রঘুরাম রাজন। ফাইল চিত্র।
আয়কর রিটার্নের ওয়েবসাইটে কিছু সমস্যা মেটাতে না-পারায় ইনফোসিসের কড়া সমালোচনা করেছে সঙ্ঘের সাপ্তাহিক পত্রিকা। সাম্প্রতিক কালে যে ক’টি বেসরকারি সংস্থা সরকারি কর্তাদের ও সরকার-ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের রোষে পড়েছে ইনফোসিস তার অন্যতম। তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাটির এমন সমালোচনাকে ‘নিষ্ফলা’ আখ্যা দিয়ে রঘুরাম রাজন পাল্টা নিশানা করেছেন নরেন্দ্র মোদীর সরকারকে। এক সাক্ষাৎকারে তাঁর প্রশ্ন, “প্রথম-পর্বে কোভিড মোকাবিলায় ব্যর্থ হওয়ার জন্য সরকারকেও কি দেশদ্রোহী আখ্যা দেওয়া যাবে? আপনারা বলবেন এটা ভুল। আর মানুষ মাত্রই ভুল করে।”
কোভিড সংক্রান্ত ব্যর্থতার প্রসঙ্গটি কার্যত রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রাজনের মূল বক্তব্যের একটি ধরতাই মাত্র। রাজন সরকারের বিভিন্ন কাজকর্ম ও তার আর্থিক প্রভাব নিয়ে অনেকগুলি প্রশ্ন ও অভিযোগ তুলেছেন দীর্ঘ এক সাক্ষাৎকারে। তাঁর মতে, এই সরকার যে ভাবে জিএসটি চালু করেছে, তা অনেক ভাল ভাবে এটা করা যেত। তবে ভুল থেকেই মানুষ শিক্ষা নেয়। কিন্তু কেউ ভুল করলেই নিজস্ব ধ্যানধারণার মুগুর দিয়ে তাকে আঘাত করতে হবে, এমন কোনও কথা নেই।
রাজন বর্তমানে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের বুথ স্কুল অব বিজ়নেসের শিক্ষক। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের শীর্ষ পদ থেকে সরতে বাধ্য হওয়ার পরে বার বার তিনি মোদী সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন। তাঁর মতে, সেস ও কর বাবদ কেন্দ্রের আয় বাড়লেও রাজ্যগুলিকে যথাযথ ভাগ দেওয়া হচ্ছে না। ফলে রাজ্যগুলির আর্থিক অবস্থা খারাপ হচ্ছে। গোটা দেশকে যেন কেন্দ্র থেকে, এমনকি ‘কেন্দ্রের ভিতরের একটি কেন্দ্র’ থেকে চালানোর চেষ্টা হচ্ছে। এই অতিকেন্দ্রিকতা দেশকে পিছনে টানছে।
বলা হচ্ছে, দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। কারখানা উৎপাদন গত কোয়ার্টারে (চার মাসে) ২০.১% বেড়েছে। এই ক্ষেত্রে রাজনের সতর্কবার্তা, প্রাথমিক সংখ্যাটাই যদি নগণ্য হয়, তবে তার ভিত্তিতে শতাংশের বৃদ্ধি অনেকটা বেশি দেখাতে পারে, এতে বেশি গুরুত্ব দেওয়ার কিছু নেই। মূল বিষয় হল, দেশের গোটা অর্থনীতি কি এতে চাঙ্গা হচ্ছে? নাকি তার একটি বিশেষ অংশ? এই ক্ষেত্রে রাজনের পর্যবেক্ষণ: ছোট, এমনকি তালিকাভুক্ত অনেক সংস্থার তুলনায় বড় তথা বেশি সংগঠিত ক্ষেত্রের সংস্থাগুলির মুনাফা বাড়ছে বেশি। চরম সঙ্কটে না পড়লে মানুষ সোনা বেচেন না। কিন্তু আর্থিক বৃদ্ধিতে ধারাবাহিকতার অভাবে স্বর্ণ-ঋণ বাড়ছে। শহরে ঠিকঠাক বাঁচার সুযোগ না পেয়ে মানুষ গ্রামে ফেরার চেষ্টা করছে। সেখানেও সমস্যা অনেক। তাই গ্রামবাসীদের জন্য যেমন মনরেগার মতো প্রকল্প রয়েছে, শহরবাসীদের জন্যও নগদ হস্তান্তরের তেমন কোনও প্রকল্প চালু করা প্রয়োজন বলে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ। কিন্তু সরকার সামাজিক খাতে ব্যয় করতে চাইছে না। রাজনের মতে, সম্ভবত ‘ক্রেডিট রেটিং’ ধরে রাখতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy