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন।’’ দলীয় সূত্রের খবর, কমল নাথ আগামী কাল দিল্লি এসে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের সঙ্গে দেখা করে মধ্যপ্রদেশের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিতে পারেন।

তিন রাজ্যে দলের হার নিয়ে আজ সংসদে প্রশ্ন করা হলে সনিয়া জবাব দেননি। সন্ধ্যায় সংসদীয় দলনেত্রী হিসেবে তিনি দলের সংসদীয় ‘স্ট্র্যাটেজি গ্রুপ’-এর বৈঠক করেন। সেখানে ভোটে পরাজয়ের প্রসঙ্গ ওঠে। কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশ বলেন, প্রতিটি রাজ্যের এআইসিসি-র ভারপ্রাপ্ত নেতাদের ডেকে বিস্তারিত আলোচনা হবে।

কংগ্রেসের ডেটা অ্যানালিটিক্স বিভাগের চেয়ারম্যান, রাহুল গান্ধীর আস্থাভাজন বলে পরিচিত প্রবীণ চক্রবর্তী আজ যুক্তি দিয়েছেন, পাঁচ বছর আগে মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তীসগঢ়ে কংগ্রেস যে সংখ্যক ভোট পেয়েছিল, ২০২৩-এও দল প্রায় একই ভোট পেয়েছে। রাজস্থানে কংগ্রেস পাঁচ বছর আগের তুলনায় বেশি ভোট পেয়েছে। ২০১৮-র বিধানসভা নির্বাচনে মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়, রাজস্থানে কংগ্রেস জিতেছিল। কংগ্রেস নেতাদের যুক্তি, ছত্তীসগঢ়ে কংগ্রেস ২০১৮-র ভোটে ৪৩ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। এ বার তা সামান্য কমে ৪২.২ শতাংশ হয়েছে। রাজস্থানে নির্বাচনে কংগ্রেসের ভোটের হার ৩৯.৩ শতাংশ থেকে সামান্য কমে ৩৯.৫ শতাংশ হয়েছে। মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেসের ভোটের হার হয়েছে ৪০.৯ শতাংশ থেকে কমে ৪০.৪ শতাংশ। জয়রামের যুক্তি, তেলঙ্গানায় কংগ্রেসের জয় সত্ত্বেও বাকি তিন রাজ্যে দলের ফল প্রত্যাশা মাফিক হয়নি। কিন্তু কংগ্রেস ও বিজেপির ভোটের হারে ব্যবধান খুব বেশি নয়।

পাল্টা যুক্তিও শোনা যাচ্ছে কংগ্রেসের অন্দরেই। দলের নেতাদের একাংশের বক্তব্য, বিধানসভা নির্বাচনে ১ শতাংশ ভোটের ব্যবধানেই আসনের বিস্তর হেরফের হয়। সেখানে মধ্যপ্রদেশে বিজেপি পেয়েছে ৪৮.৬ শতাংশ, কংগ্রেস পেয়েছে ৪০.৪ শতাংশ। ছত্তীসগঢ়ে প্রায় ৪ শতাংশ, রাজস্থানে প্রায় ২ শতাংশের ফারাক। ছত্তীসগঢ়ে কংগ্রেসের আসন ৬৮ থেকে কমে ৩৫ হয়েছে, রাজস্থানে ১০০ থেকে কমে দাঁড়িয়ে ৬৯। মধ্যপ্রদেশে ‘হাত’-এর বিধায়ক সংখ্যা ১১৪ থেকে কমে হয়েছে ৬৬। কংগ্রেসের সোশ্যাল মিডিয়া বিভাগের প্রধান সুপ্রিয়া শ্রীনতে আবার যুক্তি দিয়েছেন, চার রাজ্য মিলিয়ে কংগ্রেস বিজেপির থেকে ১০ লক্ষ বেশি ভোট পেয়েছে। দলের ওই অংশের নেতাদের যুক্তি, তেলঙ্গানাকে এই হিসেবের মধ্যে আনা চলে না। কারণ, সেখানে বিজেপির তেমন উপস্থিতি নেই। হিন্দি বলয়ের তিন রাজ্যে হিসেব করলে দেখা যাচ্ছে, কংগ্রেসের থেকে বিজেপি ৫০ লক্ষ বেশি ভোট পেয়েছে।

তেলঙ্গানায় কংগ্রেসের জয় নিয়ে তামিলনাড়ুর সাংসদ কার্তি চিদম্বরম আজ ‘দ্য সাউথ’ বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন। কংগ্রেস নেতাদের একাংশের বক্তব্য, দেশের সব চেয়ে বড় প্রাচীন দল উত্তর-দক্ষিণ বিভাজন করতে পারে না। কংগ্রেসের এক প্রবীণ নেতার কথায়, ‘‘এখনও কংগ্রেসের তুলনায় দাক্ষিণাত্য থেকে বিজেপির লোকসভার সাংসদ সংখ্যা বেশি। পুদুচেরিতে এখনও বিজেপির জোট সরকার।’’ কংগ্রেসের নেতৃত্বে উত্তর ভারতের নেতারা সে ভাবে গুরুত্ব পাচ্ছেন না বলেও দলের অন্দরে অভিযোগ উঠেছে। দলের নেতাদের বক্তব্য, কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে, সাংগঠনিক সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল দু’জনেই দক্ষিণ ভারতের নেতা। খড়্গে রাজ্যসভার দলনেতা। কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা, উপ-দলনেতাও পশ্চিমবঙ্গ, অসমের।

অন্য বিষয়গুলি:

Rahul Gandhi Congress sonia gandhi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy